Md Salim

রাজ্যের ভাগ চাইছে বিজেপি, তৃণমূল নীরব কেন: সেলিম

রাজ্য

পশ্চিমবঙ্গকে টুকরো টুকরো করে স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চাইছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদম মহম্মদ সেলিম এই উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, রাজ্যগুলিকে ছোট ছোট টুকরোয় ভেঙে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে দুর্বল করে এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র করতে চায় বিজেপি। এটা আরএসএস-বিজেপি’র দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক পরিকল্পনার মূল বিষয়। তৃণমূলও একাজে বিজেপি’র দোসর। 
বুধ ও বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সংসদের দুই কক্ষে বিজেপি নেতারা বাংলাকে টুকরো করার পক্ষে বারবার সওয়াল করেছেন। বৃহস্পতিবার সংসদে দাঁড়িয়ে ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে বলেছেন, ‘ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি জেলাকে নিয়ে নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করার প্রয়োজন রয়েছে। এই জেলাগুলিকে ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা দেশে ঢুকছে। এই জেলাগুলিতে অসমের মডেলে এনআরসি যত দ্রুত সম্ভব কার্যকর করা উচিত।’ সাম্প্রদায়িক যুক্তিকে প্রকাশ্যেই উল্লেখ করে বাংলার দু’টি জেলাকে আলাদা করে রাজ্যভাগের কথা বলেছেন নিশিকান্ত দুবে। আর রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ কোচবিহারের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের নেতা অনন্ত মহারাজ বলেছেন, ‘ গ্রেটার কোচবিহার আলাদা রাজ্য করা হোক’। এর আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার নিজেই জানিয়েছেন যে, তিনি উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের জেলাগুলিকে মিলিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। 
এই পরিপ্রেক্ষিতেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সেলিম বলেছেন, এরা বিজেপি’র সাংসদ ও মন্ত্রী। বোঝা যাচ্ছে বিজেপি কী চাইছে? রাজ্যকে টুকরো টুকরো করে স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চাইছে। আরএসএস-বিজেপি’এর রাজনীতির কেন্দ্রে রয়েছে এই ভাবনা। ভারতের ভাষাভিত্তিক রাজ্যগুলিকে ভেঙে পঞ্চাশটা ছোট ছোট রাজ্যে পরিণত করে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে এককেন্দ্রীক রাষ্ট্র করতে চাইছে। এরজন্যই জঙ্গলমহলে, উত্তরবঙ্গে, বিহার এবং ঝাড়খণ্ডেও নানা জনগোষ্ঠীকে নানা সময়ে উসকে দেয় ওরা। 
সেলিমের পালটা প্রশ্ন, উন্নয়নের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। রাজ্য ভাগ করে কি সমস্যার সমাধান হয়? মণিপুর তো আলাদা রাজ্য, সেখানে দাঙ্গা হাঙ্গামা থেমেছে? উন্নয়নের জন্য সুপ্রশাসন দরকার, রাজ্যের মানুষের চাহিদা ও আকাঙ্খা পূরণ করতে হয়। বিজেপি তার বদলে শর্টকাটে উদ্দেশ্য হাসিল করতে চাইছে। নিশিকান্ত দুবে যা বলেছেন তা নিয়ে এরাজ্যের বিজেপি রাজ্য সভাপতির মত কী, সেটা প্রকাশ্যে বলুন। 
কিন্তু বিজেপি’র এই বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজনীতিতে তৃণমূল যে দোসর সেকথাও বলেছেন মহম্মদ সেলিম। অনন্ত মহারাজ বিজেপি সাংসদ হলেও তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা করেই এবারের লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার কেন্দ্রে বিজেপি’র মন্ত্রীকে হারিয়ে তৃণমূলকে জিতিয়েছেন বলে বিজেপি’র অন্দরেই অভিযোগ উঠেছে। আর মমতা ব্যানার্জি নিজেই উত্তরবঙ্গে গিয়ে অনন্ত মহারাজের সঙ্গে বৈঠক করে এসেছেন। এর উল্লেখ করে সেলিম বলেছেন, উত্তর থেকে দক্ষিণ, অনন্ত মহারাজ থেকে ছত্রধর মাহাতোর মতো যত বিচ্ছিন্নতাবাদী আছে, কার সঙ্গে মমতা ব্যানার্জি মিটিং করেননি? যারাই মানুষকে ভাগ করার চেষ্টা করছে, তারা সবাই তৃণমূলের দোসর।
 

Comments :0

Login to leave a comment