MD SALIM

লাল ঝাণ্ডা হাতে মানুষ নেমে পড়েছেন প্রতিরোধে: সেলিম

রাজ্য

CPIM BJP RSS TMC WEST BENGAL POLITICS BENGALI NEWS

মানুষের মেজাজ চড়ছে। গণতান্ত্রিক অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হলে মানুষ পালটা প্রতিরোধ করেই তা রক্ষা করবেন। বুধবার সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শাসক দলের উদ্দেশে। 

এদিন সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুর থেকে সিপিআই(এম)’র ডাকে দুর্নীতি-বিরোধী একটি মিছিলে অংশ নেন তিনি। রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নে তৃণমূল যেভাবে সন্ত্রাস চালিয়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে, সেই বিষয়ে সেলিম বলেছেন, মানুষের মেজাজ দেখে শাসক দল বুঝে নিক, ২০১৮ সাল আর ২০২৩ সাল এক নয়। গণতান্ত্রিক অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হলে মানুষ আর সহ্য করবেন না, পালটা প্রতিরোধ হবেই। লাল ঝাণ্ডা হাতে মানুষ প্রতিরোধে নেমে পড়েছেন। 


সিপিআই(এম)’র কলকাতা জেলা কমিটির ডাকে বুধবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুর ৪সি বাসস্ট্যান্ড থেকে ঠাকুরপুকুরের ৩এ বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিরাট মিছিল হয়েছে। লাল পতাকা হাতে হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে ‘চোর তাড়াও’ স্লোগানে বিশাল এই মিছিল গোটা রাস্তাকে উত্তাল করে দিয়েছে। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বেহালার তৃণমূল বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পদত্যাগ, তদন্তের নামে টালবাহানা বন্ধ করে দুর্নীতির মূল মাথাদের গ্রেপ্তারির দাবির সঙ্গে সঙ্গে মিছিল থেকে আওয়াজ উঠেছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন ঘিরে তৃণমূলের সন্ত্রাস বন্ধ করতে পুলিশী সক্রিয়তা দেখাতে হবে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষতার সঙ্গে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। 

হরিদেবপুর থেকে এমজি রোড ধরে কবরডাঙা হয়ে মিছিল ঠাকুরপুকুরের দিকে এগিয়েছে, আর সারা রাস্তার দু’ধারে বহু মানুষ মিছিলের স্লোগানের সমর্থনে সাড়া দিয়েছেন। রাস্তার ধারে জড়ো হয়ে বহু মানুষকে মিছিলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এমনকী কয়েকটি জায়গায় রাস্তার ধার থেকে মানুষ ফুলও ছুঁড়েছেন মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে। মিছিলে মহম্মদ সেলিম, পার্টির কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কল্লোল মজুমদার, রাজ্য কমিটির সদস্য সুদীপ সেনগুপ্ত, শতরূপ ঘোষ সহ পার্টি নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। মিছিল শেষে ঠাকুরপুকুরে সংক্ষিপ্ত সভায় ভাষণ দেন মহম্মদ সেলিম ও কল্লোল মজুমদার।


সেলিম সভায় বলেন, রাজ্যে এক দশকের বেশি সময় ধরে সন্ত্রাস চালিয়েছে তৃণমূল। মিথ্যা মামলা, ঘরছাড়া, সব কিছুর মধ্য দিয়ে মানুষকে সন্ত্রস্ত করে রেখেছিল নির্বিঘ্নে লুটপাট চালানোর জন্য। সরকারের মনোভাব হলো, মিছিল-মিটিং করা যাবে না, পোস্টার লাগানো যাবে না, মুখ বন্ধ রাখতে হবে। মানুষের মুখ বন্ধ রাখতে সপ্তাহে একদিন করে সিপিআই(এম)’কে পেটাতে বলেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এখন আর তৃণমূলের সেই অবস্থা নেই। তারা চাইলেও মানুষের অধিকার লুট করতে পারবে না। সারা পৃথিবীর অভিজ্ঞতা, এভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ও সংবিধান বহির্ভূত ক্ষমতার কেন্দ্র তৈরি করে লুটপাট বেশিদিন চলে না। 


সেলিম বলেছেন, পঞ্চায়েতের মাধ্যমে মানুষকে গণতান্ত্রিক অধিকার দিয়েছিল বামফ্রন্ট সরকার। পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে, দুষ্কৃতীদের জড়ো করে সেই অধিকার মানুষের কাছ থেকে লুট করেছে তৃণমূল। কিন্তু এখন আর আগের পরিস্থিতি নেই। গ্রাম বাংলা জাগছেন। মানুষ ‘চোর তাড়াও লুটেরা তাড়াও’ বলে পথে নেমেছেন। তৃণমূল যদি এখনও ভাবে যে, হামলা চালিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে, তাহলে মানুষ মুখ বুজে মেনে নেবেন না। চুরি আর দুর্নীতি চালিয়ে যাওয়ার জন্যই ওদের দুষ্কৃতীরাজ। কিন্তু মানুষ কোনও ভয়-ভীতিতেই এখন আর মাথা নিচু করতে রাজি নন। লাল ঝাণ্ডা হাতে মানুষ প্রতিরোধে নেমে পড়েছেন।

 

Comments :0

Login to leave a comment