শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্যই যেত মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কাছে, সোমবার আদালতে জানালেন প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত এই তৃণমূল নেতা বলেছেন, নিয়োগ-সংক্রান্ত রিপোর্ট যেত মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। নিয়োগে মন্ত্রী হিসেবে আমার কোনও ভূমিকা ছিল না, বলে আদালতে জানান পার্থ।
এদিন আদালতে জামিনের আবেদনও করেন তিনি। সেই সময় আদালতকে জানান রাজ্য সরকারের পাঁচটি দপ্তরের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তাঁর দপ্তর বারবার পরিবর্তন করা হত। এছাড়াও তাঁর দাবি, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় তিনি দেখতেন না। নীতি তৈরি করতেন একজন, আরেকটি অংশ নিয়োগের বিষয়টি দেখত। ক্যাবিনেট সচিব রিপোর্ট করেন প্রিন্সিপাল সচিবকে। প্রিন্সিপাল সচিব আবার রিপোর্ট করেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। সুতরাং পুরোটাই জানতে পারতেন মুখ্যমন্ত্রী।
পার্থ বলেছেন, এসএসসি আলাদা একটি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা দপ্তর এসএসসি’কে নিয়ন্ত্রণ করত না। এছাড়াও জামিনের আবেদনে তিনি বলেন, ১ বছরের বেশি সময় ধরে সিবিআই কিছু পেশ করতে পারেনি তাঁর বিরুদ্ধে। সুতরাং তাঁকে জামিন দেওয়া হোক।
প্রসঙ্গত এদিনই টাকা দিয়ে চাকরি কেনার ঘটনায় ৪ শিক্ষককে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিল আদালত। ৪ শিক্ষককে ১৪ দিনের জেলে হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি অর্পণ চট্টোপাধ্যায়। জাহিরউদ্দিন শেখ, সায়গল হোসেন, সিমার হোসেন ও সৌগত মণ্ডল নামে গ্রেপ্তার হওয়া ওই ৪ শিক্ষকই মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের বাসিন্দা। ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটে উত্তীর্ণ না হয়ে টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন তাঁরা। তা প্রমাণিত হতেই জেল হেপাজত দেন বিচারপতি। নিয়োগ দুর্নীতিতে এই প্রথম গ্রেপ্তার হলেন ভুয়ো শিক্ষকরা। এদিন আবার জামিন পেলেন মানি ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরুপা ভট্টাচার্য।
এদিকে নিয়োগের দাবি আরো জোরাল হচ্ছে। রোদ, ঝড়, বৃষ্টি, ঠান্ডা সমস্ত কিছুই উপেক্ষা করে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন চাকরি প্রার্থীরা। এদিন ধর্মতলায় বৃষ্টি ভেজা রাস্তাতেই দন্ডি কাটলেন চাকরিপ্রার্থীরা। নিয়োগের দাবিতে এদিন আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীরা মিছিল করেন। ৯ বছর ধরে নিয়োগ না হওয়ার অভিযোগে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত চলে মিছিল, বিক্ষোভ।
Comments :0