বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছাড়া গোটা দেশে লোকসভার দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণ শেষ হলো শান্তিপূর্ণভাবে। তীব্র দাবদাহের জেরে গোটা দেশেই ভোটদানের হার ছিল কম। অসহনীয় গরমের কারণে বিহার, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশে, রাজস্থানে ভোটারদের মধ্যে তেমন উৎসাহ দেখা যায়নি। এই রাজ্যগুলিতে ভোট কম পড়ায় চিন্তিত বিজেপি শিবির। শেষ লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যগুলিতেই বিজেপি সর্বোচ্চ আসনে জয়ী হয়েছিল। এদিন পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা সহ বেশ কিছু রাজ্যে বহু বুথে ভোটযন্ত্র ঠিকমত কাজ না করায় ভোট গ্রহণের কাজ ব্যাহত হয়েছে। উত্তর প্রদেশের মথুরা, রাজস্থানের বাঁশওয়াড়া এবং মহারাষ্ট্রের পারভানির কিছু গ্রামের ভোটাররা স্থানীয় ইস্যুতে ভোট বয়কট করেছিলেন। এই গ্রামগুলি বুথ এদিন ফাঁকাই পড়েছিল। কোনও গ্রামবাসী এদিন ভোট দিতে বুথমুখো হননি।
এই দফায় ১৩টি রাজ্যের ৮৮টি লোকসভা কেন্দ্রে গড়ে ভোটের হার ছিল ৬৩ শতাংশের ওপর। এদিন কেরালার ২০টি আসনে ভোট নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এদিন রাত ৮টা পর্যন্ত এই রাজ্যে ৭০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। বহু বুথে বেশ রাত পর্যন্ত ভোটারদের লাইন দেখা গেছে।
এদিন সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে ত্রিপুরার পূর্ব আসনে। এখানে ভোট পড়েছে ৭৯ শতাংশের ওপর। রাত ৮টার পরও বুথে বুথে লাইন থাকায় ভোট দানের হার আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে উত্তর প্রদেশে। এই রাজ্যের ৮টি আসনে ভোট পড়েছে ৫৩ শতাংশ হারে। আলিগড় এবং মথুরা কেন্দ্রে ভোট দানের হার ছিল ৪৭.৪৫ শতাংশ।
পাশপাশি এদিন কর্নাটকের ১৪টি আসনে ভোট দানের হার ছিল প্রায় ৬৪ শতাংশ, রাজস্থানের ১৩টি আসনে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশের সামান্য বেশি হারে। তবে, অপ্রীতিকর ঘটনার সাক্ষী থাকল ছত্তিশগড়ের মহাসমুন্দ আসনে। এই আসনের অধীন গাড়িয়াবন্দ জেলার একটি ভোটের দায়িত্ব পালন করার ফাঁকে মধ্য প্রদেশের বিশেষ সশস্ত্র বাহিনীর একজন জওয়ান নিজের সার্ভিস রাফেল থেকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন। তবে, এই রাজ্যের ৩ আসনের ভোট শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। ভোট দানের হার ছিল ৭২ শতাংশের বেশি।
এদিকে, মহারাষ্ট্রের ৮টি আসনে এদিন ভোট পড়েছে ৫৫ শতাংশ। মধ্য প্রদেশের ৬টি আসনে ৫৫শতাংশ, আসামে ৫টি আসনে প্রায় ৭১ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহ দেখা যায়নি বিহারেও। এই রাজ্যে ৫টি আসনে, ভোট পড়েছে ৫৯ শতাংশের কাছাকাছি। গতবারের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ কম পড়েছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে। সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে ভাগলপুরে। এই আসনে ভোটের হার ছিল ৫১ শতাংশ।
পশ্চিমবঙ্গে ৩টি আসনে অন্তত ৭২ শতাংশ ভোট পড়েছে। জম্মু লোকসভা আসনে এদিন নির্বিঘ্নেই ভোট হয়েছে ভোট পড়েছে ৬৭ শতাংশের বেশি। মণিপুরেও একটি আসনে শান্তিতে ভোট হয়েছে। এখানে ভোট পড়েছে ৭৭ শতাংশের ওপর।
দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে ১২০২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারে উল্লেখযোগ্য প্রার্থীদের মধ্যে আছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, শশী থারুর, ডিকে শিবকুমার ছাড়াও চলচ্চিত্র তারকা হেমামালিনী, অভিনেতা অরুন গোভিল। এছাড়াও কেরালার প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেকে শৈলজা, এই রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী থমাস আইজ্যাক, কর্নাটকের উপ মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী প্রমুখ।
Lok Sabha Elections 2024
দ্বিতীয় দফাতে ভোটদানের হার বেশ কমে ৬৩ শতাংশ
×
Comments :0