স্বর্গপুর ঝর্ণা
তপন কুমার বৈরাগ্য
ছন্দের যাদুকর সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত তার ঝর্ণা কবিতায় লিখেছেন
ঝর্ণা! ঝর্ণা! সুন্দরী ঝর্ণা
তরলিত চন্দ্রিকা চন্দন বর্ণা।
একটা ঝর্ণার রূপ বর্ণনা করতে গিয়ে সত্যেন্দ্রনাথ এই কবিতাটি
লিখেছেন। কিন্তু কোনো জায়গায় যদি সাতটি ঝর্ণা দেখা
যায়তবে এই মাটিতেই আমরা স্বর্গপুরী পেয়ে যাবো।
বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলার অন্তর্গত বিলাইছড়ি। এখানে আছে
বিলাইছড়ি ও দীঘলছড়ি নামক দুটি পাহাড়। এই পাহাড় দুটির
গা বেয়ে নেমে এসেছে সাতটি ঝর্ণা। এই সাতটি ঝর্ণার
নাম-বসবত্তী স্বর্গ,
মহারাজিক স্বর্গ, তারতিংস স্বর্গ,তুষিত স্বর্গ,যাম স্বর্গ, নির্মাণ রতি স্বর্গ, অরূপ
ব্রক্ষা স্বর্গ। দুটি পাহাড়ের গা বেয়ে এই সাতটি জলের ধারা নেমে এসে
সত্যিই যেন এক স্বর্গপুরী গড়ে তুলেছে। ঝর্ণা পাষাণের স্নেহধারা।
যাদের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য কখনো ভুলবার নয় ।এই ঝর্ণা গুলোর জল
কখনো শুকায় না। সারাবছর ঝিরি ঝিরি ধারায় ঝর্ণার জল প্রবাহমান।
এই সাতটি ঝর্ণা এসে মিশেছে কাপ্তাই লেকে। এই কাপ্তাই লেকে
সারা বছরই নীল জল থাকে।
মেঘমল্লার রাগে এই ঝর্ণাগুলির সুরলহরী
সবার হৃদয়ে জাগায় উন্মাদনা। এখানে কুড়িটির বেশি সুইমিং পুল
আছে। এই ঝর্ণা গুলোয় নানারকম মাছ ভেসে বেড়ায়। এই মাছ গুলো এখানকার উপজাতিরা ধরে না বা খায় না। এরা এদের
পবিত্রতার প্রতীক বলে মনে করে। লোকজনে এই মাছ হত্যা করে না বলে এই মাছগুলো মানুষ দেখলেই তাদের কাছে ছুটে আসে খাবারের সন্ধানে। চারিদিকে সবুজে ঢাকা। জানা অজানা পাখির গান মানুষকে মনে করিয়ে দেয় মাটির
বুকে এ যেন দ্বিতীয় স্বর্গ।
Comments :0