স্বাধীনতার আগে তৈরি হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে গেল শিক্ষক ও পড়ুয়া অভাবে। রাজ্যের বেহাল শিক্ষা ব্যবস্থার একটি উদাহরণ এটি। স্কুলটিতে শিক্ষক মাত্র একজন। অভিভাবকদের অভিযোগ দিনের পর দিন স্কুল বন্ধ থাকে ফলে পঠনপাঠন হয়না। স্থানীয়রা স্কুল পুনরায় খোলার জন্য বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে আবেদন করেছেন। এই বিদ্যালয়ের একজন মাত্র শিক্ষক। তাঁর দাবি, কাছাকাছি একাধিক স্কুল রয়েছে সেখানেই অভিভাবকেরা ভর্তি করাচ্ছেন তাঁদের সন্তানকে। তার উপর আর কোনও শিক্ষক শিক্ষিকা নেই।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়ার সুতাহাটা ব্লকের ডিহি শিবরামনগর হরিজন প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৪ সালে। মূলত তৎকালীন সময়ে সামাজিক ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা অংশ হরিজন পল্লির শিশুদের শিক্ষার অগ্রগতির জন্য তৈরি হয়েছিল এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। কিন্তু গত কয়েক বছরে ক্রমশ কমতে থাকে স্কুলটির পড়ুয়া সংখ্যা। এখন তা শূন্যে গিয়ে ঠেকেছে। একজন শিক্ষক কি করে বিভিন্ন শ্রেণীর পড়ুয়াদের পাঠদান করবে। ফলে অভিভাবকরা নিজেদের বাচ্চাদের সঠিক পঠনপাঠনের জন্য অন্যত্র ভর্তি করছেন। বেশীরভাগ মানুষ তাদের ছেলেমেয়েদের বেসরকারি স্কুলেও ভর্তি করেছে।
এই স্কুলটি তৈরির জন্য জমিদাতা পরিবারের এক সদস্য বলেন, "হরিজন পল্লির মানুষজনের কাছে বিদ্যালয় থাকা সত্ত্বেও দূরে শিশুদের পাঠাতে বাধ্য হচ্ছে। আমরা লিখিত ভাবে বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে আবেদন জানিয়েছি যাতে অবিলম্বে বিদ্যালয়টি চালু হয়।" এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, স্কুলে নতুন কিছু বিষয় যোগ করা হোক সাথে শিক্ষক নিয়োগ হোক। যাতে বাচ্চারা আগ্রহী হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা গৌতম মান্না বলেন, "প্রশাসনের উচিত স্কুলের উন্নয়ন ঘটিয়ে পড়াশোনার পরিবেশ তৈরি করা। নিয়মিত স্কুলে শিক্ষক আসেন না বলে এলাকার মানুষজন তাঁদের শিশুদের প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে বিদ্যালয় পাঠাচ্ছেন। বিদ্যালয়টি প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে।" বিদ্যালয়টির একমাত্র শিক্ষক অনুপ প্রামাণিক বলেন, “প্রধান শিক্ষক মারা যাওয়ার পরে এইখানে আমি শিক্ষক হিসাবে এসেছি। নথিপত্র ঘেঁটে যা দেখলাম ২০১৬ সালে মাত্র ৩০ জন ছাত্র ছাত্রী ছিল। ২০২৪ সালে এসে তা মাত্র চারজনে দাঁড়িয়েছিল। তাদের অভিভাবকেরা অন্য স্কুলে নিয়ে যায়। এর ফলে বিদ্যালয় ছাত্র ছাত্রী শূন্য হয়।”
SCHOOL CLOSED
শিক্ষক ১, ছাত্র ৪, বন্ধ হয়ে গেলো স্বাধীনতার আগের প্রাথমিক বিদ্যালয়
হলদিয়ার সুতাহাটা ব্লকের ডিহি শিবরামনগর হরিজন প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: রামশঙ্কর চক্রবর্ত্তী।
×
Comments :0