Amit Shah In the box

কাঠগড়ায় অমিত শাহ

সম্পাদকীয় বিভাগ

Amit Shah In the box


কানাডার নাগরিক খালিস্তানপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী শিখদের উপর হামলা ও হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগকে কেন্দ্র করে ভারত ও কানাডার সম্পর্ক দ্রুত তিক্ত থেকে তিক্ততর হয়ে উঠছে। গত দেড় বছর ধরে কানাডা সরকার ভারতের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে একটার পর একটা অভিযোগের তীর নিক্ষেপ করে চলেছে। অবশ্য ভারত প্রতি ক্ষেত্রেই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এতদিন কানাডার অভিযোগের তির ছিল ভারত সরকারের এজেন্ট, কানাডায় ভারতের রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসে কর্মরত কূটনীতিকরা। এবার তারা সরাসরি আঙুল তুলেছে মোদী সরকারের দ্বিতীয় ক্ষমতাবান ব্যক্তি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র দিকে। কানাডা সরকারের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্ট কানাডার নাগরিক শিখদের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনার পেছনে অমিত শাহ’র হাত আছে বলে চাঞ্চল্যকর খবর প্রকাশ করে। তারপরই কানাডার সংসদীয় কমিটির কাছে বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছেন উপ-বিদেশমন্ত্রী ডেভিড মরিসন। নিঃসন্দেহে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও বিদেশি রাষ্ট্র তাদের নাগরিকের বিরুদ্ধে হামলা ও খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেনি। অভিযোগ সত্য না মিথ্যা সেটা ভবিষ্যৎ বলবে। কিন্তু এমন এক অভিযোগ ওঠাটাও সকল ভারতবাসীর কাছে অত্যন্ত লজ্জার ও অপমানের। ভাবতেও শিহরণ জাগে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভিনদেশের নাগরিকদের ওপর হামলার বা হত্যার ষড়যন্ত্রের শরিক হচ্ছেন। সারা বিশ্বের কাছে ভারতের এই সম্মানহানি সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। কানাডা যখন অভিযোগ করেছে সেটা প্রমাণের দায় তাদেরই। যদি তারা প্রমাণ দিতে না পারে তাহলে তাদের ক্ষমা চাইতে হবে। তেমনি অভিযোগ যদি প্রমাণিত হয় তাহলে মোদী সরকারকেও ভারতের জনগণের কাছে ক্ষমতা চাইতে হবে। ভারত রাষ্ট্র এবং ভারতবাসীর হৃদয়বৃত্তিতে এধরনের অপরাধমূলক ভাবনার কোনও জায়গা নেই। হিংসার বিরুদ্ধে, যুদ্ধের বিরুদ্ধে চিরকাল ভারত শান্তির পতাকা উড়িয়েছে।
কানাডার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সমস্যা থাকতে পারে। এমনকি ক্ষমতা হারানোর আশঙ্কাও থাকতে পারে। তার অর্থ এই নয় যে সেই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে তিনি অন্য দেশের বিরুদ্ধে অবাস্তব অভিযোগ তুলবেন। তেমনি মোদী সরকার উগ্র জাতীয়তাবাদী অবস্থান থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরুদ্ধে যতই সক্রিয় হোক না কেন তাদের কোনও অধিকার নেই অন্য দেশের অভ্যন্তরে হামলা ও খুনের ষড়যন্ত্র করার। দু’টোই সমানভাবে ঘৃণ্য। প্রসঙ্গত, মোদী জমানায় এমন অভিযোগ শুধু কানাডা থেকেই উত্থাপিত হয়নি, আমেরিকা থেকেও এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে। বার বার একাধিক দেশ থেকে এমন অভিযোগ ভারতের ও ভারতবাসীর মর্যাদা ও সম্মানহানি করে। এটা মোটেই কাম্য নয়। সরকারকেই এই মোকাবিলা করে দেশের সম্মান রক্ষা করতে হবে। শুধু অভিযোগ মিথ্যা বলে দায় এড়ানো যাবে না। এটাও মনে রাখতে হবে কানাডার সঙ্গে সম্পর্কের তিক্ততা বাড়লে তার নেতিবাচক প্রভাব অন্যত্রও পডবে। সেটা ভারতের পক্ষে ক্ষতিকারকই হবে।

Comments :0

Login to leave a comment