পার্থপ্রতিম বিশ্বাস
বিশ্ববরেণ্য বাঙালি চিত্র পরিচালক তপন সিনহার অনবদ্য সৃষ্টি ছিল তাঁর বিখ্যাত চলচিত্র ‘ এক ডক্টর কি মৌত’। সেই চলচিত্রের বিষয়বস্তু ছিল এক উদীয়মান ডাক্তারের লড়াই দেশের সরকারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বাস্তুতন্ত্রে বাসা বাঁধা ঘুঘুর বাসার সাথে। সেলুলয়েডের পর্দায় সেই নির্মাণের চৌত্রিশ বছর পর এই বাংলার মানুষ সিনেমার পর্দায় নয়, বরং তাঁদের চর্মচক্ষে দেখছে সরকারি হাসপাতালে কর্মরতা এক তরুণী ডাক্তারের হত্যা রহস্য। রাজ্যের অন্যতম হাই প্রোফাইল সরকারি হাসপাতাল আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে মধ্যরাতে পাশবিক অত্যাচারের পর একত্রিশ বছরের এক ডাক্তারি পড়ুয়ার ধর্ষণ ও হত্যা, রাজ্যের মানুষের স্নায়ুতন্ত্রে মেরেছে সপাটে ধাক্কা। খুনের পর নির্যাতিতার দেহের ভয়াবহতা বাঘা বাঘা অভিজ্ঞ চিকিৎসকেরও হাড় হিম করে দিয়েছে। মধ্যরাতে সরকারি হাসপাতালে কর্মরতা এই তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস হত্যার পর হাসপাতাল এবং পুলিশ প্রশাসনের ভুমিকায় এই ঘটনা কেবল যৌন লালসার শিকার হওয়া এক নির্মম হত্যা নয় বরং এমন খুনের ঘটনায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রাতিষ্ঠানিক ষড়যন্ত্রের চেহারাকেই তুলে ধরেছে।
আর এমন বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের আশঙ্কার প্রেক্ষিতেই এই ভয়ঙ্কর প্রাতিষ্ঠানিক মৃত্যুর আঘাত সমাজে ফেলেছে বেনজির আলোড়ন। সাম্প্রতিককালে রাজ্যে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি, সিন্ডিকেট রাজ, কাটমানি, ঘুষ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঘুণ পোকার মতো ঢুকে পড়া বাংলার সমাজজীবনে ‘প্রতিবাদ’ শব্দের ঝাঁঝ কমছিল বলে মনে হচ্ছিল বেশ কয়েক বছর থেকেই। কিন্তু আজকের প্রযুক্তি নির্ভর যুগে সামাজিক মাধ্যমে সংগঠিত এই পড়ুয়া চিকিৎসকের হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলনের যে ভাষা দেখল রাজ্যের মানুষ, এক কথায় তা ঐতিহাসিক। স্বাধীনতার দিনে মধ্যরাত থেকে ভোর অবধি এক রাত দখলের ডাকে, জনপ্লাবন মহাষ্টমীর মধ্যরাতের ঢেউকে পেছনে ফেলে শাসকের কপালে স্থায়ী চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। কার্যত অসুর নিধনের মেজাজে রাজ্যের মেয়েদের ‘we want justice’ এর স্লোগানের সোচ্চার কণ্ঠস্বর রাজ্যে বহুদিন পর প্রতিবাদের উচ্চগ্রামের স্বর বেঁধে দিয়েছে। ফলে ‘বাংলা যে এমন প্রতিবাদী মেয়েদেরই চায়’ সেই কথার ধ্বনি প্রতিধ্বনি ছড়িয়ে পড়ল কোচবিহার থেকে কলকাতা এক বিপুল তরঙ্গের মতো রাজনীতির পতাকা ব্যতিরেকেই। কৌশলগত কারণেই এমন আন্দোলনে চেনা রাজনীতির স্বরের বাইরে এসে সমস্বরে জোট বেঁধেছিল স্বাধীনতার রাতে আবাল বৃদ্ধ বনিতা। সরকার এবং প্রশাসনের অপদার্থতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের বৃত্ত বড় করার লক্ষ্যে যে কৌশল নিয়েছিল উদ্যোক্তারা, সেটা অন্তত তার প্রথম পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে। বিশেষত সমাজের মধ্যবিত্ত মানুষ যারা শাসকের দাপটে অস্তিত্বের উভয়সঙ্কটে ভোগেন তাঁদের স্বতঃস্ফূর্ত যোগদান ছিল সেই রাতে চোখে পড়ার মতো। কিন্তু বহিরঙ্গে এই আন্দোলন অরাজনৈতিক বলা হলেও সেই প্রতিবাদ ছিল রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যর্থতা এবং শাসক দলের পোষা দুর্বৃত্তকুলের কলুষিত রাজনীতির বিরুদ্ধে।
ফলে প্রতিবাদ যে আসলে শাসকের বিরুদ্ধে প্রবল জনরোষের প্রতিফলন সেটা সবার আগে টের পেয়েছেন রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। ফলে এমন বেনজির বিক্ষোভের হাত থেকে তাঁর দল এবং সরকারকে বাঁচাতে স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে এই গণরোষকে দাগিয়ে দিয়েছেন ‘রাম-বামের চক্রান্ত’ বলে। পাশাপাশি জনরোষের ব্যাপ্তি উপলব্ধি করে তিনি এই আন্দোলনে কালি ছেটাতে এই জনরোষকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক গণবিক্ষোভের সাথে তুলনায় এনেছেন। আগস্টের মধ্যরাতের জন জাগরণের বিপদ বুঝেই সেই আন্দোলন ভাঙতে অত্যন্ত চেনা ছকের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়, সেই রাতেই আর জি কর হাসপাতালে দুষ্কৃতীদের দিয়ে তৈরি করা নৈরাজ্যের ঘটনায়। আন্দোলনকারীদের কালিমালিপ্ত করতে প্রতিবাদ মিছিলের শেষে স্থানীয় শাসক আশ্রিত গুণ্ডাবাহিনীর নেতৃত্বে হাসপাতাল জুড়ে চালানো হয় বেপরোয়া ভাঙচুর। সরকারি অর্থে গড়া হাসপাতালের কোটি কোটি টাকার সরকারি পরিকাঠামো ঘণ্টা খানেকের হামলায় তছনছ করে সেই দুষ্কৃতীদের দল। কিন্তু অতি আশ্চর্যের বিষয় হল, চিকিৎসক খুনের পর এমন স্পর্শকাতর হাসপাতাল ভরা পুলিশ বাহিনীর চোখের সামনে ঘটলো এই নৈরাজ্য। আর বাথরুমে গিয়ে এবং ওয়ার্ডে রোগী শয্যার নিচে গিয়ে প্রাণ রক্ষা করেছে সেই বীরপুঙ্গব পুলিশ বাহিনী। এই প্রেক্ষিতে প্রশ্ন হলো যে, এই প্রবল পরাক্রমশালী বাংলার তাজা নেতাদের ধরার হিম্মত তাঁরা হারিয়ে ফেলেছিল না কি পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসাবে হাসপাতালের আনাচে কানাচে রয়ে যাওয়া অপরাধের শেষ চিহ্নগুলি মুছে ফেলতেই এই হামলার অনুমোদন সেটাই আসছে আতশ কাচের তলায়। ফলে এক ঢিলে দুই পাখি মারার কৌশল ছিল মধ্যরাতে হাসপাতাল জুড়ে সেই হামলায়, যাতে রাত দখলের আন্দোলনকে দাগিয়ে দেওয়া যায় এই নৈরাজ্যের সাথে আর অন্যদিকে সেই নৈরাজ্যের ঘোলা জলে হাফিস করা যায় অপরাধের প্রমান। কার্যত একই কৌশলে সাম্প্রতিককালে তরুণী চিকিৎসকের খুন হওয়া সেমিনার রুম সংলগ্ন এলাকা সংস্কারের নামে ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছিল হাসপাতাল প্রশাসন, যেটা রোখা গেছে রাজ্যের ছাত্র-যুব আন্দোলনের কর্মীদের তৎপরতায়।
একদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন দোষীর সর্বোচ্চ সাজা হোক আর তাঁর অধীনে থাকা পুলিশ, খুনের বিবিধ প্রমাণ হাপিশের উদ্যোগে ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে রয়েছে। ফলে এই হত্যার শুরুর থেকে পুলিশ প্রশাসনের রহস্যজনক ভুমিকা এই হত্যা রহস্যের জাল বিস্তার করে চলেছে। খুনের পর তরুণীর অজস্র ক্ষত চিহ্নের মৃতদেহ দেখে সেটাকে কোন যুক্তিতে পুলিশ কিংবা হাসপাতাল প্রশাসন আত্মহত্যার ঘটনা বলে চালাতে চেয়েছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা। জনমতের চাপে যখন সেই আত্মহত্যার তত্ত্ব ত্যাগ করে হত্যার ব্লু প্রিন্ট সামনে এল, তখনও এই পরিকল্পিত হত্যার
বৃহত্তর চক্রান্ত উন্মুক্ত করার পরিবর্তে নির্বিকার চিত্তে সময় নষ্ট করেছে পুলিশ প্রশাসন। ফলে এমন বিলম্বের অবধারিত পরিনতিতে এই খুনের সত্য অন্বেষণের পথ আরও অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
যে হাসপাতাল চত্বরে কর্মরতা তরুণী চিকিৎসক খুন হলেন সেই হাসপাতালের প্রশাসনিক প্রধানের ভুমিকা ছিল এই হত্যা রহস্যে অন্যতম জরুরি ভাষ্য এবং সূত্র। কিন্তু প্রবল প্রভাবশালী সেই হাসপাতালের প্রিন্সিপালকে হেপাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসা করা তো দূরস্থান কার্যত তাঁর কেশাগ্র স্পর্শ করার হিম্মত যে রাজ্য পুলিশের নেই সেটা বোঝা গেছে গোটা ঘটনা পরম্পরায়। অথচ ভুরি ভুরি অভিযোগে বিদ্ধ সেই মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল। সেই তালিকায় রয়েছে কলেজের পরীক্ষার নম্বরে স্বজনপোষণ, বেছে বেছে অপছন্দের পড়ুয়াদের হেনস্তা, টাকার বিনিময়ে পাশ-ফেল নিয়ন্ত্রণ, সরকারি নিয়ম ভেঙে বিভিন্ন সংস্থাকে বরাত দেওয়া থেকে শুরু করে হাসপাতালের মেডিক্যাল বজ্র বিক্রিতে দুর্নীতির অভিযোগ। ফলে এই প্রভাবশালী প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে স্বচ্ছ তদন্ত হওয়া তো দুরের কথা এমনকি রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবন থেকে জারি করা তাঁর বদলির সকালের আদেশনামা সন্ধ্যে নামার আগেই পালটে যায়। ফলে এখানেই প্রশ্ন এমন মধ্য মেধার মানুষেরা কি করে এতো প্রভাবশালী হয়ে রাজ্যের নামকরা হাসপাতালের মাথায় চেপে বসেছে?
এই তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর পিছনে একাধিক মাথা এবং একাধিক কারণ থাকার সম্ভাবনা উঠে আসছে সাম্প্রতিক বিতর্কের মাঝে। প্রশ্ন উঠছে হাসপাতালকে কেন্দ্র করে মাদক এবং অপরাধ চক্রের কোনও সুত্র জেনে ফেলার জন্য কি অকালে প্রাণ দিতে হলো এই তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়াকে?
অথচ রাজ্যের নামকরা এই হাসপাতালের প্রশাসনিক নৈরাজ্যের যাবতীয় অভিযোগ হিমঘরে পাঠিয়ে কলেজের প্রিন্সিপাল ছিলেন বহাল তবিয়তে। এমনকি ছয় বছর আগেও যে কলেজ পঠনপাঠনের নিরিখে পূর্ব ভারতের শ্রেষ্ঠ মেডিক্যাল কলেজ ছিল, NIRF মেধা তালিকায় গোটা দেশে ১১ তম স্থানে ছিল, সেটাই এখন দেশের প্রথম পঞ্চাশের তালিকাতেও নেই। সেই কলেজের এমন ভয়াবহ অবনমনের কার্য-কারণ সম্পর্ক খোঁজার দায় রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। অথচ তাঁরাই এমন লাটে তোলা কলেজের দাগী প্রিন্সিপালদের মাথায় তুলে রেখেছেন বিশুদ্ধ রাজনৈতিক প্রভাবের দাপটে। বিশেষত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যখন স্বাস্থ্য দপ্তরের দায়িত্বে তখন সরকার এই প্রাতিষ্ঠানিক নৈরাজ্যের দায় নিতে বাধ্য।
এমনকি এই চিকিৎসক হত্যার পরও তাঁর বিরুদ্ধে চরম গণবিক্ষোভের মুখে প্রিন্সিপাল পদত্যাগ করলেও রাজ্যের সরকার তাঁর মান ভাঙাতে তাঁকে আর জি কর থেকে সরিয়ে কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের মাথায় বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় । বলাই বাহুল্য, একাধারে রাজ্য পুলিশের তদন্তের বেহাল অবস্থা এবং রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রিন্সিপাল বদলের এই বেনজির সিদ্ধান্ত হাইকোর্টে প্রবল সমালোচিত হয়েছে। কোর্টের আদেশে অভিযুক্ত প্রিন্সিপালের নতুন কলেজে যোগদান আপাতত বিশ বাঁও জলে গেছে। কিন্তু এই পদক্ষেপে সরকারের সদিচ্ছার নমুনা বেরিয়ে এসেছে জনসমক্ষে। বিশেষত এমন বঙ্গ রত্নের দল কেবল মেডিক্যাল কলেজের মাথায় নয়, উপরন্তু কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা স্বশাসিত সংস্থার মাথায় চেপে বসেছে। ফলে তাঁরা স্ব স্ব ক্ষেত্রে আইনের শাসনের পরিবর্তে শাসকের আইন প্রণয়নে পথে নেমেছে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে। যে কারণে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের মাথায় মানিক ভট্টাচার্য নিযুক্ত হয়, যে যে কারণে সুবীরেশ ভট্টাচার্যরা উপাচার্যের চেয়ারে বসেন, ঠিক সেই একই কারনে সন্দীপ ঘোষেরা নিযুক্ত হন মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালের পদে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রতিষ্ঠানের শীর্ষে বসা ব্যক্তিরা দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত। প্রতিটি ক্ষেত্রেই এমন ব্যক্তিরাই শাসকের রক্ষা কবচে সুরক্ষিত। অথচ এঁদের প্রভাবে অরক্ষিত এবং বেহাল হয়ে চলেছে রাজ্যের সরকারি শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। স্বশাসনের পরিবর্তে শাসকের নিয়ন্ত্রণের রাজনীতির গেরোয় আটকে আজ রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।
রাজ্যের শাসক দলের বিধায়ক, সাংসদ, মন্ত্রী থেকে শুরু করে হাসপাতালের সিভিক পুলিশ সকলেই জড়িয়ে পড়েছে দুর্নীতির বাস্তুতন্ত্রে। আর এই প্রক্রিয়ার চরম পরিণতি হলো মধ্যরাতে চিকিৎসক হত্যা এবং উন্মত্ত দুষ্কৃতী তাণ্ডব। হাসপাতালে এমন নৈরাজ্য শেষমেশ সরকার পোষিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর সাধারন মানুষের অনাস্থা তৈরি করছে, যেমনটা করেছে স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সরকারি শিক্ষার প্রতি সাধারন মানুষের অনাস্থা। ফলে এমন নৈরাজ্যে পৌষ মাস হচ্ছে স্বাস্থ্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের। আর অসহায় নিম্নবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনে নামছে সর্বনাশের ভয়।
রাজ্যের পুলিশের তদন্তে পরিবারের আস্থা আছে এটা জনসমক্ষে তুলে ধরতে সেই পরিবারের ওপর শাসক দলের পক্ষ থেকে প্রবল চাপ দেওয়ার অভিযোগ আদালতে উঠে এসেছে। এমন প্রেক্ষিতে এই হত্যা তদন্তের ভার আদালতের নির্দেশে অবশেষে গেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই’র হাতে। কার্যত এই রাজ্যের পুলিশ কামদুনি থেকে হাঁসখালি কিংবা পার্ক স্ট্রিট থেকে বগটুই এমন ধারাবাহিক অপরাধের কোনোটিতেই অপরাধীদের কাঙ্ক্ষিত শাস্তির ঘানি টানাতে পারেনি। উপরন্তু কামদুনির ধর্ষণের ঘটনায় অধিকাংশ অভিযুক্ত বেকসুর খালাস হয়ে গেছে হয় পুলিশের পেশাদারিত্বের অভাবে এবং শাসকের রাজনৈতিক প্রভাবে। এমনকি প্রতিটি অপরাধকে প্রাথমিকভাবে অস্বীকার করার যে ভয়াবহ প্রশাসনিক প্রবণতা গত তেরো বছরে দেখেছে রাজ্যের মানুষ, আরজিকর কাণ্ড তার ব্যতিক্রম নয়। পার্ক স্ট্রিটে যেমন সাজানো ঘটনা, কামদুনিতে বিরোধী চক্রান্ত, হাঁসখালিতে ‘ লাভ অ্যাফেয়ার্স’তকমা দিয়ে সর্বোচ্চ প্রশাসনিক স্তর থেকে সত্য সন্ধানের পথ অবরুদ্ধ করা হয়েছিল, এক্ষেত্রেও পরিকল্পিতভাবে এক ভয়াবহ হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করেছিল প্রশাসন। এই প্রেক্ষিতে কলকাতা পুলিশ থেকে তদন্তের ভার সিবিআই’র হাতে যাওয়ায় সত্য উদঘাটন কত দ্রুত হয় সেদিকে সব পক্ষের দৃষ্টি থাকবে। আর সজাগ থাকবে রাজ্যের রাত জাগা কোটি কোটি মানুষ প্রতিবাদের নিত্য নতুন আঙ্গিকে নতুন ভোর দেখবে বলে।
'Ek Doctor ki Mait'
এক ডক্টর কি মৌত ‘ এক নির্লজ্জ, নির্বিকার প্রশাসন
×
Comments :0