বিশ্বকাপ খুব বেশি দূরে নেই। আড়াই মাসেরও কম সময় বাকি। বিশ্বকাপের আগে কম্বিনেশন বাছতে ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য হাতে খুব বেশি সময় নেই ভারতের কাছে। আর মাত্র তিনটি ৫০ ওভারের সিরিজ রয়েছে টিম ইন্ডিয়ার সামনে। মোট ১১ ম্যাচ। যদি এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠতে পারে, তখন অতিরিক্ত একটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। বেশ কয়েক জায়গায় সমস্যা রয়েছে ভারতের।
যেমন, চার ব্যাটার হিসাবে কে খেলবেন? শ্রেয়স আইয়ারের চোট। সূর্যকুমার যাদব ওয়ান ডে ক্রিকেটের জন্য এখনও তৈরি নন। শেষ সিরিজে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টানা তিন ম্যাচে শূন্য করার নজির গড়েছেন। এছাড়াও আসন্ন বিশ্বকাপে খেলা সম্ভব নয় ঋষভ পন্থের পক্ষে। তিনি জাতীয় ক্রিকেট আকাদেমিতে যতই নেটে ব্যাটিং-উইকেটকিপিং অনুশীলন করুক না কেন! তাঁর পুরো ম্যাচ ফিট হয়ে উঠতে আরও সময় লাগবে। কেএল রাহুল এখনও ফিট নন। হয়তো তিনি এশিয়া কাপে ফিরবেন ভারতীয় দলে। বিশ্বকাপে তাঁকেই উইকেটরক্ষকের ভূমিকায় দেখা যাবে। এবার প্রশ্ন হচ্ছে, রাহুলের ব্যাক আপ কে হবেন? ঈশান কিষান না সঞ্জু স্যামসন। বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের একদিনের সিরিজ। এই সিরিজ কিছু সমস্যার সমাধান করতে পারে ভারতের। চার নম্বরে ও উইকেটরক্ষক হিসাবে যাদের খেলানো হবে, তাঁরা যদি ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করতে পারেন, তাহলে বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপ ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পথে হাঁটবে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট।
২০১৯ বিশ্বকাপে ভারতকে ভুগিয়েছিলেন, চার নম্বরে খেলার মতো যোগ্য ব্যাটার তৈরি করতে না পারা। যুবরাজ সিং ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর চার নম্বরের জায়গাটা ভরাট করতে পারেনি টিম ইন্ডিয়া। শেষ চারে বছরে এই জায়গায় বহু ব্যাটারকে খেলানো হয়েছে, কেউই ভরসার প্রতিদান দিতে পারেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শেষ একটা সুযোগ পাবেন সূর্যকুমার। তিনি ব্যর্থ হলেন, এশিয়া কাপে যদি শ্রেয়স ফেরেন, তাহলে তিনিই ভারতের বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় ঢুকে যাবেন। এবং উইকেটকিপার হিসাবে ঈশানকে বসিয়ে সঞ্জুকে সুযোগ দেওয়া হবে। গতবার ওয়েস্ট ইন্ডিজে সফল হয়েছিলেন সঞ্জু। ওয়ান ডে ক্রিকেটে তাঁর স্ট্রাইক রেট একশোর উপরে। হাতে শটের বৈচিত্র রয়েছে। ফলত, পাঁচ নম্বরে দলকে ভরসা দিতে পারবেন।
ভারতের টপ অর্ডার ঈর্ষনীয়। শুভমন গিল, রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি তিনজনই অনবদ্য ছন্দে রয়েছে। এই বছর প্রত্যেকেই শতরান করেছেন এই ফরম্যাটে। একশো স্ট্রাইক রেট নিয়ে ব্যাটিং করছেন তাঁরা। যে কোনও দলের কাছে এমন টপ অর্ডার স্বপ্নের মতো। বিপক্ষের কাছে দুঃস্বপ্ন। এঁরা দীর্ঘক্ষণ ব্যাটিং করায়, মিডল অর্ডারের ব্যাটাররা ব্যাটিং করার সুযোগ খুবই কম পায়। যেদিন বিরাটরা ব্যর্থ হবেন, সেদিনই বড় পরীক্ষা সামনে পড়ে খেই হারায় মিডল অর্ডার। টেস্টে গিল রান না পেলেও আশা করা যায়, সাদা বলের ক্রিকেটে ফেরত এসে রান পাবেন। রোহিত-বিরাট দু’জন নিজেদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চেষ্টা করবেন। কিন্তু বার্বাডোজের পিচ মন্থর। বল থেমে ব্যাটে আসে। পেসারদের জন্য সাহায্য মজুত থাকে উইকেটে। সেক্ষেত্রে ফ্রি-ফ্লোয়িং ব্যাটিং করাটা একটু চাপের। যারা স্ট্রোক খেলতে পছন্দ করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফিরেছেন ওশানে থমাস। তিনি জুটি বাঁধবেন আলজেরি জোসেফের সঙ্গে। দু’জনেই একশো চল্লিশের উপরে বোলিং করতে পারেন। ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপকে চ্যালেঞ্জের সামনে পড়তে হবে বলা যায়।
এক স্পিনার হিসাবে খেলবেন জাদেজা। যদি দুই স্পিনার নামে, তখন অক্ষর প্যাটেল না কুলদীপ যাদব। কিছুটা ধন্দে ভারত। অক্ষর খেললে ব্যাটিংয়ে গভীরতা বাড়বে। বল হাতে আঁটোসাঁটো বোলিং করে রান আটকাতে পারবেন। কুলদীপ খেললে, তিনি মাঝের ওভারে উইকেট তুলতে পারেন। তিন পেসারে নামবে ভারত। উমরান মালিক ও মহম্মদ সিরাজ। শেষ টেস্টে অভিষেকে নজর কেড়েছেন মুকেশ কুমার। একদিনের ক্রিকেটেও তাঁর অভিষেক হতে পারে সম্ভবত সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতেই।
অন্যদিকে, বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি দু’বারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাঁদের কাছে এটা খুব বড় সেটব্যাক। বিশ্বকাপে যেতে না পারার জ্বালা ভুলতে ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ জেতার লক্ষ্যে নামবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সাদা বলের ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সমীহ করার মতো দল। এই দলে এমন কয়েকজন ক্রিকেটার আছে, যারা ম্যাচের রং মুহূর্তে বদলে দিতে পারে। শিমরন হেটমায়ার ফেরায় শক্তি বেড়েছে ক্যারিবিয়ানদের।
(ম্যাচ শুরু সন্ধ্যা সাতটা
সরাসরি ডিডি স্পোর্টস)
Comments :0