Birbhum Woman

কৃত্রিম উপায়ে মা হলেন, স্বামীর মৃত্যুর দুবছর বাদে

রাজ্য

স্বামীর মৃত্যুর দু বছর বাদে স্বামীর সংরক্ষণ করা শুক্রানু ব্যবহার মা হলেন ৪৮- মহিলা! সন্তান লাভের জেদ, মা হওয়ার বাসনা, স্বামী স্মৃতি আঁকড়ে বেঁচে থাকার তাগিদই তাঁকে করে তুলেছে দু:সাহসী। তাই তো সদ্য সন্তান করা মাকে বীরাঙ্গনা বলছেন সকলেই। 
ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ) পদ্ধতির ব্যবহার হয়েছে সঙ্গীতার মা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে। সদ্য দিনের আলো দেখা সন্তান সুস্থ থাকলেও মায়ের শারিরীক অবস্থার খানিকটা অবনতি হওয়ায় ভর্তি ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে। রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নজরদারিতে রয়েছেন মা ও সন্তান। জানা গেছে, দু’বছর আগে বীরভূমের  মুরারইয়েরর বাসিন্দা ওই মহিলা সন্তান ধারণে সমস্যা ধরা পড়েছিল। অবলম্বন করেছিলেন আইভিএফ পদ্ধতি। দীর্ঘদিন ধরে আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান লাভের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন ওই দম্পতি। দু বছর আগে কলকাতার একটি পরীক্ষাগারে মহিলার স্বামীর শুক্রানু সংরক্ষণ করা হয়। 
কিন্তু এক অনভিপ্রেত বিপর্যয় নেমে আসে মহিলার জীবনে। কোভিড কেড়ে নেয় স্বামীর প্রাণ। কিন্তু স্বামীর স্মৃতি আঁকড়ে গর্ভে সন্তান ধারণের পণ নিয়ে মৃত স্বামীর শুক্রাণু ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। অবশেষে ৪৮ বছর বয়সে পুত্র সন্তানের মা হয়েছেন এই অর্ধেক আকাশ। গত মঙ্গলবার অস্ত্রোপচার করে আড়াই কেজি ওজনের পুত্র সন্তানের জন্ম হয় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মহিলার জীবনে বিপর্যয় কিন্তু থেমে ছিল না। স্বামী মারা যাওয়ার পর মহিলার পাশে ছিল না পরিবারে কেউ। তাঁর বাপের উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটিতে। মুরারইয়ের ২৭ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল। মুরারইয়ে তাঁর একটি মুদিখানার দোকান রয়েছে। দু’বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর মুদিখানার দোকান চালিয়ে করছেন দিনগুজরান। পাশ থেকে সরে গিয়েছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজনও। একাকি বিপন্ন মহিলার তাতে বরং জেদ আরও বাড়ে। দু চোখে মা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে চালিয়ে যান লড়াই। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে অবশেষে। তবে এবার লড়াই সন্তান কোলে নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার।  
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি পলাশ দাস বলেন, “ওই মহিলা কঠিন পরিস্থতির মধ্যে দিয়ে মা হয়েছেন। সন্তানের জন্ম দেওয়ার বয়সের শেষে দাঁড়িয়ে তিনি স্বামী শুক্রাণু ধারণ করে সন্তানের জন্ম দেওয়ার যে ঝুঁকি নিয়েছিলেন সেটার তাকে কুর্ণিশ জানাতেই হয়। আমরা খুশি, কারণ এই মুহূর্তে মা ও বাচ্চা দুজনেই ভালো রয়েছে।''
 

Comments :0

Login to leave a comment