আদানি তদন্তের রিপোর্ট দেওয়ার জন্য আরও ১৫ দিন সময় চাইল ‘সেবি’। দেশের শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান সুপ্রিম কোর্টে সোমবার জানিয়েছে যে তদন্তের কাজ এগিয়েছে। তবে গোটাতে আরও দিন পনেরো সময় দরকার।
‘সেবি’ বা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে যে ২৪টি বিষয় নিয়ে তদন্ত চলছে। তার মধ্যে ১৭টি বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট চূড়ান্ত করা হয়েছে।
১১ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ‘সেবি’-র কাছে জানতে চান আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দাম ভাঁড়ানোর অভিযোগের তদন্ত কতটা এগিয়েছে। সেদিনই ১৪ আগস্ট পর্যন্ত তদন্তের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন মঞ্জুর করে আদালত।
শেয়ার বাজারে কেনাবেচায় জড়িত সংস্থা হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের পরপর হু-হু করে পড়তে থাকে আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারের দাম। আদানি গোষ্ঠীর অডিটর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছে সম্প্রতি। সোমবারও আদানি পোর্টের শেয়ারের দাম পড়েছে।
হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে অভিযোগ করা হয় যে বাজারে যা দাম নয় তার চেয়ে অনেক বেশি দামে লেনদেন হয়েছে আদানির শেয়ার। বিদেশ থেকে ভুয়ো সংস্থার নামে টাকা ঢোকানো হয়েছে ভারতের শেয়ার বাজারে। এমন একাধিক সংস্থা রয়েছে যারা মরিশাসের ঠিকা থেকে ভারতে কেবল আদানির শেয়ারই কিনেছে। আদানির ব্যবসার কারণে শেয়ারের দাম নির্ধারিত হয়। ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে দাম।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি ঘনিষ্ঠ এই সংস্থায় বিপুল বিনিয়োগ করে রেখেছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থা এলআইসি। শেয়ারের দাম পড়ে যাওয়ায় এলআইসি’র মূলধন প্রায় সত্তর হাজার কোটি টাকা কমে গিয়েছে বলে অভিযোগ। এই কেলেঙ্কারি নিয়ে বিশদ আলোচনা করতে বিজেপি সরকার রাজি হয়নি সংসদে।
আদানি নিয়ে মামলায় সুপ্রিম কোর্ট কমিটি গড়েছিল। কমিটি প্রাথমিক রিপোর্টে জানিয়েছিল যে শেয়ারে কারচুপির জন্য আদানিকে বা নজরদারি না করার জন্য ‘সেবি’-কে দায়ী করার মতো তথ্য প্রমাণ মিলছে না। রিপোর্টের এই অংশ বিজেপি’কে উৎসাহিত করলেও পরের অংশ সরকারের পক্ষে বিপজ্জনক বার্তা ছিল। বলা হয় যে ২০১৪ থেকে ২০১৯’র মধ্যে ‘সেবি’ নিজেই নজরদারি বিধিতে একাধিক পরিবর্তন আনে। যার জেরে অনেক বিষয়ে ‘সেবি’ নিজেই নজরদারি করা ক্ষমতা ছেড়ে দেয়। উল্লেখ্য, ২০১৪’তেই সরকারে আসীন হন নরেন্দ্র মোদী।
আদানি পোর্ট অ্যান্ড স্পেশাল ইকনমিক জোন তদন্তে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সংস্থার হিসেবরক্ষক সংস্থা ডুলয়েট দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ায়। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন যে মাঝপথে কোনও সংস্থার অডিটর দায়িত্ব ছেড়ে দিলে বুঝতে হবে অনেককিছুই ঠিকঠাক নেই।
Comments :0