North Bengal University

ছাত্র বিক্ষোভে উত্তরবঙ্গে অপসারিত বিভাগীয় প্রধান

রাজ্য

North Bengal University


গবেষক ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের গবেষক ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে ওই বিভাগেরই বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে। ঘটনায় অভিযুক্ত বটানির বিভাগীয় প্রধান জ্ঞানবিকাশ ভান্ডারিকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো সহ বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে অপসারিত করা হলো। বুধবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক ছাত্র আন্দোলনের জেরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে জরুরী বৈঠক শেষেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জানা গেছে, যৌন হেনস্তার শিকার গবেষক ছাত্রীটি জুনিয়ার রিসার্চ ফেলো হিসেবে বটানির বিভাগীয় প্রধানের অধীনে গবেষনা করছিলেন। ২০২২সালের মার্চ মাস থেকে গবেষক ছাত্রীটি অভিযুক্তের ল্যাবে কাজে যুক্ত হয়েছিলেন। সেই থেকেই সুযোগ বুঝে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে তাঁর গায়ে হাত দেওয়া থেকে শুরু করে নানা খারাপ কাজ করছিলো অভিযুক্ত শিক্ষক। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে কুপ্রস্তাব দেওয়া ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে গবেষনার সুপারভাইজার হওয়ার সুযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীটিকে যৌন নিগ্রহ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, গবেষক ছাত্রীকে শিলিগুড়ি শহরে শিক্ষকের ফাঁকা বাড়িতে রাত কাটানোরও মতো কুপ্রস্তাবও দিয়েছে অভিযুক্ত শিক্ষক। গত সোমবার রাতে গবেষক ছাত্রী শিক্ষামন্ত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ইউজিসিকে এই অভিযোগ জানিয়ে লিখিত অভিযোগ পত্র জমা করেছেন। ঘটনা জানাজানি হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার সকাল থেকে পেনডাউন কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত ক্লাস বয়কট করে গবেষক ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভ আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রতিবাদ মৌন মিছিলের পাশাপাশি অভিযুক্ত বটানি বিভাগীয় প্রধানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে এদিন দফায় দফায় রেজিস্ট্রারের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে গবেষকরা। এদিন ছাত্র আন্দোলনের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পঠনপাঠনের পরিবেশ বিঘ্নিত হয়ে পড়ে। রেজিস্ট্রারের হাতে চার দফা দাবিতে এদিন একটি স্মারকলিপিও প্রদান করেন বিক্ষোভরত ছাত্র-ছাত্রীরা। গবেষক ছাত্রীকে যৌন হেনস্তার ঘটনাকে ঘিরে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ও ভেতরে ব্যাপক শোরগোল সৃষ্টি হয়। 


এদিন জরুরী বৈঠক শেষে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার স্বপন কুমার রক্ষিত জানিয়েছেন, জরুরী বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব থেকে অভিযুক্ত শিক্ষককে সরিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোন বিষয়ে অভিযুক্ত হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। বর্তমানে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এই বিভাগেরই অধ্যাপক সুভাষচন্দ্র রায়ের ওপর। যৌন হেনস্তার শিকার গবেষক ছাত্রীটিকে নিজস্ব পছন্দের থিসিস গাইড বেছে নেবার জন্য বলা হয়েছে। ইউজিসি’র গাইডলাইন মেনে পুরো ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট আসার পরেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Comments :0

Login to leave a comment