জুয়েলারি সংস্থার নামে প্রতারণা। গ্রেপ্তার শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনের ৪৭নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরের আত্মীয়। ঘটনার পূর্নাঙ্গ তদন্ত, দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানালো সিপিআই(এম)। শুক্রবার দুপুরে শিলিগুড়ি সিপিআই(এম) ১নং এরিয়া কমিটির পক্ষ থেকে আর্থিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সমস্যা সমাধানের দাবিতে প্রধাননগর পুলিশ স্টেশনের আইসি’র উদ্দেশ্যে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত ৪৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের এক আত্মীয় দীপক সাহা কয়েক বছর আগে একটি জুয়েলারি সংস্থা খোলে। এই সংস্থায় বেশ কয়েকজন মহিলা কাজে যুক্তও হন। মহিলারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে জুয়েলারি সংস্থার নানা পলিশি বিষয়ে মানুষকে জানিয়ে ওই সংস্থায় বিনিয়োগ করাতেন। এভাবে চলতে চলতে প্রায় দশ হাজার মানুষ ওই সংস্থায় আর্থিক বিনিয়োগ করেন। এরমধ্যে আচমকাই প্রতারক দীপক সাহা ওই সংস্থাটি বন্ধ করে পালিয়ে যায়। সাধারণ গ্রাহকরা তাদের জমা করা টাকা ফেরত পাবার জন্য জুয়েলারি সংস্থার সাথে যুক্ত মহিলা এজেন্টদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। এদিকে দীপক সাহার খোঁজ না পাওয়ায় চাপের মুখে মহিলা এজেন্টরা প্রধানগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বেশ কিছুদিন পর প্রকাশ্যে আসে শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনের ৪৭নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অমর আনন্দ দাস প্রতারক দীপক সাহার আত্মীয়। এরপর ওই তৃণমূলী কাউন্সিলরের বাড়ির সামনে এসে বিক্ষোভ দেখান এজেন্ট ও গ্রাহক মহিলারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান প্রধাননগর থানার পুলিশ। প্রায় দশ হাজার মানুষের সাথে আর্থিক লেনদেন করে প্রতারণা করার অভিযোগে অভিযুক্ত প্রতারক দীপক সাহাকে আটক করে পুলিশ।
এই গোটা বিষয়টি এদিনের স্মারকলিপিতে তুলে ধরে যে সমস্ত মানুষ এই প্রতারণার শিকার হয়েছেন, তাদের টাকা ফেরত দেবার ব্যবস্থা করার ও ধৃত প্রতারকের সাথে এই প্রতারণার কাজে অন্য যারা জড়িত রয়েছে তাদের অবিলম্বে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবারও দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। এদিন স্মারকলিপি দেবার সময় ছিলেন সিপিআই(এম) শিলিগুড়ি ১নং এরিয়া কমিটির সম্পাদক লক্ষ্মণ ঘোষ, পার্টি নেতা জয় চক্রবর্তী, তাপস সরকার, সৌরভ সরকার, সৌরভ দাস, শম্ভু প্রসাদ, মহিলা নেত্রী স্নিগ্ধা হাজরা, তানিয়া দে প্রমুখ। মহিলা নেত্রী স্নিগ্ধা হাজরা বলেন, এই প্রথম কর্পোরেশনের কোন জনপ্রতিনিধি সরাসরি প্রতারনায় যুক্ত হয়েছে। অতীতে এমনটা হয়নি। কোটি কোটি টাকার প্রতারণার ঘটনায় তৃণমূলের জনপ্রতিনিধির আত্মীয়ের যুক্ত থাকাটা অত্যন্ত লজ্জাজনক। প্রতারককে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেই হবে না। দ্রুততার সাথে গ্রাহকদের সমস্ত টাকা ফেরত দিতে হবে। পুলিশ প্রশাসনের সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়ে বলেন, মেয়রের উচিৎ তদন্ত করে গোটা ঘটনাকে পরিষ্কারভাবে জনসাধারণের সামনে তুলে ধরে শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনকে কলঙ্কমুক্ত করা। তা না হলে আগামীদিনে আরো বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
Comments :0