SONIA LETTER MODI

মোদীকে চিঠি সোনিয়ার: ফসলের দাম-বেরোজগারি-বিদ্বেষ বিশেষ অধিবেশনে আলোচনার দাবি

জাতীয়

SONIA LETTER MODI

বিশেষ অধিবেশন ডেকে কেবল সরকারি আলোচনা চালাবেন না। বিরোধীদের বক্তব্যও শুনতে হবে। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি পাঠিয়ে এই দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। 

চিঠিতে ৯টি বিষয়ের উল্লেখ করেছেন সোনিয়া গান্ধী। মূল্যবৃদ্ধি এবং বেকারির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আক্রমণ এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতির বিপদ প্রসঙ্গেও আলোচনার দাবি জানিয়েছেন তিনি। রয়েছে কৃষকদের সরকারি দামে ফসল বিক্রির আইনি সুরক্ষা থেকে আদানি কেলেঙ্কারি নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ার বিষয়ে আলোচনার দাবিও। জাতভিত্তিক সমীক্ষা এবং জাতীয় জনগণনার দাবি প্রসঙ্গেও আলোচনার দাবি তুলেছেন সোনিয়া। 

কৃষক আন্দোলনের চাপে তিন কৃষি আইন বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিলেন মোদী। সেই সঙ্গে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সরকার ঘোষিত ন্যূনতম দাম যাতে কৃষকরা অন্তত পান তার আইনি নিশ্চয়তা হবে। তার জন্য কমিটি গড়ে কাজ শুরু হবে। কিন্তু প্রতিশ্রুতির দিকে কতটা এগনো গেল জানাননি প্রধানমন্ত্রী। 

সেপ্টেম্বরের ১৭ থেকে ২২ সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু কোন কোন বিষয়ে আলোচনা হবে অধিবেশনে জানানো হয়নি বিরোধীদের। বিরোধীদের সঙ্গে কোনও আলোচনাও হয়নি। রাজনৈতিক মহলে বিশেষ অধিবেশন ঘিরে আলোচনা তুঙ্গে। 

বুধবারই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে প্রধান করে এই কমিটি গড়েছে কেন্দ্র। লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আনার চর্চা ছিলই। যোগ হয়েছে এই বছরের শেষে রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, ছত্তিশগড়ের মতো রাজ্যগুলির নির্বাচনের সঙ্গেই তা হবে কিনা, সেই আলোচনা। সূচি অনুযায়ী লোকসভা নির্বাচনের পরের ৬ মাসের মধ্যে হরিয়ানা, দিল্লি, মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভোটও হওয়ার কথা। বিধানসভা ভোট এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত সংবিধান অনুযায়ী নির্ভর করে রাজ্যগুলির ওপর। বিরোধী রাজ্যগুলিকে তা এগিয়ে আনতে বাধ্য করার জন্য সংবিধান সংশোধন এই বিশেষ অধিবেশনে পাশ হবে কিনা রয়েছে সেই আলোচনা। 

সোনিয়া গান্ধীর চিঠির বক্তব্য জানিয়ে এদিন দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেন জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ। তিনি বলেছেন, ‘‘অধিবেশন ঘিরে এত গোপনীয়তার কী আছে। বিরোধী দলগুলির সঙ্গে সরকারের আলোচনা করতে বাধা কোথায় বোঝা যাচ্ছে না।’’ রমেশ জানিয়েছেন যে সোনিয়া গান্ধী প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে গঠনমূলক ভূমিকা নেওয়ার ইচ্ছেই জানিয়েছেন। রমেশ বলেছেন, ‘‘অধিবেশন ডেকে কেবল সরকারি পরিকল্পনা পাশ করিয়ে নেওয়া হবে তা হয় না। একদিকে বলছি আমরা ভারত গণতন্ত্রের জননী। আরেকদিকে স্বৈরাচারের তোপ দাগা হচ্ছে, তা চললে গণতন্ত্র থাকে না।’’ 

বিশেষ অধিবেশনের আগেই সংবিধান থেকে দেশের নাম ‘ইন্ডিয়া’ মুছে ফেলে কেবল ‘ভারত’ রাখার জন্য তোড়জোর শুরু হয়েছে। সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ বলেছেন, জনতার আসল সমস্যা আড়াল করতে নজর অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে নেমেছে বিজেপি। বিরোধী রাজনৈতিক মঞ্চের নাম ‘ইন্ডিয়া’ হওয়ায় ভয় কতটা টের পাওয়া যাচ্ছে। 

সোনিয়ার বক্তব্য, একদিকে সরকারি খরচে ‘রোজগার মেলা’ চলছে। অন্যদিকে কর্মহীনতা বাড়ছে। মারাত্মক অবস্থা ছোট ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্রের। করের বোঝায় ধুঁকছে এই ক্ষেত্র। যার প্রভাব পড়ছে কাজের বাজারে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে হিমাচল প্রদেশে অস্বাভাবিক বৃষ্টি হচ্ছে আবার মহারাষ্ট্রে খরা। অথচ কেন্দ্র ত্রাণ দেওয়ার জন্য প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘোষণা করছে না। বহু মানুষকে বাড়িঘর ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে। চীনের সীমান্ত কতটা সুরক্ষিত তা নিয়েও সংসদে সরকারের জবাবদিহি দাবি করেছেন তিনি। 

Comments :0

Login to leave a comment