Praksh Karat Press Conference

উপাসনাস্থলের চরিত্র বজায় রাখার আইন প্রয়োগ করতে হবে সুপ্রিম কোর্টকে: প্রকাশ কারাত

জাতীয়

উত্তর প্রদেশে সম্ভলে মসজিদ সমীক্ষা ঘিরেই ছড়িয়েছিল উত্তেজনা।

উপাসনাস্থল আইন দেশের পক্ষে জরুরি। তা না হলে দেশে বিভাজন, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়বে। সুপ্রিম কোর্টকে এই আইন প্রয়োগ করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। 
রবিবার কলকাতার মুজফ্‌ফর আহমদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে এই দাবি তুলেছেন সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো কোঅর্ডিনেটর প্রকাশ কারাত। 
সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির তিন দিনের বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে মিলিত হন তিনি। সঙ্গে ছিলেন পার্টি পলিট ব্যুরো সদস্য এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও। 
কারাত জানিয়েছেন তিনদিনের বৈঠকে আসন্ন পার্টি কংগ্রেসের খসড়া রাজনৈতিক প্রস্তাব চূড়ান্ত হয়েছে। ২-৬ এপ্রিল মাদুরাইয়ে হবে পার্টি কংগ্রেস। জনসাধারণের মতামত এবং আলোচনার জন্য ১ ফেব্রুয়ারি এই খসড়া প্রকাশ করা হবে। 
কারাত এদিন গুরুত্ব দিয়েছেন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সংবিধান সংশোধনের চেষ্টা, কৃষি পণ্য বিপণন নীতি কাঠামো খসড়া এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি’র বিধি সংশোধন খসড়ার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার ওপরও। 
উপাসনাস্থল আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, এই আইন অনুযায়ী ১৯৪৭’র ১৫ আগস্ট দেশে যে উপাসনাস্থলের যে চরিত্র তা বজায় রাখতে হবে। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় মসজিদ দেখিয়ে সেগুলিকে কয়েকশো বছরের পুরনো মন্দির ভেঙে তৈরি বলে দাবি করা হচ্ছে। তারপর আদালতে যাওয়া হচ্ছে। নিম্ন আদালত সমীক্ষার অনুমতিও দিচ্ছে। উপাসনাস্থল আইন অনুযায়ী এমন কোনও সমীক্ষার অনুমতি দেওয়া যায় না। এই আইনকে প্রয়োগ করতে হবে সুপ্রিম কোর্টকে। 
এই আইনের সাংবিধানিক বৈধতা পর্যালোচনার আবেদন গ্রহণ করেছে শীর্ষ আদালত। আপাতত এমন সমীক্ষায় স্থগিতাদেশ জারি করেছে। কারাত বলেছেন, কেবল স্থগিতাদেশ জারি করাই নয়। এই আইনকে প্রয়োগ করতে হবে সুপ্রিম কোর্টকে। উল্লেখ্য, বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণের অনুমতি দিলেও সুপ্রিম কোর্ট সেই রায়ে স্পষ্ট করে উপাসনাস্থল আইনকে বজায় রাখার কথা বলেছিল। রায়ের প্রায় পাঁচ পাতা জুড়ে বলা হয়েছিল যে রামমন্দির-বাবরি মসজিদ মামলা ব্যতিক্রম। কিন্তু অন্য উপাসনাস্থলের চরিত্র অপরিবর্তিত রাখতে হবে। 
তিনি বলেন, উত্তর প্রদেশের সম্ভলে এমনই উত্তেজনায় পুলিশের গুলিতে ৫জনের মৃত্যু হয়েছে। 
কারাত জানিয়েছেন ‘এক দেশ এক ভোট’ চালু করার জন্য সাংবিধানিক সংশোধন পাশ করাতে সংসদে কড়া প্রতিরোধের মুখে পড়বে কেন্দ্র। বিরোধীরা এক অবস্থানে রয়েছে। সরকারের হাতে দুই তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতায় সংবিধান সংশোধন বিল পাশ করানোর মতো সংখ্যা সরকারের হাতে নেই। 
কৃষি বিপণন খসড়া প্রসঙ্গে কারাত বলেন, উদ্দেশ্য সেই তিন কৃষি বিলের মতো। কর্পোরেটকে কৃষি বাজার থেকে সরাসরি কৃষকের থেকে ফসল কেনার অনুমতি দেওয়া। কৃষি ফসল বিপণন নীতি কাঠামো এখনও খসড়া হয়ে রয়েছে। চূড়ান্ত হলে সংসদকে পাশ কাটিয়ে তার প্রয়োগ হবে। সারা দেশে কৃষকরা এই খসড়ার বিরুদ্ধে আন্দোলনে শামিল। সিপিআই(এম) এই আন্দোলনকে সমর্থন জানাচ্ছে। তাকে শক্তিশালী করা চেষ্টা করছে।
ইউজিসি’র বিধি সংশোধন প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগে রাজ্যের সরকারের কোনও মত থাকবে না। এই বিধি চালু হলে সরাসরি কেন্দ্রের ইচ্ছেমতো উপাচার্য নিয়োগ করবেন রাজ্যপাল। কেরালা এবং তামিলনাডু সরকার এই বিধির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবে। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে।     

Comments :0

Login to leave a comment