Baduria Blast

বাদুড়িয়া বিস্ফোরণে জখম দুই কিশোর আশঙ্কামুক্ত

জেলা

বিস্ফোরণে আহত সোয়েব গাজি।

প্রবীর দাস- বাদুড়িয়া

অনেকটাই আশঙ্কামুক্ত দুই কিশোর। শনিবার হাসপাতাল সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। তবে কিশোর দুটির পরিবারের দুশ্চিন্তা এখনও যায়নি বলেও জানা গিয়েছে। পুলিশের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় মানুষ। যদিও কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন ঘটনাস্থল অর্থাৎ পরিত্যক্ত ওই ইটভাটাটিতে আগে থেকে কেউ বোমা মজুত করে রেখে যায় নি তো? সবটাই ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস পুলিশের। বাদুড়িয়া পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের ঘটনা। শুক্রবার ওই ওয়ার্ডের একটি ইটভাটায় পড়ে থাকা গোলাকার বস্তুকে বল ভেবে খেলতে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটে। যা থেকে গুরুতর জখম হয় স্থানীয় দুই কিশোর সোয়েব গাজি (১৪) ও সাজিম মণ্ডল (১২)। সোয়েবের দুটি হাত ঝলসে যায় এবং সাজিমের মুখ ঝলসে যায় বোমা বিস্ফোরণে। সোয়েব বসিরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পাশাপাশি অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সাজিমকে তড়িঘড়ি কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।সে বর্তমানে অনেকটাই বিপদমুক্ত বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবারের এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি হয় এলাকায়। শনিবার সাত সকালে পুলিশের একটি বড় অংশ ঘটনাস্থলে যায়। ইটভাটায় পড়ে থাকা পুলিশ ট্রেনিং ব্যবহৃত জিনিসপত্রের কিছু অংশ সরিয়ে ফেলে জায়গাটিকে পুরোপুরি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে ফেলা হয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
যত কান্ড এই ইটভাটায় জুনিয়র পুলিশের ট্রেনিং হওয়াকে কেন্দ্র করে।তড়িঘড়ি বসিরহাট পুলিশ জেলা গঠিত হলেও সেভাবে এখনও পরিকাঠামো গড়ে ওঠে নি। ইছামতি নদীর উত্তর পাড়ে সংগ্রামপুরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলছে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের যাবতীয় কাজকর্ম। নেই কোন পুলিশ লাইন। যেখানে ট্রেনিং দেওয়ার মতো থাকবে কোন নিজস্ব মাঠ। নেই পুলিশের নিজস্ব আবাসন(ব্যারাক)। পুলিশ সুপার বাদে অন্যান্য উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের নেই কোন নিজস্ব বাংলো। তাদের বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে হচ্ছে বসিরহাট শহরের বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায়।বসিরহাট জেলা হাসপাতালে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ইটিন্ডা রোড দখল করে পুলিশের ব্যবহৃত যানবাহন ফেলা রাখাতে বাধ্য হয় দিনের পর দিন ঘন্টার পর ঘন্টা। রাতে ওই রাস্তা দিয়ে মহিলারা যাতায়াত করে ভয়ে ভয়ে। তাছাড়া পুলিশের ফেলে রাখা গাড়ির আড়ালে সন্ধ্যা নামলেই অসামাজিক কার্যকলাপ চলে। রাস্তাটির কোল ঘেঁষে মহকুমা শাসকের বাংলো, বসিরহাট -১নং বিডিও অফিস,ইরিগেশন বাংলো, সার্কিট হাউস ইত্যাদি। এহেন পরিস্থিতিতে শুক্রবার বাদুড়িয়া পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের ওই ইটভাটাটিতে জুনিয়র পুলিশের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়।সেখানে তাদের বন্দুক ফায়ারিং,বোমা নিষ্ক্রিয় করার উপায়, কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানো ইত্যাদি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ট্রেনিং শেষে যে যার মতো চলে আসে। এরপর স্হানীয় এক কিশোর পরিত্যক্ত ওই ইটভাটায় যায়। পড়ে থাকা কাঁদানে গ্যাসের সেল না কি বোমা কুড়িয়ে নিয়ে আসে যদিও তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে প্রাথমিকভাবে পুলিশের ফেলে যাওয়া বোমা থেকেই এই বিষ্ফোরণ ঘটেছে বলে স্হানীয় মানুষের অনুমান। এবং সেই সাথে পুলিশের দায়িত্বজ্ঞানহীনতারও প্রশ্ন তারা তুলেছেন। যদিও সূত্র মারফত জানা যায় পরিত্যক্ত ইটভাটাটি স্হানীয় তৃণমূলের নেতাদের কয়েকজনের মালিকানাধীন। এবং সেখানে সন্ধ্যার পর দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চলে পরিনত হয় ভাটাটি। পরিত্যক্ত ওই ভাটায় কী দুষ্কৃতীদের মজুত করে রাখা বোমার একটি বোমা কুড়িয়ে আনতেই এই মারাত্মক দুর্ঘটনা?এমনও গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে ৮নং ওয়ার্ডের আনাচে কানাচে। 

Comments :0

Login to leave a comment