VOTER LIST

ভোটার তালিকা সংশোধন শুরু কাল, আজ দুপুরে সর্বদল বৈঠক

রাজ্য

রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ ১ নভেম্বর থেকে শুরু হবে। সেই লক্ষ্যে মঙ্গলবার সর্বদলীয় বৈঠক হবে কলকাতার রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরে। এদিন বেলা ২টোয় এই বৈঠক বসবে। ৯টি স্বীকৃত রাজনৈতিক দল অংশ নেবে বৈঠকে। উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।    
লোকসভা ভোটের আগে শেষবারের মতো রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ ১ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে। আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই কাজ চলবে। ১ নভেম্বরই খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে। এই সময়ের মধ্যে ৫টি রবিবার এবং ৬টি শনিবার পড়ছে। এই দিনগুলিতে বুথ স্তরের আধিকারিকরা (বিএলও) বুথে বুথে বসবেন, এমনটাই নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে। 
রাজ্যে ৭৫ হাজার ৫০১টি বুথ রয়েছে। কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ভোটার তালিকা সংক্রান্ত নির্দেশিকা ইতিমধ্যেই প্রতিটি স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কমিশন বিশেষ অভিযানের দিনগুলিতে যাতে বিএলও’রা বুথে বসেন তা নিশ্চিত করবে। এর বাইরে অনলাইনে https://voterportel.eci.gov.in-এর মাধ্যমেও ভোটার তালিকায় নতুন নাম তোলা এবং সংশোধ‍‌নের জন্য আবেদন করা যাবে। আগামী বছর ৫ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে বলে এর আগেই জানানো হয়েছিল কমিশনের তরফে।
রাজ্যে ভোটার তালিকায় ‘প্রি-রিভিশন’ এর কাজ হয়েছিল আগস্ট মাসে। সেই সময়ে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছিল, বিএলও’রা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মৃত ভোটার শনাক্তকরণের কাজ করবেন। সেই সময়ে বিবাহিত কোনও মহিলার নাম বা কোনও ব্যক্তির নাম দু’জায়গায় থাকলে তা ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। কিন্তু কার্যত দেখা গেছে, এ রাজ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই কাজটি হয়নি। পরে স্থানীয়ভাবে ভোটাররা খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, বিএলও’রা বুথে বসছেন শনিবার এবং রবিবার। 
কিন্তু বাস্তব চিত্র হলো রাজ্যের অধিকাংশ বুথে ওই দু’দিন তাঁদের দেখা যায়নি। কমিশনের তরফে এই কাজগুলি এতদিন করতেন শিক্ষকরা। প্রাথমিক শিক্ষকরাই বিএলও’র দায়িত্ব পালন করতেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্যে যতগুলি বুথ রয়েছে তত সংখ্যক শিক্ষক না থাকায় সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে কমিশন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে। আবার কোনও চুক্তি ভিত্তিক কর্মী বা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী দিয়েও এই কাজ করা যাবে না। সে‍‌ক্ষেত্রে এবার কমিশন রাজ্য জুড়ে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ কিভাবে সামলায়, সেটাই এখন চর্চার বিষয়।
ইতিমধ্যেই দিল্লি থেকে তিনজন উপনির্বাচন কমিশনার রাজ্যে এসে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ নিয়ে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব সহ দপ্তরের অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে গিয়েছেন। সেখানে ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। কমিশনের সিদ্ধান্ত, কোনও বুথে ভোটার সংখ্যা যদি ১৫০০ বেশি হয় সেখানে নতুন বুথ তৈরি হবে।
নিয়ম ছিল ১ জানুয়ারি ১৮ বছর পূর্ণ হলে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করা যাবে। ২০২২ সালে জুলাই মাসে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাঁদের বয়স ১৭ বছর উত্তীর্ণ হয়েছে তাঁরাও নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারীর বয়স যখন ১৮বছর হবে তখন তাঁর নতুন ভোটার কার্ড ডাকঘর মারফত বাড়িতে পৌঁছে যাবে। এরজন্য কোনও টাকা পয়সা খরচ করতে হবে না। ৬ নম্বর ফর্মে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করা যাবে। এনআরআই বা প্রবাসীরা ভোটার হওয়ার জন্য আ‍‌বেদন করতে পারবেন ৬এ ফর্মে।
অন্যদিকে ৭নম্বর ফর্মের মাধ্যমে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে আপত্তি করা যায় এবং ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার আবেদনও এই ফর্মের মাধ্যমেই করা যায়। ৮ নম্বর ফর্মটি ব্যবহার করা হয়, বাসস্থান পরিবর্তন এবং ভোটার তালিকায় তথ্য সংশোধন ইত্যাদি কাজে। ১৩তম জাতীয় ভোটার দিবসে নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানিয়েছিলেন, নতুন ব্যবস্থায় ১৭ বছরের ঊর্ধ্বে ১৭ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। এ বছর যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল সেখানে গোটা দেশে মোট ভোটারের সংখ্যা ৯৪ কোটি ৫০ লক্ষ। তার মধ্যে ১৮ থেকে ১৯ বছরের ভোটার ১ কো‍‌টি ৪৩ লক্ষ। ৮০ বছরের ঊর্ধ্বে ভোটার আছেন ২ কোটি। আর  ১০০ বছরের ঊর্ধ্বে ভোটার ৩ লক্ষ।

Comments :0

Login to leave a comment