Jadavpur University

যাদবপুর : সুস্থ ক্যাম্পাস, হস্টেল চাই, চাই দোষীদের শাস্তি

রাজ্য বিশেষ বিভাগ

সোহম দাস
(যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তর ছাত্র)

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই ২০১৯ সালে। আমাদের সময় প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে ঢোকার চল ছিল। মাঝে করোনা কালে দুই বছর বন্ধ ছিল এই চল। এই বছর ফিরল সেই রীতি, এল এক কিশোর, আমারই মতন বেশ কিছু আশা নিয়ে। কিন্তু হায় !
স্বপ্নের প্রাতিষ্ঠানিক হত্যা আমাদের সামনে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে ধরেছে। যাদবপুর কি তবে সত্যিই খুনি ? র্যা গিং কী সর্বত্র, নাকি এখানেই? 
শুরু হলো যাদবপুরের নামে কুৎসা বদনাম, প্রতিহিংসার যোগসাজশ। এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র বলে গত এক সপ্তাহে যে মানসিক নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি তা অবর্ণনীয়। যদিও কিছু ইতিবাচক মানুষ র্যা গিং নামক কুপ্রথাকে সামগ্রিক ভাবে তুলে ধরেছেন।  আমার মতে র্যা গিং একটি সমস্যা, যেখানে মনে হয় যে আমি যখন শিকার হয়েছি তখন ছোটদেরও করব। এই সমস্যা নির্মূল করতে হলে বাড়িতে পাড়াতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং সর্বত্র তার বিরোধী মনোভাব গড়ে তুলতে হবে। আমরা সুস্থ ক্যাম্পাস ও হস্টেল চাই, চাই দোষীদের শাস্তি । দুর্বলের ওপর সবলের নিপীড়নের মানসিকতাকে শাস্তি দিতে পারলে মিলবে এই সমস্যা থেকে মুক্তির পথ ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ সমস্যা রয়েছে। গেট দিয়ে অনেক অপ্রয়োজনীয় মানুষ চলাফেরা করে, যে প্রাক্তনীরা দিনের পর দিন হস্টেলে রয়ে গেছে, সে বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সরকারি আনুদানও তেমন নেই। এখন বিপুল অর্থ ঢালা হবে সিসিটিভি ক্যামেরার পিছনে । আশা করি এতে সমস্যার সমাধান হবে। রাজ্য সরকারকে আবেদন করছি যাতে আমরা ভাল ব্ল্যাকবোর্ড ডাস্টার , ইন্টারনেট পরিষেবা পাই, সেমিনারের সময় অতিথদের সমস্যায় পড়তে না হয়।
যে মিডিয়া যাদবপুরকে মদের ঠেক বলে অবিহিত করেছে তারা কি সারা বছর আমাদের সসমস্যাকে সামনে আনতে প্রস্তুত? না হাওয়া গরম করার পরিকল্পনা মাত্র? আমার মনে আছে আমার এক প্রফেসর বলেছিলেন, যাদবপুর তোমায় সব দেবে, বড় মানুষ হওয়ার সুযোগ,সমাজে প্রতিষ্ঠিত কিম্বা সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার সুযোগ। কোনটা নেবে সেটা তোমাদের নির্বাচন করতে হবে। 
যাদবপুর আমাদের কাছে এক টুকরো পৃথিবী। এখানেও ভাল মন্দ দুইই আছে। ছাত্রদের এই ভাল কে বেছে নিতে হবে। যাদবপুর বন্ধের দাবি না করে কীভাবে স্বপ্ন হত্যা সর্বত্র বন্ধ করা যায় তা ভাবতে হবে। ছাত্রদের ব্যঙ্গ না করে শিক্ষাগত সাফল্যের দিকে নজর দিতে হবে। তার সঙ্গে খেয়াল করতে হবে যাতে এই মুক্তাঙ্গন কিছু মুষ্টিমেয়দের হাতে না চলে যায়।

Comments :0

Login to leave a comment