KMC WATER LOGGING

নালা সাফাইয়ের ভাড়াটে বন্দোবস্তে প্রশ্ন তুলছে জমা জম

রাজ্য কলকাতা

KMC WATER LOGGING DRAINAGE OF KOLKATA BENGALI NEWS

মঙ্গলবার রাত ১১টার কিছু পরে প্রবল বেগে বৃষ্টি হয় কলকাতায়। সারাদিন ধরে বৃষ্টি চললেও রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টিপাতের গতি বাড়ে। এবং বৃষ্টি শুরু হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বেকবাগান, কালীঘাট, মাঝেরহাট ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা সহ কলকাতা শহরের একটা বড় অংশে জল জমতে শুরু করে। শহরের বেশ কিছু জায়গা তুলনামূলক উঁচু হওয়াতে জল জমার হাত থেকে সাধারণত রেহাই পায়। কিন্তু সেই জায়গাগুলোতেও বুধবার জল জমেছে। 

তারফলে উত্তর কলকাতার কাশীপুর, রতনবাবুর ঘাট, প্রমথনাথ চৌধুরী লেন থেকে শুরু করে মধ্য কলকাতার বেনিয়াপুকুর হয়ে দক্ষিণ কলকাতার বেহালা পূর্ব এবং পশ্চিম, যাদবপুর ও টালিগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায় জল জমেছে। 

কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে খবর, বুধবার রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত মানিকতলা এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে ৪৩ মি.মি। দত্তবাগানে বৃষ্টির পরিমাণ ৪১ মি.মি। অপরদিকে বেহালায় বৃষ্টি হয়েছে ৯০.৮ মি.মি, জোকায় হয়েছে ৭৬ মি.মি, বালিগঞ্জে ৮৭ মি.মি, গড়িয়ায় ৯১ মি.মি এবং উত্তর কলকাতার ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে ৪৬ মি.মি। 

কর্পোরেশনের নিকাশি বিভাগের আধিকারিকদের একটা অংশের দাবি, শহরের নিকাশি নালাগুলি প্রতি সেকেন্ডে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ জল বহন করতে পারে। তারথেকে বেশি জল জমলে কিছুটা সময় লাগে জমা জল সাফ করতে। 

যদিও সেক্ষেত্রে প্রশ্ন, বৃষ্টি থামার কয়েক ঘন্টা পরেও জল নামছে না কেন কলকাতায়?

কলকাতা কর্পোরেশনের ইঞ্জিনিয়ারদের একটা অংশের অভিযোগ, জল ভোগান্তির জন্য দায়ী তৃণমূল বোর্ডের স্বজন পোষণ এবং সময়ের মধ্যে নিকাশি প্রকল্প শেষ করতে না পারার ব্যর্থতা। 

তাঁদের অভিযোগ, কলকাতা কর্পোরেশনের নিকাশি বিভাগ ম্যানহোলের পাঁক পরিষ্কার করার জন্য যন্ত্রচালিত গাড়ি বেছে নিয়েছে। সেই গাড়িগুলি সরবরাহের বরাত পেয়েছে নিকাশি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ তারক সিংয়ের পরিবারের সদস্যরা। ইঞ্জিনিয়ারদের অভিযোগ, বেশিরভাগ জায়গায় কাজ করছে না এই গাড়িগুলি। সারাদিন ১০ লিটার তেল পুড়িয়ে ৩টি ম্যানহোলও পরিষ্কার করা হচ্ছেনা।  কিন্তু খাতায় কলমে বড় অঙ্কের খরচ পাশ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে কর্পোরেশন থেকে। কোটি কোটি টাকা খরচ হলেও ড্রেনগুলি পরিষ্কার হচ্ছেনা। তারফলেই জমা জল নামতে অত্যধিক সময় লাগছে। 

এর পাশাপাশি কলকাতা এনভায়রনমেন্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট বা কেইআইপি প্রকল্পের অন্তর্গত নিকাশির কাজ শেষ না হওয়াকেও জল জমার জন্য দায়ী করছেন নিকাশি বিভাগের আধিকারিকদের একাংশ। কেইআইপি’র দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ চলছে কর্পোরেশনের ১১১,১১২,১১৩ এবং ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডে, এবং বেহালা পূর্ব ও পশ্চিমের একটা বড় অংশে। ২০২০ সালের মধ্যে এই কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও কাজ শেষ হয়নি। তারফলে একদিকে খানাখন্দের জন্য সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়ছেন, অপরদিকে নিকাশি সমস্যা সমাধান না হওয়ায় জমা জলের সমস্যারও সমাধান হয়নি। 

এর পাশাপাশি আদিগঙ্গার মতো নিকাশি খালগুলির সংষ্কার না হওয়ায় জল জমার অন্যতম কারণ বলে আধিকারিক এবং ইঞ্জিনিয়াররা জানাচ্ছেন। কেইআইপি’র কাজের অজুহাতে পূর্ব বেহালার চড়িয়াল খাল ভরাট করেছে কর্পোরেশন। তার জায়গায় বসানো হয়েছে নামমাত্র ব্যাসার্ধের নিকাশি পাইপ। তারফল কি হতে পারে, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন ওই অঞ্চলের মানুষ। 

Comments :0

Login to leave a comment