Kumbh Stampede

কুম্ভস্নানে মৃত রাজ্যের দুই বৃদ্ধা, নিখোঁজ আরও দু’জন

রাজ্য জেলা

‘শাহী স্নান’-র হুড়োহুড়িতে প্রাণ গেল কলকাতা ও শালবনির দুই বৃদ্ধার। নিখোঁজ আরও দুই জন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে অনেকেই গিয়ে ছিলেন তাদের মধ্যে দুই জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আরও দুই জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
উত্তর প্রদেশে সরকারের হিসাব অনুযায়ী ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে কুম্ভে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায়। জখম ৯০ জনেরও বেশি। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের দুই বাসিন্দাও। বুধবার ভোররাতে ‘শাহী স্নান’-এর হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে কলকাতা এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির এই দুই বাসিন্দার। 
কলকাতার বাসিন্দা বাসন্তী পোদ্দারের ডেথ সার্টিফিকেটই দেয়নি উত্তর প্রদেশ সরকার। এমনটাই অভিযোগ করেছেন মৃতার পরিবার। তাদের আরও অভিযোগ দেহ হস্তান্তরেরও কোন নথিও তাদের দেওয়া হয়নি। উত্তর প্রদেশ সরকার যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা  ঘোষণা করেছে সেই টাকা পাওয়া যাবে কিনা তাই নিয়ে সংশয় রয়েছে পরিবারের। 
পরিবার জানিয়েছে, বুধবার আচমকা হুড়োহুড়িতে বাসন্তী পোদ্দার ভিড়ের মধ্যে মাটিতে পড়ে যান। তারপরে আর উঠতে পারেননি। কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। হাসপাতালেও নেওয়া যায়নি ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁরা। দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি এসেছিল। 
মৃতদের তালিকায় নাম রয়েছে ৭৮ বছরের উর্মিলা ভুঁইঞারও। শালবনীর এই বৃদ্ধা পরিবারের সঙ্গে স্নান করতে যান প্রয়াগরাজ বা এলাহাবাদে। প্রবল ভিড়ের চাপে আলাদা হয়ে যান তিনি। আত্মীয়দের একজন আহত হয়ে ছিলেন স্থানীয় হাসপাতালে। সেখানেই উর্মিলা ভুঁইঞার দেহ চিনতে পারেন তিনি। মর্মান্তিক এই ঘটনায় মৃত উর্মিলা ভুঁইঞার দেহ ফিরিয়ে আনা হচ্ছে খড়্গপুরে। 
নিখোঁজের তালিকায়ও রয়েছে রাজ্যের আরও দুই বাসিন্দার নাম। কাঁথি ছোটবাঁধ তলিয়ার জুনপুট কোস্টাল থানার বাসিন্দা প্রণব কুমার জানা (৭৫) নিখোঁজ রয়েছেন। উৎকন্ঠায় রয়েছেন পরিবারের মানুষজন। নিখোঁজ রয়েছেন মালদার বাসিন্দা এক প্রৌঢ়া। নিখোঁজ প্রৌঢ়ার নাম অনিতা ঘোষ (৬০)। মালদার উত্তর কৃষ্ণপল্লি ভাঙাপাড়া এলাকার বাসিন্দা তিনি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার তিনি আত্মীয়দের সঙ্গে কুম্ভমেলার উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে তাঁরা পৌঁছান মঙ্গলবার রাতে। হুড়োহুড়িতে দলের বাকিদের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। দলের অনান্যদের খোঁজ পাওয়া গেলেও অনিতা ঘোষের খোঁজ পাওয়া যায়নি। 
এমন ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই নিরাপত্তা ব্যবস্থার গাফিলতি, সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় গুরুতর ত্রুটির অভিযোগই উঠে আসছে। বুধবার সন্ধ্যায় উত্তর প্রদেশের আদিত্যনাথ সরকার ৩০ জনের মৃত্যুর খবর জানায়। আহতের কোনো সংখ্যা নির্দিষ্ট করে জানায়নি। তবে মতিলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ওইদিন বিকেল পর্যন্ত অন্তত ৪০টি দেহ ছিল। তখনও নিয়ে আসা হচ্ছিল, ময়নাতদন্তের পরে দেহ বের করেও নিয়ে যাওয়া চলছিল। একইভাবে কতজন আহত বা চিকিৎসা চলছে সেটাও জানানো হয় নি। স্বরূপরাণী হাসপাতালের ট্রমা বিভাগের খাতায় বেলা সওয়া দুটো পর্যন্ত ৩৯৬ জনকে ভর্তির হিসেব ছিল। সকলেই পদপিষ্টের ঘটনায় জখম। একটি হাসপাতালেই চারশো জন ভর্তি। তারপরে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স ঢুকেছে বিকেল পর্যন্ত। মেলা প্রাঙ্গনেও কেন্দ্রীয় একটি হাসপাতাল হয়েছে। সেখা‍‌নেও হতাহতরা রয়োছেন। অন্যান্য হাসপাতালেও অনেকে ভর্তি। সব মিলিয়ে প্রকৃত সংখ্যা বোঝার কোনো উপায় নেই। কারণ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সংখ্যা জানানোই হয়নি।

Comments :0

Login to leave a comment