Baduria's Canal

খাল সংস্কার না হওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকরা

রাজ্য জেলা

সংস্কারের অভাবে বেহাল সন্যাখাল।

দীর্ঘ ১৩ বছর খালগুলির সংস্কার হয়নি। ১০০ দিনের প্রকল্পে খাল সংস্কারের কথা ছিল। হয় নি। বর্ষা দোর গোড়ায়। ফের ফসল ডোবার আশঙ্কায় কৃষক সমাজ। বেহাল খালগুলির হাল ফেরানোর দাবি তুললেন ১৪ টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত বাদুড়িয়া ব্লকের মানুষ। যাদের অধিকাংশই কৃষিজীবি। খাল সংস্কার না হওয়ায় কারণে বছরের পর বছর ক্ষতি হচ্ছে চাষবাসের। বললেন কৃষক নেতা হায়দার আলি। চাষবাসের ক্ষতির কারণে খেতমজুররা তেমন কাজ পায় না। বললেন খেতমজুর ইউনিয়নের নেতা মানিক বিশ্বাস।
বাদুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সদস্য শঙ্কর ঘোষ জানান, ১৪ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মাসকাটা,ভড়ভড়িয়া, তরফদার খাল, আটঘরা, সন্যাখাল, বাজিতপুর খাল এরকম অসংখ্য খাল যা ইছামতি নদীতে পড়েছে এবং তা এখন আবর্জনায় পরিপূর্ণ। ২০১১ সালের পর থেকে কোনো সংস্কার হয় না। তাঁর অভিযোগ, ১০০ দিনের কাজে কোন কোন খাল সংস্কার খাতায় কলমে দেখানো হলেও এক কোঁদাল মাটি কাটা হয় নি। অথচ টাকা উঠে গেছে। আর সেই টাকা শাসকদলের পকেটে ঢুকেছে। বাদুড়িয়ার মানুষ জানে সে কথা। ভুগতে হচ্ছে কৃষকদের। তিনি একথাও বলেন, এই ব্লকের ঘোড়াগাছা হইতে সন্যাখাল এবং বাগজোলা অঞ্চলের কীর্তিপুর থেকে আটঘরাখাল প্রথমে বুরুজ গ্রামের কাছে সন্যাখালে এসে মেশে। পরে ওই খাল যশাইকাটি গ্রামে মাসকাটা খালে মিলিত হয়ে বাদুড়িয়ার কোল ঘেঁষে বয়ে যাওয়া ইছামতি নদীতে গিয়ে পড়ে। মাসকাটা খাল এক সময়ে স্রোতস্বিনী ছিল। জোয়ার ভাটা খেলতো। সন্যাখালের ধার বরাবর তৎকালীন সময়ে এলাকার সর্ববৃহৎ গঞ্জ ছিল বুরুজ হাট। যার ডাক নাম ছিল দেলতলা হাট। ওই খালকে কেন্দ্র করে এই গঞ্জ গড়ে ওঠে। সুন্দরবনের হোগলা, গোলপাতা বড় বড় নৌকা করে হাটে আসত। আবার এখানকার সবজি জলপথে সুন্দরবন এলাকায় যেত। বামফ্রন্ট সরকারের সময় সরকারি স্কীমে দীর্ঘ ১২-১৪ কিলোমিটার বিস্তৃত এই খাল সংস্কার হতো নিয়মিত। যার ফলে ঘোড়াগাছা, শিবপুর, বেনা,হুগলি সহ বহু গ্রামে ফসল উৎপাদন করে চাষীরা লাভবান হতেন। ২০১১ সালের পর এই খাল দীর্ঘ তের বছর সংস্কারের অভাবে আবর্জনায় ভর্তি হয়েছে। বর্ষার জল বহন করে নিয়ে যেতে পারে না। যার কারণে গ্রামের পর গ্রাম অতি বর্ষায় প্লাবিত হয়। গ্রামগুলি জলে ডুবে যায় এবং কৃষকদের ফসল নষ্ট হয়ে যায়। সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে কৃষকরা। ধীরে ধীরে চাষবাসে অনীহা দেখা যায় কৃষকদের মধ্যে। যাদের অধিকাংশই এখন চাষবাস ছেড়ে পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে ভিন রাজ্যে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। 

Comments :0

Login to leave a comment