Editorial

ভয়ানক চা‍পে আছে মোদী-শাহরা

উত্তর সম্পাদকীয়​

পহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছিলেন সৌদি আরবে। খবর পেয়ে বিদেশ সফর বন্ধ করে সাত তাড়াতাড়ি ফিরে আসেন দেশে। মন্ত্রীসভার জরুরি বৈঠক এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত সর্বচ্চ স্তরের বৈঠক সেরে দিল্লি ছেড়ে সোজা চলে যান ভোটমুখী বিহারের জনসভায় ভাষণ দিতে। ভোটের কথা মাথায় রেখে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সুর চরিয়েছিলেন চরমে। বলেছেন হামলায় জড়িতরা বিশ্বের যে কোনও জায়গায় লুকিয়ে থাকুক না কেন খুঁজে বার করে উচিত সাজা দেওয়া হবে। একদিকে পাক বিরোধী হুঙ্কার ছেড়ে উগ্র জাতীয়তাবাদী আবেগে হাওয়া দিলেন। অন্য দিকে ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ বিষ ছড়িয়ে ঘ্রীণার তীব্র আঁচে বিভাজনকে তীক্ষ্ণ করলেন ভোটে ফয়দা লোটার জন্য।
এবার খোদ রাজধানীর বুকে হাই সিকিউরিটি জোনে তীব্র বিস্ফোরণের ঘটনার পর সরকার বা দল উভয় তরফে যে কেমন নিস্তরঙ্গ। বিস্ফোরণের ২৪ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরও সরকারি তরফে সন্ত্রাসবাদী প্রসঙ্গ উচ্চারিত হলো না। তেমনি বিস্ফোরণের ঘটনা জেনেও মোদী দিল্লিতে থাকলেন না। চলে গেলেন ভুটান সফরে। সেখান থেকে দায়সাড়া বিবৃতি দিয়ে বলেছেন বিস্ফোরণের পিছনে যারা তাদের ছাড়া হবে না। ভুটান সফর সেড়ে দিল্লি এসে মন্ত্রীসভার বৈঠক করে অনেক হিসাব নিকেশের পর সরকারিভাবে বিস্ফোরণের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের যোগ আছে ব‍‌লে প্রথমে উল্লেখ করা হয়। সেটা অত্যন্ত সমর্কতার সঙ্গে। পাকিস্তানকে পরক্ষে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর চেষ্টা হয়নি। আবার সন্ত্রাসবাদী সন্দেহ যাদের গ্রেপ্তার  করা হয়েছে তাদের তালিবান যোগের সূত্র মিলল যথারীতি নিরব থেকেছেন মোদী সরকার।
এই মুহূর্তে মোদী সরকার যে বেজায় চাপে আছে তাতে সন্দেহ নেই। তাই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার এবং পা‍‌কিস্তানকে চেপে ধরার এতবড় একটা ইসু পেয়েও মোদীদের নীরব থাকতে হচ্ছে। আসলে পহেলগাম হামলার পর পাক বিরোধী আগ্রাসী নীতিতে এাবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক আগ্রাসনের সায় দেয়নি মোদী বন্ধু ট্রাম্প। তাই ট্রাম্পের ভাষ্য অনুযায়ী বাণিজ্য বন্ধের ভয় দেখিয়ে মোদী বাধ্য হয়েছেন যুদ্ধ বন্ধ করতে। তারপর নাগারে মোদীকে নানাভাবে অপদস্ত করে গেলেও পাক প্রধানমন্ত্রী এবং পাক সেনা প্রধানের প্রসংসায় পঞ্চমুখ। পহেলগামকে সামনে রেখে পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে করার সবরকম প্রয়াস চালিয়ে সফল হতে পারেনি মোদীরা। উলটে দেখা গেছে ভারতই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছে। তুরস্কের সাহায্য পে‍য়েছে পাকিস্তান। সৌদি আরব পাকিস্তানের সঙ্গে এমন সামরিক চুক্তি করেছে যাতে যে কোনও একটি দেশ আক্রান্ত হলে ধরে নেওয়া হবে দুদেশই আক্রান্ত। চারদিক থেকে কোণঠাসা অবস্থায় মেদী ভাবছেন আমেরিকাকে কোনও মতেই হাতছাড়া করা যাবে না। তাই গালমন্দ-অপমান-সহ্য করেও আমেরিকার বদান্যতা পেতে প্রবলভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে মোদীরা। শেষ পর্যন্ত আমেরিকা যদি দূরে সরিয়ে দেয় বিশ্ব মঞ্চে পা রাখার জায়গা পাওয়াও কঠিন হয়ে যেতে পারে।

Comments :0

Login to leave a comment