Pandua Blast

পান্ডুয়ার বোমা বিস্ফোরণ কাণ্ড, জখম কিশোরের মা-কে গ্রেপ্তার

জেলা

পান্ডুয়া বোম বিস্ফোরণ কান্ডে ধৃত রীতা মন্ডলকে আদালতে তোলা হচ্ছে। ছবি অভিক ঘোষ।

নিজের সন্তানকে কোন মা মারতে চায়! আদালতে যাওয়ার পথে কেঁদে কেঁদে বললেন পান্ডুয়া বোম বিস্ফোরণ কান্ডে ধৃত রীতা মন্ডল। গত সোমবার সাত সকালে পান্ডুয়ার তিন্না নেতাজী পল্লি খাদের পারে বোমা ফেটে মৃত্যু হয় রাজ বিশ্বাস নামে বছর বারোর এক কিশোরের। গুরুতর জখম হয় রূপম বল্লভ(১২) ও সৌরভ চৌধুরী(১১)। রাজের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের মেমারী পাল্লা রোডে। সে স্কুলের ছুটিতে মামার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। তিনজন মিলে খাদের পারে খেলছিল। বোমাকে বল ভেবে খেলতে গিয়ে তা ফেটে যায়। বিস্ফোরনের তীব্রতায় এক কিশোদের হাত উড়ে যায়। পেট পায়ে বোমার স্প্লিন্টার ঢুকে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এক কিশোরের। বাকি দুজন পান্ডুয়া হাসপাতাল হয়ে বর্তামানে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় রাজনৈতিক অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে সরগরম হয় পান্ডুয়া। ভোটের আগে কে কি উদ্দেশ্যে আপাত শান্ত ওই এলাকায় বোমা রাখল তা নিয়ে শুরু হয় জল্পনা।
যখন পান্ডুয়ায় বিক্ষোভ চলছে দোষীদের ধরার দাবিতে। ঠিক তখনই হুগলি গ্রামীন পুলিশ জানিয়ে দেয় বোমা ফেটে আহত রূপম বল্লভের মা রীতা এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে। রীতার প্রাক্তন স্বামী সুকদেব বল্লভ অভিযোগ করেছেন তার ছেলেকে মেরে ফেলতেই বোমা রাখা হয়েছিল।
সুকদেবের সঙ্গে তার স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। মাস পাঁচেক আগে এলাকারই দেবা সরকার নামে এক যুবককে বিবাহ করেন রীতা। তারা দুজনে বিহারে থাকেন। সেখানে রীতার স্বামী হাতুরে চিকিৎসকের কাজ করেন। রীতা বিয়ের পর দু একবার পান্ডুয়া আসেন। তাকে ট্রেনে তুলে দেন তার স্বামী। দিন তিনেক আগে দাঁতের চিকিৎসার জন্য আবারও গ্রামের বাড়িতে আসেন। প্রাক্তন স্বামীর বাড়িতে না গেলেও নিজের সন্তানকে ডেকে কথা বলতেন বলে জানিয়েছে তার প্রতিবেশীরা। স্বামীর ঘর ছেড়ে নতুন সংসার পাতলেও ছেলের প্রতি টান ছিল তার।
সেই ছেলেকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল চুঁচুড়া হাসপাতালে ছেলেকে দেখতে এলে তাকে আটক করা হয়। পরে গ্রেফতার করে মগড়া থানায় রাখা হয়। মঙ্গলবার আদালতে পেশ করার সময় রীতা কেঁদে ফেলেন। তিনি দাবী করেন, তিনি বোম রাখেননি। তিনি কোনো অন্যায় করেননি তাকে ফাঁসিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোক। নিজের ছেলেকে কেউ মারার চেষ্টা করতে পারেন না বলেও জানান তিনি।
রীতার প্রাক্তন শ্বাশুড়ি সুকদেবের মা উষা বল্লভ বলেন, বৌমা আট বছর আমাদের বাড়ি থাকেনা। ও বাপের বাড়ি থাকে। ও কেন ছেলেকে খুন করতে যাবে। নাতির হাত উড়ে গেছে দেখে ছেলের মাথার ঠিক নেই তাই অভিযোগ করেছে। বৌমা এতে জরিত নেই।
কলোনীর বাসিন্দারাও মনে করছেন ওই রকম মারাত্মক বোমা রাখা সাধারণ মানুষের কাজ না। পারিবারিক গন্ডোগোল না এর পিছনে অন্য কারন আছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত থাকতে পারে। দুজনের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ হয়েছে। একজন গ্রেফতার হয়েছে। অপর জনের খোঁজ চলছে। বোমা কে রাখল, উদ্দেশ্য কি ছিল সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Comments :0

Login to leave a comment