IRAN RUSSIA ENERGY TRADE

নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে বিকল্প পথে বাণিজ্য চালাচ্ছে রাশিয়া-ইরান

আন্তর্জাতিক

IRAN RUSSIA INDIA TRANSPORT CORRIDOR BENGALI NEWS এই রেলপথ ব্যবহার করেই ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য চালাচ্ছে রাশিয়া। ছবিঃ সংগৃহীত

রুশ-ইউক্রেন সংঘাত ঘিরে রাশিয়ার উপর একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে ন্যাটো সহ পশ্চিমী দেশগুলির জোট। তারফলে খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি করার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েছে রাশিয়া। অপরদিকে নিজেদের পরমাণু প্রকল্পের জন্য দুই দশকের বেশি সময় ধরে পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞার মুখে ইরান। বর্তমান পরিস্থিতি এক জায়গায় নিয়ে এসেছে দুই দেশকে। পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞার বেড়াজাল টপকে বাণিজ্য চালাতে তাই সমুদ্রের বদলে রেল পথকে বেছে নিল দুই দেশ।

মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের তরফে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, রেলপথে ইরানে খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ  শুরু করেছে রাশিয়া। রয়েটার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এপ্রিলের গোড়ার দিকে রাশিয়া থেকে প্রথম খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস ভর্তি পণ্যবাহী ট্রেন ইরানে প্রবেশ করেছে। আন্তর্জাতিক জলপথ এড়িয়ে নিজেদের ভূখন্ডের রেলপথ ব্যবহার করে বাণিজ্য চালালে পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞা এড়াতে পারবে রাশিয়া এবং ইরান। এক্ষেত্রে ঠিক সেটাই করা হয়েছে। 

২০২২ সালের অক্টোবর মাসে ইরানের সঙ্গে ৪০ বিলিয়ান মার্কিন ডলার মূল্যের একটি চুক্তি করে রাশিয়া। চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া প্রতি বছর বিপুল পরিমাণে খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস ইরানকে বিক্রি করবে। চুক্তি হয়ে গেলেও, কোন পথ দিয়ে এই বাণিজ্য চলবে তা স্পষ্ট ছিল না এতদিন। কিন্তু এপ্রিল মাসে এসে স্পষ্ট হয়েছে সেই বিষয়টিও।

রয়েটার্স জানাচ্ছে, রাশিয়া থেকে তেল ভর্তি ট্রেন কাজাখস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান হয়ে ইরানে প্রবেশ করেছে। একইসঙ্গে রাশিয়ার তরফে ক্যাসপিয়ান সমুদ্র ব্যবহার করেও ইরানে তেল রপ্তানির বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চালানো হচ্ছে। দুটি ক্ষেত্রেই পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞা এড়ানো সম্ভব। 

প্রসঙ্গত, ইরানে প্রাকৃতিক তেল এবং গ্যাসের বিপুল ভান্ডার রয়েছে। কিন্তু সেদেশে বাড়তে থাকা জ্বালানীর চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তলন করতে পারছে না ইরান। তাই বাইরে থেকে খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস কিনতে হচ্ছে তেহরানকে। 

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞারা জানাচ্ছেন, সোভিয়েত রাশিয়ার সময়কালে ‘ইন্টারন্যাশনাল নর্থ সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডর’ গড়ে উঠেছিল। ৭২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ  এই পথ ব্যবহার করে ভারত, ইরান, আজারবাইজান, মধ্য এশিয়া, রাশিয়া হয়ে ইউরোপে পণ্য পৌঁছে দেওয়া সম্ভব ছিল। মূলত ভূমধ্যসাগর এবং অ্যাটলান্টিক মহাসাগরে মোতায়েন পশ্চিমী নৌবহর এড়িয়ে পণ্য পরিবহন সচল রাখতেই এই বিকল্প পথ তৈরি করেছিলেন সোভিয়েত নেতৃত্ব। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত পতনের পরে সেই পথের গুরুত্ব কমে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ফের একবার এই করিডর সচল করার উদ্যোগ নিয়েছে মস্কো। 

Comments :0

Login to leave a comment