রবিবার ইয়েমেনের রাজধানী সানা শহরে পৌঁছেছেন সৌদি কূটনীতিকদের একটি দল। ইয়েমেনে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত মহম্মদ বিন সাইদ আল-জাবেরের নেতৃত্বে এই দল হাউথি বিদ্রোহীদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা বলবেন। হাউথি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছন হাউথি সুপ্রিম পলিটিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি মাহাদি আল-মাশাত।
হাউথি সমর্থিত সংবাদমাধ্যম সাবা নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদন অনুযায়ী, রবিবারই ওমানের একটি কূটনৈতিক দল সানা শহরে এসে পৌঁছবে। তারপর ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী সমাধান সূত্র বের করার চেষ্টা চলবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বৈঠকে চীন এবং ইরানের প্রতিনিধিরা যোগ না দিলেও সানা বৈঠকের আগেই তাঁদের তরফে সৌদি আরব এবং ওমানের সঙ্গে বার্তা চালা-চালি হয়ে গিয়েছে। বস্তুত ইরানের সবুজ সঙ্কেত না মিললে সৌদি আরবের সঙ্গে বৈঠকে বসতেনই না হাউথি বিদ্রোহীরা।
২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ চলছে। যুদ্ধের প্রাথমিক পর্বেই রাজধানী সানা সহ দেশের উত্তরাংশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখলে নেন হাউথি বিদ্রোহীরা। ইয়েমেনের সরকার দেশ থেকে পালিয়ে সৌদি আরবে আশ্রয় নেয়। সেই সরকারের পাশে দাঁড়াতে সামরিক অভিযানে নামে সৌদি আরব। অপরদিকে প্রথম থেকেই হাউথি বিদ্রোহীদের সমস্ত রকম সাহায্য করে আসছিল ইরান। ফলতঃ ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধ আঞ্চলিক ছায়া-যুদ্ধে পরিণত হয়।
সাম্প্রতিক কাল অবধি সৌদি আরব মূলত মার্কিন জোটের শরিক ছিল। নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ঠান্ডা-যুদ্ধের সময় থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা বজায় রাখার পক্ষপাতী আমেরিকা। বর্তমানে ইরানের বিরুদ্ধেও প্ররোচনা সৃষ্টি করে চলেছে মার্কিন প্রশাসন। ফলতঃ সৌদি ইরান উত্তেজনা প্রশমিত করে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার চেষ্টা করেনি আমেরিকা।
অপরদিকে এশিয়া এবং আফ্রিকা জুড়ে আঞ্চলিক সংঘাত কমিয়ে এনে বাণিজ্যিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক মজবুত করার নীতি নিয়ে এগোচ্ছে চীন। সৌদি আরবের রাজ পরিবার উপলব্ধি করেছেন, চীনের সঙ্গে সু-সম্পর্ক বজায় রাখলে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হবে সৌদি আরব। সেই সূত্রেই বেজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত হতে শুরু করেছে রিয়াধের।
সেই সমস্ত বিষয়ের যোগফলেই আরব উপদ্বীপে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রক্রিয়া গতি পেয়েছে।
২০২২ সালে সৌদি আরব এবং হউথিরা ছয় মাসের একটি শান্তি চুক্তি করেছিল। অক্টোবর মাসে সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। এবার পাকাপাকি ভাবে শান্তি ফেরানোর বিষয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
Comments :0