GUJRAT POLICE LYNCHING

লাঠিপেটা করা হয়েছিল মুসলমানদের, গুজরাট পুলিশকে ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের

জাতীয়

gujrat kheda supreme court police atrocity communal violence bengali news

‘‘আপনাদের আইনী অধিকার রয়েছে মানুষকে পোস্টে বেধে লাঠি দিয়ে পেটানোর?’’

মঙ্গলবার গুজরাটের খেদা জেলার ৪ পুলিশকর্মীকে এমন ভাষাতেই ভর্ৎসনা করলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিআর গাভাই। 

২০২২ সালে গুজরাটে গরবা উৎসবে পাথর ছোঁড়ার অভিযোগ উঠেছিল ৪ মুসলমান যুবকের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগে তাঁদের  জনসমক্ষে ল্যাম্প  পোস্টে বেধে পেটানোর অভিযোগ উঠেছিল গুজরাটের খেদা জেলার উনঢেলা থানার পুলিশের বিরুদ্ধে। পরবর্তীকালে ওই পাঁচ যুবক গুজরাট হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে ১৩জন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করে। 

পরবর্তীকালে মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের তদন্তে উঠে আসে, ঘটনায় জড়িত ছিলেন ৪ পুলিশকর্মী। তারা হল ইন্সপেক্টর এভি পারমার, সাব ইন্সপেক্টর ডিবি কুমাভাত, হেড কন্সটেবল এলকে দাভি এবং কন্সটেবল রাজুভাই দাভি। 

হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ ওই ৪ পুলিশকর্মীকে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেয়। যদিও ডিভিশন বেঞ্চ সেই রায় ৩ মাসের জন্য স্থগিত রাখে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টও সেই রায় স্থগিত রাখলেও অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের তীব্র ভর্ৎসনা করে। 

পুলিশি অত্যাচারের বিরুদ্ধে ২০২২ সালে আদালতে মামলা করেছিলেন জনৈক জাহির মিঁয়া মালেক। তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডিকে বসু বনাম পশ্চিমবঙ্গ সরকার মামলার উদাহরণ টেনে বলেন, ডিকে বসু পুলিশকে স্পষ্ট নির্দেশিকা তৈরি করে দিয়েছিলেন, কীভাবে অভিযুক্তের সঙ্গে আচরণ করতে হবে, কীভাবে জেরা করতে হবে ইত্যাদি। খেদা পুলিশ সেই নির্দেশিকা মানেনি, যা আদালত অবমাননার সামিল। 

এই মামলা মঙ্গলবার সুপ্রিমকোর্টে বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহেতার এজলাসে ওঠে।  

আদালতে অভিযুক্তদের আইনজীবী সিদ্ধার্থ দাভে জানান, তাঁর মক্কেলরা ডিকে বসুর নির্দেশ জানত না। না জেনেই তাঁরা মারধর করে ফেলেছে। এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বিভাগীয় শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার দায়ে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হোক। 

সুপ্রিম কোর্ট সেই দাবি মেনে নিলেও, আদালত বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছে, ‘‘ডিকে বসুর নির্দেশ প্রতিটি আইনের ছাত্রের মুখস্ত থাকার কথা। ভাবতেও অবাক লাগছে, পুলিশকর্মীরা সেই নির্দেশ সম্পর্কে অবগত নয়। এই যুক্তিতে তাদের রেহাই দেওয়া সম্ভব কিনা, তা ভেবে দেখার বিষয়।’’

অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে আর কোনও মামলা চলছে কিনা সেটাও জানতে চান বিচারপতি গাভাই। জাহির মিঁয়া মালেকের আইনজীবী আইএইচ সৈয়দ জানান, পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত স্তরেও মারধরের মামলা করেছেন নির্যাতিতরা। সেই মামলার শুনানি বাকি রয়েছে। এই বক্তব্য শুনে সন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি গাভাই। 

Comments :0

Login to leave a comment