TRIBAL MOVEMENT

আদিবাসী আন্দোলনে স্তব্ধ উত্তরবঙ্গের রেল সংযোগ

রাজ্য জেলা

tribal movement rail blockade west bengal kurmi uttar dinajpur bengali news আদিবাসী সংগঠনগুলির রেল অবরোধ। ছবি প্রতিকী।

কুর্মি সম্প্রদায়কে এসটি তালিকাভুক্ত করার বিরোধীতা করে বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুরে রেল অবরোধে সামিল হলেন আদিবাসীরা। জানা গিয়েছে, আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান নামের একটি সংগঠনের ডাকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলা রেলগেট অবরোধ করা হয়েছে। 

সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের মধ্যে সারনা ধর্ম কোড দেওয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান ভারত বন্‌ধের ডাক দিয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কুর্মি মাহাতদের এসটি তালিকাভুক্ত করার বিরোধীতাও। 

এই আন্দোলনের অঙ্গ হিসেবে ডালখোলায় রেল অবরোধ করা হয়েছে। রেল সূত্রে খবর,  অবরোধের জেরে ডালখোলা স্টেশনে দার্জিলিং মেল, বারসই স্টেশনে পদাতিক এক্সপ্রেস, তেলতা স্টেশনে ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, সূর্যকমল স্টেশনে শতাব্দী এক্সপ্রেস ও অওয়ধ অসম এক্সপ্রেসের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়েছে। 

ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, বিভাজনের রাজনীতিকে সুকৌশলে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আদিবাসী এবং কুর্মি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত বাঁধানোর চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূল এবং বিজেপি। একদিকে কুর্মিদের উষ্কানি দেওয়া হচ্ছে এসটি সংরক্ষণের দাবিতে সরব হওয়ার জন্য, অপরদিকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষকে ক্ষেপিয়ে তোলা হচ্ছে এই দাবির বিরোধীতার জন্য। সব মিলিয়ে রাজ্যের বেশ কিছু অঞ্চলে এই দাবি এবং পাল্টা দাবিকে ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। 

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই সঙ্কটের মূলে রয়েছে রাজ্যের কৃষি ক্ষেত্রের সঙ্কোচন এবং কর্মসংস্থানের অভাব। কুর্মি সম্প্রদায়ের মানুষ ভাবছেন, আদিবাসী তালিকাভুক্ত হতে পারলেই কাজের অভাব দূর হবে, সরকারি চাকরি পেতে সুবিধা হবে। একইসঙ্গে আদিবাসী অংশের মানুষ আশঙ্কায় ভুগছেন, তাঁরা যতটুকু কাজের সুযোগ পাচ্ছেন, কুর্মিরা সংরক্ষণের আওতায় এলে সেটুকুও থাকবে না। এই আশা এবং আশঙ্কা থেকেই সমস্যার সূত্রপাত। 

যদিও রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যে কাজের পরিধি বৃদ্ধি হলে এই সমস্যাই থাকার কথা নয়। রাজ্য সরকার যদি কর্মসংস্থানের ঢালাও সুযোগ করে দিতে পারে, তাহলে সংরক্ষণ নিয়ে সমাজ উত্তাল হবেনা। কিন্তু তৃণমূল সরকার এবং বিজেপি সরকার, উভয়ের সময়কালেই কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং পরিধি কমেছে। সরকারি চাকরিও ক্ষেত্রও সঙ্কুচিত হয়েছে। একইসঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে তৃণমূলের দুর্নীতির ফলে গ্রামীণ কর্মসংস্থানও কমেছে। ফলে পশ্চিমবঙ্গের গ্রামের যুব সমাজের সামনে পরিযায়ী শ্রমিক হওয়া ছাড়া কোনও বিকল্প নেই। এই অনিশ্চয়তা থেকেই সংরক্ষণ ইস্যুতে বিরোধ বাড়ছে। এবং তার রাজনৈতিক ফায়দা নিতে তৎপর তৃণমূল এবং বিজেপি। 

 

Comments :0

Login to leave a comment