বজ্রপাতের ঘটনায় রাজ্যের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান সহ একাধিক জেলায় একাধিক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। বাঁকুড়ার কোতুলপুর, ওন্দা, ইন্দাস, জয়পুর ও পাত্রসায়ের থানা এলাকায় বজ্রপাতে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন দুই জন। পূর্ব বর্ধমান জেলায় বাজ পড়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছে চারজন। জখমরা স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের ভগবন্তপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের লাহিরগঞ্জ এলাকায় মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে লক্ষ্মীকান্ত পান(৪২) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাতনে বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৩ বছরের যতীন মাইতি। এছাড়াও ঝাড়গ্রাম ও শালবনীতেও বজ্রপাতে মৃত্যুর হয়েছে সেই খবর পাওয়া গেছে। তবে মৃতের নাম পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ ব্লকের মোহনা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকয় কমল সরকার নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পুরুলিয়ার ঝালদায় গুরিডি গ্রামে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে সুমিত্রা মাহাতোর।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বজ্রপাতে ৮জনের মৃত্যু হয়েছে। এ যাবৎকালে বজ্রপাতে একসঙ্গে এতগুলো প্রাণ চলে যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। বাঁকুড়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিদ্ধার্থ দর্জি জানান, এদিন বাঁকুড়া জেলার ওন্দায় ৪ জন, এবং কোতুলপুর, পাত্রসায়ের, ইন্দাস, জয়পুরে একজন করে মারা গেছেন। মৃতরা হলেন মদন বাগদি(৭০), বাড়ি বৈকন্ঠপুর, বিষ্ণুপুর, উত্তম ভুঁইঞা(৩৮) ঘড়িকাশুলি, জয়পুর। জিয়ায়ূল হক( ৫০) খিরি, কোতুলপুর, জীবন ঘোষ( ১৮), কাঁটাবন, পাত্রসায়ের, ইসমাইল মন্ডল(৬০) বাঙালচক, ইন্দাস। ওন্দায় মৃতদের নাম জানা যায়নি।
এদিন বেলা বাড়তেই একাধিক জেলায় বৃষ্টি নামে সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ। সেই বজ্রপাতের ঘটনায় একাধিক জেলায় একাধিক মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। পূর্ব বর্ধমানের মাধবডিহি থানা এলাকায় বাজ পড়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম সনাতন পাত্র(৬০)। মাধবডিহিতেই তাঁর বাড়ি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে মাঠে কাজ করার সময় বজ্রাঘাতে তিনি জখম হন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে আলমপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে, আউশগ্রাম থানার ভেদিয়ায় বাজ পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম রবীন টুডু(২৫)। এদিন আউশগ্রাম থানার দেয়াশা গ্রামে জমিতে ধান রোয়ার সময় তিনি বজ্রাঘাতে জখম হন। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিস দেহটি উদ্ধার করে গুসকরা হাসপাতালে নিয়ে যায়। শুক্রবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হবে। অপরদিকে, রায়না থানার তেয়াণ্ডুল গ্রামে বাজ পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম অভিজিৎ সাঁতরা(২৫)। তিনি জমিতে চাষ করার সময় বজ্রাঘাতে জখম হন। মাঠে থাকা লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আরও একটি ঘটনায় মাধবডিহি থানা এলাকায় ধান রোয়ার কাজ করার সময় বাজ পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম পরিমল দাস(৩২)। খণ্ডঘোষ থানার শেরপুরে তাঁর বাড়ি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন মাধবডিহি থানা এলাকায় তিনি ধান রোয়ার কাজে গিয়েছিলেন। সেসময় বাজ পড়ে তিনি জখম হন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে আলমপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর একটি ঘটনায় মঙ্গলকোট থানার চানক–কৃষ্ণপুরে জমিতে কাজ করার সময় বাজ পড়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম বুড়ো মাড্ডি(৬৪)। এদিন জমিতে কাজ করার সময় বাজ পড়ে তিনি জখম হন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে নতুনহাট স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়াও এদিনই ভাতার থানার ভূমসোর গ্রামে মাঠে কাজ করার সময় বাজ পড়ে একই পরিবারের বাবা ও দুই ছেলে জখম হয়েছেন। জখমদের নাম শেখ নাসির, ছেলে শেখ ইব্রাহিম ও শেখ হাসিব। অন্যদিকে, ভাতার থানারই বলগোনায় মাঠে কাজ করার সময় আলাউদ্দিন শেখ নামে এক ব্যক্তি বাজ পড়ে জখম হন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে ভাতার হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই তাঁরা চিকিৎসাধীন। এদিন রাত ৯টা প্রর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গেছে রাজ্যের একাধিক জেলায় বজ্রপাতে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
Lightning Strikes
রাজ্যে বজ্রপাতে মৃত অন্তত ১৯

×
Comments :0