প্রতিশ্রুতি ছিল বছরে ২ কোটি কাজের। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্বে মোট কর্মরতের সংখ্যাই কমে গিয়েছে। শহরের সঙ্গে কাজ করছেন এমন মানুষের সংখ্যা কমেছে গ্রামেও।
২০১৬-১৭ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে শহরে কাজ করছেন এমন মানুষের সংখ্যা ৫০.২ লক্ষ কম থেকেছে। গ্রামে এই কমে যাওয়া সংখ্যার নিরিখে ২০.১ লক্ষ। কর্মীর সংখ্যা কমেছে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাতেও।
নরেন্দ্র মোদীর ‘স্বচ্ছন্দে ব্যবসা’ সরকারি লব্জে ‘ডুয়িল বিজনেস উইথ ইজ’ নীতিতে বড় পুঁজি এবং কর্পোরেটকে শ্রম আইন ভাঙার ঢালাও সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বিজেপি সরকারের যুক্তি ছিল, শ্রম আইন শিথিল করলে বাড়বে কর্মসংস্থান। ২৯টি শ্রম আইন তুলে দিয়ে সংসদে পাশ করা হয়েছে চার শ্রম কোড। বাতিল করা হয়েছে শ্রমজীবীর অধিকার। কিন্তু, শ্রম আইনে এই আঘাতে বাড়েনি কাজের সুযোগ।
৯ জুলাই দেশজুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে প্রধানত শ্রম কোড বাতিলের দাবিতেই। দাবি উঠেছে, ঠিকা কাজের রমরমা কমিয়ে ব্যবস্থা করতে হবে সুরক্ষিত কাজের। সেই সঙ্গে রয়েছে শ্রমজীবী জনতা এবং অর্থনীতির পক্ষে একাধিক দাবিও।
সিআইটিইউ বলেছে, মর্যাদার সঙ্গে কাজের অধিকার সুরক্ষিত না হলে অর্থনীতির বিকাশ হয় না। ওপরতলার কয়েকজনের হাতে কেবল বিপুল অর্থ জড়ো হয়। বাড়তে থাকে বৈষম্য। ভারতে তা-ই হয়েছে।
তথ্য দেখাচ্ছে ১৯৯১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত দেশে বেকারির হার ৫-৫.৫ শতাংশের মধ্যে থেকেছে। ২০১৪’র পর থেকে বেকারির হার বাড়তে শুরু করেছে। করোনা মহামারির আগেই, ২০১৯ সালে বেকারির গড় হার ৭.৪ শতাংশ ছুঁয়েছে। ২০২০-তে লাফিয়ে বেড়ে হয়েছে ১০ শতাংশ। সিআইটিইউ বলেছে, এমনকি ২০২৩ সালেও বেকারির হার ৮ শতাংশ থেকেছে।
২০২১’র সমীক্ষা দেখিয়েছে যে ১৫-২৪ বয়সসীমায় বেকারির হার ২৮.৯৬ শতাংশ। ২৫ বছরের কম স্নাতক স্তরে যুবদের ৪২ শতাংশের কোনও কাজ নেই।
সিআইটিইউ মনে করিয়েছে যে দেশে যেভাবে কর্মহীনতার বিচার হয় তাতে ‘বেকার’ হওয়া যথেষ্ট কঠিন। কেননা সমীক্ষার সপ্তাহে কেউ দিনে ১ ঘন্টা কাজ করে মজুরি পেলেও ধরা হবে তিনি ‘কর্মরত’। তারপরও ঢাকা যাচ্ছে না বিপজ্জনক ছবি।
কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় ২০২৩-তে কর্মীর সংখ্যা ছিল ১৭.৩ লক্ষ। ২০২২ সালে কর্মীর সংখ্যা কমে হয়েছে ১৪.৬ লক্ষ।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অংশের বক্তব্য, সরকারি কাজ কমলে বেসরকারি ক্ষেত্রে কম মজুরিতে অসুরক্ষিত কাজের রাস্তা আরও চওড়া হয়। যে কারণে ৯ জুলাই ধর্মঘটে সুরক্ষিত কাজ বা চালু কথায় ‘ভালো কাজের’ দাবি উঠছে প্রায় প্রতিটি প্রচার মিছিলে।
9 July Strike and Job
৯ জুলাই ধর্মঘট: সুরক্ষিত কাজের দাবি কেন সঙ্গত দেখাচ্ছে তথ্য

×
Comments :0