‘জি-২০’ গোষ্ঠীর সভাপতিত্ব পেয়েছে ভারত। ইংরেজি বর্ণমালা অনুযায়ীই বহুদেশিয় এই গোষ্ঠীতে বছর বছর সভাপতির দায়িত্ব ঠিক হয়। জি-২০ গোষ্ঠীর পরপর বৈঠকের আয়োজনের সিদ্ধান্ত হচ্ছে। সেই সঙ্গে উচ্ছেদের নোটিশ নিয়ম করে যাচ্ছে দিল্লির নিম্নবিত্ত এবং গরিব অঞ্চলে। বাড়ি ভাঙাও হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়।
পরপর ৮টি ‘জি-২০’ গোষ্ঠীর বিভিন্ন স্তরের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে দিল্লিতে। ২০২৪’র নির্বাচনের আগে আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘বিশ্বগুরু’ ভাবমূর্তিতে যতটা সম্ভব বেশি প্রচারের আলো ফেলতে চাইছে বিজেপি। উচ্ছেদ বিরোধী সমাজকর্মীরা বলছেন, এই তোড়জোড়ে প্রতিদিন উচ্ছেদের আশঙ্কায় দিন গুনতে হচ্ছে দিল্লির বিভিন্ন অংশের বাসিন্দাদের।
সংগঠকদের মধ্যে ছিলেন সিপিআই(এম) নেতা এবং সিমলার প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র টিকেন্দর সিং পানোয়ারও। তিনি বলেছেন, ‘‘বাসস্থানের অধিকারকে সংবিধানের মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দিতে হবে। গরিবের সঙ্গে অপরাধ করে শহর সাজানো হচ্ছে।’’
দিল্লিতে উচ্ছেদ বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ সভা হয়েছে। সংগঠকদের অভিযোগ, মেহরৌলিতে ৭শো পরিবারকে উচ্ছেদের নোটিশ ধরানো হয়েছে। ২৫টি বাড়ি ভাঙা হয়েছে। তুঘলকাবাদে ভাঙা হয়েছে ৩ হাজার ঘর। বুলডোজারের দাপটে বহু ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দিতে পারেনি।
আবাস এবং জমি অধিকার আন্দোলনের সংগঠন এইচএলআরএন’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে কেন্দ্র এবং রাজ্য স্তরে ৩৬ হাজার ৪৮০টি ঘর ভাঙা হয়েছে। বাসা হারিয়েছেন ২ লক্ষের বেশি মানুষ।
সমাজকর্মীদের অভিযোগ, উচ্চবিত্ত এলাকায় বুলডোজার যাচ্ছে না। বেছে নেওয়া হচ্ছে নিম্নবিত্ত এবং গরিব এলাকাকে। বাসিন্দাদের অনেকেরই ক্ষোভ, উচ্ছেদে বাধা দিলে ভেঙে দেওয়া হচ্ছে জলের কল। বস্তি উচ্ছেদ বিরোধী আন্দোলনের সংগঠকরা বলছেন যে তুঘলকাবাদে যে কায়দায় উচ্ছেদ হয়েছে তাকে অমানবিক বললেও কম বলা হবে। উচ্ছেদের দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দিল্লি পুলিশ পুরো এলাকা ঘিরে ফেলেছে। মোবাইলে যোগাযোগ বন্ধ করতে জ্যামার বসানো হয়েছে। ভিডিও যাতে তোলা না যায় কেড়ে নেওয়া হয়েছে ফোন। দু’দিনের মধ্যে বস্তি তুলে দেওয়া হয়েছে।
পানোয়ার বলেছেন, ‘‘পুঁজি নির্ভর প্রযুক্তি ব্যবহার করে শহর তৈরি হচ্ছে। মুনাফার কেন্দ্র হচ্ছে শহর। শ্রমজীবী অংশকে স্রেফ তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে শহর থেকে।’’
প্রাক্তন আইএএস আধিকারিক হর্ষ মান্দের বলেছেন, ‘‘বিশ্বজুড়ে শহর সাজানোর এমন উদ্যোগ চলছে। গরিব, শ্রমজীবী মানুষের শহরে থাকার কোনও অধিকার থাকবে না।’’ আইনজীবী পামেলা ফিলিপোস বলেছেন, ‘‘হকারদের বলা হচ্ছে অবৈধ দখলদার। বস্তির বাসিন্দাদের বলা হচ্ছে অবৈধ বসবাসকারী।’’
Comments :0