আইন মেনে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিসন বেঞ্চ বলেছে, আদালত চায় সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালিত হোক। এদিনের এই নির্দেশের ফলে নির্বাচনের দিন ঘোষণার ওপর যে স্থগিতাদেশ ছিল তা আর রইলো না। তবে এদিন আদালত বলেছে, আবেদনকারী মনে করলে নতুন আবেদন নিয়ে আদালতে আসতে পারেন।
পঞ্চায়েত নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর আবেদন ছিল, আদালতের তত্ত্বাবধানে শান্তিপূর্ণ এবং অবাধ নির্বাচন। এবারের ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবিও ছিল তাঁর। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট করানোর আরজি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরিও। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি ছ’দফায় ভোটগ্রহণ, অনলাইনে মনোনয়ন জমা এবং সব বুথে ভিডিয়োগ্রাফির আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি।
এই মামলার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে স্থগিতাদেশ ছিল। কিন্তু মঙ্গলবারের নির্দেশের পরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পঞ্চায়েত নির্বাচনে নির্ঘণ্ট প্রকাশ করতে কোন বাধা রইলো না। মামলায় ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে আসন সংরক্ষণের বিষয়ে অভিযোগ ছিল। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে সর্বশেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৩৪ শতাংশ আসনে বিরোধীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেওয়া হয়নি। ফলে এই ৩৪ শতাংশ আসন ভোট হয়নি। নির্বাচনের আগেই ৩৪ শতাংশ আসন তৃণমূলের দখলে চলে গিয়েছিল। এরপর ছিল শাসকের উদ্যোগে ভোট লুট। গত নির্বাচনে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রায় আড়াই কোটি ভোটার বুথে যেতে পারেননি। অর্থাৎ আড়াই কোটি মানুষ ভোট দিতে পারেন নি। এই অভিজ্ঞতার পরে চলতি বছরে গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬২ হাজার ৩৬২আসন, পঞ্চায়েত সমিতির ৯হাজার ৪৯৮আসন এবং জেলা পরিষদের ৯২৮টি আসনের নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য আদালতের নজরদারিতে ভোট গ্রহণের আরজি জানানো হয়েছিল।
Comments :0