মণ্ডা মিঠাই — নতুনপাতা
শিক্ষার বরপুত্র ঈশ্বরচন্দ্র ও প্রফুল্লচন্দ্র
ঋষিরাজ দাস
নতুন বন্ধু
শিক্ষক হলেন সেই ব্যক্তি যিনি শিক্ষাদানের দায়িত্ব পালন করেন । শিক্ষার্থীদের জ্ঞান এবং নৈতিকতার শিক্ষা দেন এবং তাদেরকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করেন। তাঁরা শুধু একাডেমিক জ্ঞান ই দেন না, বরং ভালো সম্পর্ক তৈরি, সমস্যা সমাধান ও অনুপ্রেরণার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্ব বিকাশেও সহায়তা করেন। শিক্ষকদেরকে "জাতি গঠনের কারিগর" বলা হয় কারণ তাঁরা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের উপর গভীর প্রভাব ফেলেন। মূলত শিক্ষক দিবস দু ভাবে পালিত হয়। ১৯৯৫ সাল থেকে প্রতি বছর ৫ই অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়। এবং ভারতে ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ এর জন্মদিন কে উপলক্ষ করে প্রতিবছর ৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস পালিত হয়। এটি ১৯৫২ সাল থেকে চালু হয়। রাধাকৃষ্ণণ তাঁর জন্মদিন উদযাপন করার ইচ্ছা প্রকাশ করার পরিবর্তে শিক্ষকদের সম্মান জানানোর জন্য এই দিনটি উৎসর্গ করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। ৫ই সেপ্টেম্বর পেল শিক্ষক দিবসের মর্যাদা। শিক্ষক দিবসের আলোকে কেবল ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ ই নন, সেই আলোকের গরিমায় গরীমান্বিত হয়েছেন, বাংলার আরো অসংখ্য প্রতিভাশালী শিক্ষক। একজন আদর্শ শিক্ষক শুধু জ্ঞানই দেন না, বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যে নীতিগত ও নৈতিক মূল্যবোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করেন। সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা, সমস্যার সমাধান ,সহযোগিতার মতো গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা বৃদ্ধি করে শিক্ষার্থীদের জীবনকে সফল করে তোলেন। দেশের নাগরিকদের ভবিষ্যৎ এর রূপদান এবং তাদের মানবতাবোধ জাগ্রত করেন বলেই শিক্ষককে জাতির মেরুদণ্ড বলা হয়। সর্বোপরি কেবল তথ্যদান না করে একজন সার্বিক ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার অনুপ্রেরণা দেন একমাত্র শিক্ষকই। সেই শিক্ষক দিবসের আলোকেই আজ আমরা বাংলার দুই মহান শিক্ষক পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রতিবিম্ব দেখবো।
এক বিশেষ ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে বিদ্যাসাগরের আবির্ভাব। ঔপনিবেশিক পরিকাঠামোয় বিদেশীদের দ্বারা অবদমিত নিয়ন্ত্রিত ও নিপীড়িত ভারতীয় তথা বাঙালি জাতিরই প্রতিনিধি ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। স্বভাবতই প্রতি পদক্ষেপেই তাঁকে বইতে হয়েছে পরাধীনতার গ্লানি। সেখানে নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতিকে চর্চা ও রক্ষার বিষয়টি আরো কষ্টকর হয়ে উঠেছিল। সেক্ষেত্রে তাঁর শিক্ষক জীবন, তাঁর শিক্ষক সত্তার আনুকূল্য লাভের চেয়ে শিক্ষার সংকট ও তাঁর উত্তরণের প্রতি দৃষ্টি ও অন্তর্দৃষ্টি উভয়ই সক্রিয় হয়ে ওঠে। নিজে একজন দক্ষ সংস্কৃত পন্ডিত হওয়া সত্ত্বেও প্রাচীন শিক্ষা পদ্ধতির প্রতি অন্ধ অনুরাগী ছিলেন না বিদ্যাসাগর। তাঁর শিক্ষানীতি ছিল দ্বিমুখী। একদিকে প্রাচীন ব্যবস্থার সংস্কার, অপরদিকে নতুন স্কুল, কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ। তাঁর মতে শুধু ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তি বা শুধুমাত্র সংস্কৃত জানা পণ্ডিত, কেউই সম্পূর্ণরূপে অপরিহার্য নয়। অর্থাৎ তিনি সর্বদা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বিদ্যার সমন্বয়ে মাতৃভাষার মাধ্যমে আঞ্চলিক শিক্ষা ব্যবহার প্রচলনে সচেষ্ট ছিলেন। সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন তিনি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথা আলোড়নপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন যা পরবর্তীকালে আধুনিক শিক্ষা ব্যবহার "মাইলস্টোন"হিসাবে পরিগণিত হয়েছে। সেই সময় সংস্কৃত কলেজে কেবল ব্রাহ্মণ ও বৈদ্যদের ছেলেরাই পড়ার অধিকার পেতো। ব্রাহ্মণ ছেলেরা সকল শ্রেণীতে পড়ার অধিকার পেতো এবং বৈদ্যরা কেবল দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়তে পারতো। তারা বেদান্ত এবং ধর্মশাস্ত্র পড়ার সুযোগ পেত না। কিন্তু বিদ্যাসাগর সমগ্র হিন্দু জাতির জন্যই সংস্কৃত কলেজের দ্বার উন্মুক্ত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু গোঁড়াপন্থীরা যুক্তি দেখালেন-------
অষ্টম শ্রেণী, কল্যাণ নগর বিদ্যাপীঠ খড়দহ উত্তর ২৪ পরগনা মজুমদার ভিলা, কল্যাণ নগর, খড়দহ।
চলবে
মন্তব্যসমূহ :0