বত্রিশ হাজার এক ধাক্কায় নেমে এসেছে তিনে। মুসলিম যুবতীদের সন্ত্রাসবাদী হয়ে যাওয়ার এমনই ‘সত্যকাহিনী’ এই সিনেমায়। তবু কর্নাটকে ভোটপ্রচারের শেষলগ্নে সেই ‘কেরালা স্টোরি’-কে আঁকড়ে ধরলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার বল্লারিতে নরেন্দ্র মোদী বিজেপি’র জনসভায় বলেছেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদী চক্রান্তের আসল ঘটনার ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে ‘কেরালা স্টোরি’। সন্ত্রাসবাদী কৌশলের ভয়ঙ্কর সত্য দেখিয়ে দিয়েছে।’’
প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসকে আক্রমণ করে মোদীর ভাষণ, ‘‘দেখে অবাক হচ্ছি যে ভোটব্যাঙ্কের জন্য সন্ত্রাসবাদের মতো বিপদের কাছে আত্মসমর্পন করছে কংগ্রেস।’’ মোদী এবং বিজেপি টানা ভোটব্যাঙ্ক মানে মুসলিমদের সমর্থনকে চিহ্নিত করে আসছে সরাসরি।
এদিনই কেরালা হাইকোর্টে সিনেমার বিতর্কিত ‘টিজার’ সরানোর আশ্বাস দিতে বাধ্য হয়েছেন প্রযোজক বিপুল অমৃতলাল শাহ। এই টিজারেই বলা হয়েছিল কেরালায় ৩২ হাজার মুসলিম যুবতী যোগ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আইসিস-এ।
এমন ‘সত্য’ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই প্রথমে নির্মাতা সংস্থা বদলে দেয় ইউটিউবে নিজেদের সিনেমা সম্পর্কিত বয়ান। ৩২ হাজার থেকে সংখ্যা একদিনে নেমে আসে তিনে। বলা হয়, ‘কেরালা তিন মেয়ের কাহিনী’। কিন্তু ভোলবদলের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। এদিন সেই সিনেমা মুক্তি পেলেও অসত্য প্রচারের জন্য প্রতিবাদের মুখে পড়েছে।
তবে মোদী সন্ত্রাস দেখে চলেছেন ভোট প্রচারে। তিনি বলেছেন, ‘‘সন্ত্রাসের পরিবেশে তথ্য প্রযুক্তি, পশুপালন, সংস্কৃতি সবই ধ্বংস হবে।’’
কর্ণাটকে পাঁচ বছর আগে স্পষ্ট গরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। মুখ্যত কংগ্রেসের বিধায়কদের ভাঙিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে সরকারে আসীন হয়েছে। কিন্তু তীব্র দুর্নীতি এবং বিভাজন রাজ্যের মানুষ ভালভাবে নিচ্ছেন না। একাধিক সমীক্ষায় অনুমান, আসন সংখ্যায় এগিয়ে থাকবে কংগ্রেস। জি-ম্যাট্রিজ বিজেপি’র গরিষ্ঠতার অনুমান জানালেও ২২৪ আসনের মধ্যে ১১৫’র বেশি দিতে পারেনি।
‘কেরালা স্টোরি’ প্রসঙ্গেই সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘কেরালার আসল কাহিনী হলো সাধারণ জনতার জীবনমানে উন্নতি। সে কাজে সফল হয়েছে কেরালা। এই সিনেমায় আতঙ্ক তৈরির জন্য কল্পকাহিনীর আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।’’ রাজ্যের বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সরকারের ‘লাইফ’ প্রকল্পে দেওয়া ঘর এবং ঘরের উন্নত মান তুলে ধরে ছোট্ট ভিডিও তৈরি হয়েছে।
Comments :0