SSKM

সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গেলেও এবার টাকা খরচ করতে হবে

রাজ্য

রাজ্যের একমাত্র মাল্টিস্প্যাশালিটি হাসপাতালের নতুন উডবার্ণ ওয়ার্ডে চিকিৎসা করাতে গেলে টাকা খরচ করতে হবে সাধারণ মানুষকে। সরকারি হাসপাতালে বেড ভাড়া নেই, কম টাকায় চিকিৎসা হয়। আইসিইউ ভাড়া কম। এই সব ধারণাকে শেষ করে দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ‘অনন্য’। এসএসকেএম’এর নতুন উডবার্ণ ওয়ার্ডের এমনই নামকরণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
সত্যি অনন্য, উদ্বোধনের দিনই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সিঙ্গল কেবিনের ভাড়া ৫,০০০, সিঙ্গল স্যুট ৮,০০০, এইচডিইউ শয্যা ১২,০০০ এবং আইটিইউ শয্যা ১৫,০০০ (দৈনিক হারে)।
স্বাস্থ্য ভবনের নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে এখানে মিলবে ওপিডি পরিষেবা, যেখানে চিকিৎসক দেখাতে ফি বাবদ দিতে হবে ৩৫০ টাকা, এর মধ্যে ৩০০ টাকা ডাক্তার পাবেন, বাকি ৫০ টাকা যাবে হাসপাতালের তহবিলে। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, এই পরিষেবা বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় অনেক সস্তা।
স্বাস্থ্য দপ্তরের এই বক্তব্য সামনে আসার পর সরকারকে নিশানা করেছেন চিকিৎকদের একাংশ। অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস এর প্রাক্তন সম্পাদক চিকিৎস মানস গুমটার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সমস্ত নাগরিকদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া যে কোনো সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। স্বাস্থ্য ব্যবসা করা সরকারের কাজ নয়। এমনিতেই দায় এড়াতে সরকার বিমার হাতে জনগণের স্বাস্থ্যকে তুলে দিয়েছে এবং  ব্যবসায়ীরাই বর্তমানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক। একদিকে গোটা রাজ্যে বিনামূল্যের চিকিৎসার ফ্লেক্স, হোর্ডিং---অন্যদিকে চিকিৎসার জন্যে ঘটিবাটি বেচে মানুষের নিঃস্ব হয়ে যাওয়া। হাসপাতালের মধ্যে কোটি কোটি টাকা খরচ করে সুপার ফাইভস্টার হাসপাতাল তৈরি করে গরিব মানুষের চিকিৎসার সুযোগ সংকুচিত করা কেন? পিজি হাসপাতাল রাজ্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎকর্ষ কেন্দ্রে। প্রতিদিন ওখানে বেড না পেয়ে পিং পং বলের মতো মানুষকে ঘুরে বেড়াতে হয়। তাঁদের জন্যে ব্যবস্থা না বাড়িয়ে এই সুপার ফাইভ স্টার হাসপাতাল কেন? আর নতুন নিয়োগ না করে, একই চিকিৎসক- স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়ে এই পরিষেবা চালাতে গেলে গোলমাল হবেই। তেলা মাথায় তেল দেওয়া নয়, গরিব প্রান্তিক মানুষের প্রতিদিনের চিকিৎসার খরচ কমানো, সর্বস্তরে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়ন ও জীবনদায়ী ওষুধের নিরিনিচ্ছিন্ন সরবরাহ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।’
৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি ১০ তলা এই ভবনে রয়েছে ১৩১টি আধুনিক কেবিন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, অত্যাধুনিক পরিকাঠামো যুক্ত এই ওয়ার্ডের সাজসজ্জা দেখে বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে তুলনা টানা শুরু হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “এই পরিকাঠামো ভাল ভাল প্রাইভেট হাসপাতালকেও টেক্কা দেবে।”

Comments :0

Login to leave a comment