অভীক ঘোষ
শিবপুরে অশান্তির আশঙ্কা ছিল। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন যে এক মাস আগে অশান্তির গন্ধ পেয়েছিলেন। তা’হলে অশান্তি ঠেকানোর জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হলো না কেন, এই প্রশ্ন তুললেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু।
বামফ্রন্ট এবং সহযোগী দলগুলির ডাকে শনিবার সম্প্রীতির মহামিছিল হয়েছে কোন্নগর বাটা মোড় থেকে উত্তরপাড়ার গৌরী সিনেমা হল পর্যন্ত। সোমবারও হবে মিছিল। রবিবার মিছিলের শেষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্য সরকারের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছেন বসু।
রামনবমীর নামে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রদায়িক অশান্তির প্রতিবাদে এই মহামছিল হয়েছে। খেটে খাওয়া সব অংশের মানুষের মধ্যে ঐক্যের বার্তা দিয়েছে মিছিল। বহু মানুষ যোগ দিয়েছেন মিছিলে। সভায় বসু বলেছেন, অশান্তির অনুমান থাকলে গোয়েন্দা লাগিয়ে সেটা আটকালেন না কেন মুখ্যমন্ত্রী? অশান্তি তো অঙ্কুরেই ঠেকানো যেত।
মহামিছিলে সিপিআই(এম), আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক, সিপিআই ছাড়াও যোগ দেয় এসইউসিআই এবং সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের নেতৃবৃন্দ। সেই মিছিলে পা মিলিয়েছেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও।
রবিবার সভায় সেলিম বলেন, গোটা রাজ্যের মানুষ শান্তি চান। তাঁরা চোর-জোচ্চোর, দুষ্কৃতী এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে চান। ধর্মের নামে যারা হানাহানি করছে তাদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন মানুষ। জেলায় জেলায় নামছে। সোমবার হাওড়াতেও নামবেন।
সোমবার মিছিল শেষে সভার সূচি রয়েছে হাওড়ার শিবপুরে। এই এলাকায় রামনবমীর নামে অশান্তি হয়েছে অস্ত্র মিছিল থেকে। গত কয়েকবছরেও এই এলাকায় অশান্তি ছড়িয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তা সত্ত্বেও পুলিশ অশান্তি ঠেকাতে যথেষ্ট তৎপর ছিল না।
সেলিম বলেছেন, এই সংস্কৃতি রাজ্যে আগে ছিল না। উৎসব মানে মিলনের উৎসবই থেকেছে। একজন অপরজনকে আলিঙ্গন করেছেন। তরোয়াল, ত্রিশূল, বন্দুক-পিস্তল নিয়ে মিছিল আসলে ধর্মীয় জিগির তোলার জন্য করা হচ্ছে। ভোট বাড়ানোর জন্য ধর্মকে ব্যবহার করা হচ্ছে। মানুষ ধিক্কার জানাচ্ছেন এই রাজনীতিকে।
সেলিম বলেন, পুলিশের সামনে এ ধরনের ঘটনা ঘটলো, এটি বড় মাপের ব্যর্থতা। বাবরি ধ্বংসের পর ১৯৯২ সালে পুলিশকে সারা দেশে আধুনিক করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। যাতে দাঙ্গা প্রতিরোধ করতে পারে। র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স, জল কামান দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। দাঙ্গা রোধী স্কোয়াড তৈরি করা হয়েছে। সেগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে কৃষকদের আন্দোলন, চাকরির দাবিতে আন্দোলন, শিক্ষার আন্দোলন দমন করতে। আর যেখানে ব্যবহার করার কথা সেখানে পুলিশ চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।
সেলিম বলেন, রাজ্য এবং কেন্দ্র দুই সরকারই এই ধরনের অশান্তির জন্য দায়ী। তাই আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে। সব ধরনের দাঙ্গাবাজদের রুখতে মেহনতি জনতার সচেতন ঐক্য গড়ার ওপর জোট দিয়েছেন তিনি।
Comments :0