উদ্বোধনের তোড়জোর চলছিল। নীল-সাদা রঙের পোচও পড়েছে। তার আগেই, নির্মীয়মান অবস্থায় ভেঙে গেল জলের ট্যাঙ্ক। জল গড়িয়ে ঢুকছে বসতি এলাকায়।
জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ার এই ঘটনা শুক্রবার খড়্গপুর গ্রামীন ২ নম্বর ব্লকের মাদপুরে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি এবং পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতির বাড়ির কাছেই এই কাণ্ড।
তৃণমূল কংগ্রেসের মেয়াদে যদিও এমন ঘটনা বিভিন্ন জায়গায় দেখা গিয়েছে। বারবারই কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রবল দুর্নীতির অভিযোগ আরও তীব্র হয়েছে। মাদপুরের এই জলাধারের গায়ে বাঁশের মাচা খোলা হয়নি এখনও। একেবারে সদ্য নির্মিত জলাধারও ভেঙে পড়ল।
জলের ট্যাঙ্ক চারদিকে বল্লী ও বাঁশের খাঁচা বানিয়ে নীল সাদা রঙ করা হয়। সেই খাঁচার ঠেকে গিয়ে ট্যাঙ্ক হেলে আটকে রয়েছে। একদিকের পিলার হেলে পড়ে তার সঙ্গে যুক্ত থাকা কংক্রিটের কড়ি ভেঙে পড়ে ঝুলছে।
জলাধারের ভূমির অংশ বিরাট আকারে ছিন্ন হয়ে বিপরীত দিকে হেলে গেছে। এলাকার মানুষ সরাসরি তৃণমূল নেতাদের কাটমানির বহরে এবং নিম্নমানের উপকরণ সহ সঠিক ভাবে কাজ না করার অভিযোগ তুলেছেন।
সিপিআই(এম)'র অভিযোগ, এমন জল ট্যাঙ্ক নির্মানের আগে কোনো বেনিফিসারী কমিটি গঠন করা হয়নি। শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সংগঠনের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতির বাসস্থানের নাকের ডগায় এমন ঘটনাটি ঘটেছে। কত টাকা বরাদ্দ এই প্রকল্পের তার কোনো সাইন বোর্ড বসানো হয়নি। জেলা পরিষদ ও পিএইচই দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এই জল ট্যাঙ্ক তৈরি করা হয়।
তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি পিংলার বিধায়ক, জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি। তিনিই এই কাজের নজরদার্ করতেন বলেন এলাকার মানুষের বক্তব্য।
শুক্রবার বিকালে কাল বৈশাখীর ঝড় বৃষ্টির সময় স্থানীয় মানুষ একটি বিকট শব্দ শুনতে পান। তারপর লক্ষ্য করেন ট্যাঙ্কের মাথা হেলে পড়েছে। ভাঙা অংশ দিয়ে হুহু করে জলে ফোয়ারা হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। পাশাপাশি বহু গরিব মানুষের বাস। তাঁদের ঘরের উঠান ও মেঝে দিয়ে জলের স্রোত বইতে থাকে।
কাটমানির বহরে কোটি কোটি টাকার প্রকল্প এই ভাবে মুখ থুবড়ে পড়ার ঘটনা সেই সেতু ভেঙে পড়া সহ ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ার ঘটনা আগেও ঘটেছে। যোগ হলো খড়্গপুর গ্রামীন ২ নম্বর ব্লকের মাদপুর বাজার সংলগ্ন বলরামপুর মৌজায় নব নির্মিত জলাধার।
Comments :0