বিজেপি এবং তৃণমূল, দুই শক্তির বিরুদ্ধেই লড়বে সিপিআই(এম)। বিরোধী ঐক্য সারা দেশের সব রাজ্যে একই ধরনের হবে না। ২০০৪ সালেও হয়নি। কিন্তু সে সময় বিজেপি সরকারকে কেন্দ্র থেকে হটানো গিয়েছিল।
সোমবার বেঙ্গালুরুতে বিরোধী দলগুলির বৈঠকের ফাঁকে সংবাদমাধ্যমে এভাবেই সিপিআই(এম)’র অবস্থান জানিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।
এদিন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খারগের আহ্বানে লোকসভা নির্বাচনের কৌশল ঠিক করার দিকে তাকিয়ে বৈঠক করছেন বিরোধী প্রায় কুড়িটি দলের নেতৃত্ব।
বিরোধী বৈঠকের লক্ষ্য ব্যাখ্যা করেন ইয়েচুরি। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি সরকার দেশের চরিত্রই বদলে দিতে চাইছে। গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, সাধারণতন্ত্র ভারতের চরিত্র। দেশের এই চরিত্র যাতে অটুট থাকে তার জন্যই বিরোধীদের এই উদ্যোগ। এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে সরকার থেকে দূরে রাখতে হবে বিজেপি’কে।’’
পশ্চিমবঙ্গ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস এ রাজ্যে বিজেপি এবং তৃণমূল দুই শক্তির সঙ্গেই লড়ছে। লোকসভা ভোটেও বামফ্রন্ট-কংগ্রেস লড়বে তৃণমূল এবং বিজেপি দুই শক্তির বিরুদ্ধেই।’’
কী করতে চাইছেন বিরোধীরা?
ইয়েচুরি বলেন, ‘‘বিরোধী দলগুলি চাইছে যাতে বিজেপি বিরোধী ভোট এমনভাবে ভাগ না হয় যাতে বিজেপি’র সুবিধা হয়। কিন্তু রাজ্যে রাজ্যে বাস্তবতা এক নয়।’’
বাস্তবতা আলাদা কেন ব্যাখ্যা করেন ইয়েচুরি। যেমন কেরালায় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট ইউডিএফ এবং বামফ্রন্টের নেতৃত্বাধীন এলডিএফ’র মুখোমুখি লড়াই। আবার জাতীয় স্তরে দুই শক্তিই বিজেপি’কে সরকার থেকে হটানোর জন্য লড়ছে।
ইয়েচুরি বলেন, ‘‘২০০৪ সালে কেন্দ্রে অটল বিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারকে হটাতেও বিরোধীরা লড়াই করেছিল। বামফ্রন্ট ৬১ আসনে জয়ী হয়েছিল। তার মধ্যে ৫৭টি আসনে কংগ্রেস প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। কংগ্রেসকে হারালেও দেশের স্বার্থে কেন্দ্রে তাদের নেতৃত্বাধীন সরকারকে সমর্থন জানিয়েছিল। সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন মনমোহন সিং। টানা দশ বছর আসীন ছিল মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বাধীন সরকার। সেই অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে।’’
বেঙ্গালুরুর বৈঠকে যোগ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সাগরদিঘি উপনির্বাচনে পরাজয়ের পর তিনি ‘একলা লড়ার’ হুমকি দিয়েছিলেন। আলাদা করে কয়েকটি দলের সঙ্গে বৈঠকও করেন। সব বিরোধী এক জায়গায় করার বদলে আলাদা জোট গড়ার সম্ভাবনা জানিয়েছিলেন। ওডিশায় গিয়ে কথা বলেন বিজু জনতা দল সরকারের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গে। কিছু পরে নবীন জানিয়ে দেন যে বিজেপি বিরোধী কোনও জোটে নেই। কর্নাটকেও বিপুল জয় পায় কংগ্রেস।
এরপর মত বদলে মমতা পাটনায় গিয়ে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং জনতা দল (ইউ) নেতা নীতীশ কুমারের ডাকা বৈঠকে যোগ দেন। পাটনার পর সরাসরি লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে দ্বিতীয় বৈঠক হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে।
Comments :0