বিচারবিভাগ, সরকার বা সংসদ- কেউ কারও ওপরে নয়। সবার ওপরে আসলে দেশের সংবিধান। রবিবার মুম্বাইয়ে এক সভায় এই মত জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ভূষণ গাভাই।
‘সংসদই সর্বোচ্চ’ রব তুলে নাম সরকারপক্ষের নাম না করেও রবিবার কড়া বার্তা দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকেও বিচারবিভাগকে সমালোচনা চলছে গত কয়েকদিন ধরে। বিশেষ করে রাজ্য বিধানসভায় পাশ বিল রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের সময়সীমা শীর্ষ আদালত নির্দিষ্ট করার পর থেকে বেড়েছে এই আক্রমণ।
গাভাই বলেছেন, ‘‘বিচারবিভাগ, সংসদ বা সরকারের মধ্যে কে সর্বোচ্চ? এই প্রশ্নের মুখে বলতে পারি যে সংবিধান অনুযায়ী এই তিন বিভাগই একেকটি স্তম্ভ। কেউ কারও ওপরে নয়। এদের সবার ওপরে দেশের সংবিধান।’’
প্রধান বিচারপতির সংযোজন, ‘‘সংবিধানের নির্দেশ অনুযায়ী বিচারবিভাগ, সরকার এবং সংসদকে কাজ করতে হবে একসঙ্গে।’’
তামিলনাডু সরকারের আবেদনের ভিত্তিতে বিধানসভার বিল অনুমোদনের সময়সীমা ঠিক করার নির্দেশ দিতে হয় সুপ্রিম কোর্টকে। কেন্দ্রে আসীন বিজেপি রাজ্যপালদের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক দল পরিচালিত সরকারগুলিকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে। বিধানসভায় বিল পাশ হলেও অনির্দিষ্টকাল তা চেপে রাখছে রাজভবন। কখনও রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর যুক্তিতে বলে বিল পাশ হয়ে আইন তৈরির কাজ আটকে রাখা হয়েছে। বিল বিধানসভায় ফেরতও পাঠানো হয়নি অনেকক্ষেত্রে। আবার বিল ফেরত পাঠানোর পর ফের বিধানসভা তা পাশ করালে ফের আটকে রাখা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পর উপরাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় প্রকাশ্যে বিভিন্ন সভায় বিচারবিভাগের বিরোধিতায় মুখর হন। তিনি এমনও বলেন যে বিচারবিভাগ ‘সুপার পার্লামেন্ট’ হতে চাইছে। সুপ্রিম কোর্টে সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে আবেদন জমা পড়ার পর স্থগিতাদেশের সম্ভাবনা দেখা গিয়েছিল কেন্দ্রকে এই আইনের একাধিক ধারার প্রয়োগ স্থগিত রাখার আশ্বাস দিতে হয় আদালতে। ধনখড় বলেছিলেন ‘সংসদই সর্বোচ্চ’।
এদিন সংবিধানের তিন স্তম্ভের এক্তিয়ার প্রসঙ্গে কেশবানন্দ ভারতী মামলাকে মনে করিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি।
এদিন মহারাষ্ট্র ও গোয়া বার কাউন্সিল সম্বর্ধনা দেন প্রধান বিচারপতিকে।
Constitution CJI Gavai
সংবিধানই সবার ওপরে, বিতর্কের মাঝেই তীক্ষ্ণ মন্তব্য প্রধান বিচারপতির

×
Comments :0