দলের প্রতীক ও দলের ওপর নিজের অধিকার দাবি করে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন এনসিপি ভাঙিয়ে বিজেপি’তে যোগ দেওয়া অজিত পাওয়ার। দিল্লিতে দলের পালটা বৈঠক ডাকলেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার। বৃহস্পতিবার পাওয়ারের ডাকা বৈঠকে থাকবেন তাঁর কন্যা এবং দলের নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে।
গত সপ্তাহে এনসিপি ভেঙে বিজেপি জোটে যোগ দেন অজিত পাওয়ার। বিধানসভার বিরোধী দলনেতার পদ ছাড়ার কিছু পরে সরাসরি বিজেপি এবং একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা অংশের জোটে শামিল হন। মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী পদেও শপথ নেন। মহারাষ্ট্রে এখন বিজেপি জোটে দুই শরিক দল ভাঙানো দুটি অংশ। শিবসেনা ভাঙিয়ে এসেছেন শিন্ডে, অজিত পাওয়ার ভাঙিয়েছেন এনসিপি’কে। অজিতের সঙ্গে এসেছেন ছগন ভুজবলের মতো বর্ষীয়ান নেতাও।
নিজের দাবির বৈধতা প্রমাণের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দলের দুই তৃতীয়াংশ বিধায়কের সমর্থন দেখানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন অজিত। অর্থাৎ ৫৩ জন বিধায়কের মধ্যে ৩৬ জন বিধায়কের সমর্থন থাকতে হবে অজিতের দিকে। উল্লেখ্য অজিত পাওয়ার প্রথম থেকে দাবি করে আসছেন যে তার সঙ্গে অধিকাংশ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। তবে সূত্রের খবর বিধায়ক এবং সাংসদ মিলিয়ে অজিতের প্রতি সমর্থন রয়েছে ৪০ জনের। বুধবার অজিতের ডাকা বৈঠকে যে ২৯ বিধায়ক হাজির ছিলেন তাঁদের দিয়ে আইনি কাগজে সই করিয়েছেন মহারাষ্ট্রের নতুন উপমুখ্যমন্ত্রী। এই হলফনামা নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে বলে অজিত শিবিরের পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে। তবে বিধায়কদের দিয়ে সই করালেও তাদের মুম্বাইয়ের এক হোটেলে রাখা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
রবিবার হঠাৎ করেই একনাথ শিন্ডে এবং বিজেপির জোট সরকারের দ্বিতীয় উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন অজিত পাওয়ার। তারপর থেকেই ক্রমশ চাপ বাড়তে শুরু করেছে মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের ওপর। শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রী হলেও বিজেপির উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশই সরকার চালায় বলে প্রশাসনিক মহলের দাবি। গত বছর শিবসেনা ভেঙে শিন্ডে এবং বিজেপি জোট করে সরকার করে। শিন্ডের দিকে বিধায়ক সংখ্যা অজিতের থেকে কম। এই পরিস্থিতিতে আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে মারাঠা ভূমির রাজনীতি নতুন কোন চমক দেখে কি না সেই দিকে অনেকের নজর থাকবে।
তবে অজিতের সরকারে যোগদানকে কোন ভাবেই ভালো চোখে দেখছেন না একনাথ শিন্ডে এবং তাঁর বিধায়করা। তাঁদের কথায় শিবসেনা প্রতিষ্ঠাতা বাল সাহেব থ্যাকারে কোন ভাবে এনসিপি’র সঙ্গে আপস করেননি। উল্লেখ্য অজিত যেমন দল থেকে বেড়িয়ে এলেও কাকা শরদ পাওয়ারকে নেতা বলে দাবি করে আসছেন। তেমন ভাবে শিবসেনা ভাঙলেও বাল থ্যাকারেকে সামনে রেখে দল চালাচ্ছে একনাথ এবং তার সহযোগী বিধায়করা।
তবে বিরোধ মত বিরোধ যাই থাকুক রাজনৈতিক মহলের নজর সময় (এনসিপি’র প্রতীক ঘড়ি) কার দিকে থাকে, শারদ পাওয়ার না তাঁর ভাইপো অজিতের ভেঙে যাওয়া অংশের দিকে।
Comments :0