অনূর্ধ্ব-১৯ টি-২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনালের মঞ্চে ভারতীয় মহিলা দলের হয়ে অনবদ্য পারফরম্যান্সের জন্য ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন বাংলার তিতাস সাধু। সেই তিতাসের সঙ্গে এক্সক্লিউসিভ সাক্ষাৎকারে গণশক্তি ডিজিটাল। গণশক্তির হয়ে সাক্ষাৎকার নেন শুভঙ্কর দাস।
গণশক্তিঃ কেমন লাগছে এত বড় টুর্নামেন্টের মঞ্চে নিজেকে মেলে ধরতে পেরে?
তিতাসঃ অবশ্যই ভালো লাগছে। তবে নিজের কথা ভেবে না, দলের কথা ভেবে। কারণ, আমি টিমের জন্য কন্ট্রিবিউট করেছি। আমি একা নই, আমরা একটা দল হিসেবে খেলেছি। আমরা যখন ফাইনালে ইংল্যান্ডের মতো দলকে ৬৮ রানে আটকে দিতে পেরেছিলাম, আত্মবিশ্বাস ছিল যে আমরা জিততে পারব। সবাই একসঙ্গে ছিলাম এবং একটাই কথা মাথায় ছিল- আজ জিততেই হবে।
গণশক্তিঃ নিজেদের কীভাবে মোটিভেট করতে?
তিতাসঃ শুরু থেকে একটাই লক্ষ্য নিয়ে এগিয়েছিলাম যে, ভালো খেলতে হবে এবং ট্রফি আমাদের পেতেই হবে। আমরা সবাই আসলে খুব ভালো বন্ধু, তাই পেরেছি।
গণশক্তিঃ ড্রেসিংরুমের পরিবেশ কেমন ছিল ?
তিতাসঃ ড্রেসিংরুমের পরিবেশ আমরা প্রচন্ড উপভোগ করতাম। হালকা একটা মেজাজ। ড্রেসিংরুমের পরিবেশই আমাদের ফোকাস ধরে রাখতে সাহায্য করেছিল। হ্যাঁ, আমাদের সবার একটা দায়বদ্ধতা অবশ্যই ছিল। তবে আমরা প্রত্যেকে চাপমুক্ত হিলাম। কোচ এবং কোচিং স্টাফ প্রত্যেকেই ভীষণ সাহায্য করেছে। জীবনে এইধরণের অভিজ্ঞতার খুব কমই আসে। তাই সেটাকে যতটা সম্ভব উপভোগ করার চেষ্টা করেছি। নিজেদের হালকা রাখতাম, যাতে মাঠে নিজেদের সেরাটা দিতে পারি।
গণশক্তিঃ চাপের মুহূর্তগুলো কীভাবে সামাল দিতে?
তিতাসঃ আমরা পুরোটাই টিম গেম খেলেছি। হ্যাঁ, সবদিন সবার সমান যায়না। কোনোদিন কারও খারাপ পারফরম্যান্স হতেই পারে। কিন্তু দলের বাকিরা দায়িত্ব নিয়ে সেদিন সামাল দিয়েছে। আমার বোলিং কখনও খারাপ হলেও, আমি চেষ্টা করতাম দ্রুত সেখান থেকে ফিরে আসার। এক্ষেত্রে বাকি সহ-খেলোয়াড়রা এবং অধিনায়ক খুবই সাহায্য করেছে।
গণশক্তিঃ কোনো বিশেষ স্মরণীয় মুহূর্ত?
তিতাসঃ এত বড় একটা টুর্নামেন্ট, ফলে চাপ এবং অনেকরকম মুহূর্তই সামনে এসেছিল। তবে আমরা প্রতিটা ম্যাচ উপভোগ করেছি, তাই লক্ষ্যে স্থির থাকতে পেরেছিলাম। তারফলে নিজেদের খেলাটা ধরে রাখতে পেরেছি। আর আমরা যখন খেলতে যাই, তখন সিনিয়র-জুনিয়র বলে আলাদা করে আর কোনো ভাগ থাকেনা। পুরোটাই একটা দল। অবশ্যই সিনিয়র ক্রিকেটাররা অনেক হেল্প করে এবং একইসঙ্গে আমরাও বাড়তি দায়িত্ব নেওয়ার জন্য সবসময় তৈরী থাকি।
গণশক্তিঃ ক্রিকেটার জীবনের শুরু কীভাবে?
তিতাসঃ মাত্র ১৩ বছর বয়স থেকেই মাঠে যাওয়া শুরু। আমার পরিবার চুঁচুড়া রাজেন্দ্র স্মৃতি সংঘ ক্লাবের সঙ্গে জড়িত। সেই ক্লাবের স্পোর্টস দেখতাম ছোটবেলায় এবং স্কোর লিখতাম। সেই থেকেই আসতে আসতে ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়।
গণশক্তিঃ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
তিতাসঃ ফোকাস সরাচ্ছি না। অনুশীলন করে নিজের বোলিং দক্ষতাকে আরও তীক্ষ্ণ করার চেষ্টা করব। একইসঙ্গে নিজের ফিটনেস লেভেল বাড়ানোর কাজও চালিয়ে যাব।
গণশক্তিঃ অবসর সময় কীভাবে কাটাও?
তিতাসঃ অবসর সময়ের বেশীরভাগটাই গল্পের বই এবং সিনেমা দেখে কাটাই।
গণশক্তিঃ তোমার রোল রোল মডেল কে?
তিতাসঃ হার্দিক পাণ্ডিয়া এবং প্যাট কামিন্স।
গণশক্তিঃ নতুন ক্রিকেটারদের প্রতি তোমার বার্তা কী?
তিতাসঃ শুধু এটুকুই বলব, যখন তুমি তোমার ক্যারিয়ার বেছে নিচ্ছ তখন সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ আসতেই পারে। খারাপ দিন আসতে পারে, কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসা বজায় রেখে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করে যাও। আমি নিজেও এটাই করি। কখনোই হাল ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবলে চলবে না।
Comments :0