MD SELIM

ভাগাভাগির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শপথ নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে হবে কাকাবাবুকে: সেলিম

কলকাতা

মহারাষ্ট্রে কমিশনকে ব্যবহার করে ভোট কারচুপি হয়েছে। তা নিয়ে সব বিরোধীরা একজোট। আর মমতা বললেন বহিরাগত ধরতে ভোটার তালিকা নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাবে তৃণমূল। মমতা ব্যানার্জি আরএসএস’র হয়ে এভাবেই কাজ করেন। এখন বহিরাগত ধরা নামে মানুষের মধ্যে ‘এসআইআর’ আতঙ্ক তৈরি করছে বিজেপি। সিপিআই(এম) সবার বাড়ি যাবে, সব মানুষের সঙ্গে কথা বলবে। ভাগাভাগির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শপথ নিয়ে কাকাবাবুকে শ্রদ্ধা জানাতে পারব। 
মঙ্গলবার মহাজাতি সদনে একথা বলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক, স্বাধীনতা সংগ্রামী মুজফ্‌ফর আহ্‌মদের ১৩৭ তম জন্মদিবস পালিত হয়েছে এদিন।  
সেলিম বলেন, ভোটার তালিকায় বাংলাদেশি ইস্যু তুলেছেন মমতা। এখন বিজেপি ভোটাধিকার কেড়ে নিতে নামছে এই ইস্যু সামনে রেখে। তিনি বলেন, ‘এসআইআর’ ভোটার তালিকা ত্রুটিমুক্ত করার জন্য নয়। সে দাবি আমরা বহুদিন করছি। ‘এসআইআর’ দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।
সেলিম বলেন, আরএসএস-বিজেপি ‘পানি’-কে বলছে মুসলিম শব্দ। অথচ এই শব্দ সংস্কৃত থেকে এসেছে। উত্তর ভারতেও সবাই ‘পানি’ বলে। আসল সমস্যা হলো বোতলে করে জল কিনে খেতে হচ্ছে কারণ বিশুদ্ধ পানীয় জল সরকার দেয় না। বামপন্থীরা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। দক্ষিণপন্থীরা বিভাজন করে ‘পানি’ না ‘জল’ তা নিয়ে। এখানেই রাজনীতির ফারাক।
তিনি বলেন, ভাষা জীবন জীবিকা জীবন সংগ্রামের একটি প্রতিফলন। কিন্তু তার সাম্প্রদায়িক প্রয়োগও হয়। ভাষাকে বিভাজনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কাকাবাবু আজীবন শিখিয়েছেন কিভাবে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। আসলে অন্ন বস্ত্র খাদ্য বাসস্থানের লড়াইকে দুর্বল করতে বিভাজনের কৌশল। গত বিধানসভায় মোদী বলেছিলেন দুর্নীতিগ্রস্তদের জেলে ঢোকাবেন। তখন বলেননি বাংলাভাষীদের বাংলাদেশি বলে হেনস্তা করা হবে। ন্যায়ের জন্য জন্য লড়াইকে দুর্বল করেছে দুই শাসক দল। আর জি করে চিকিৎসক হত্যার প্রতিবাদে মানুষ রাস্তায় নেমেছে। বিচার হয়নি। দু’দলই দায়ী। 
সেলিম বলেন, মুখ্যমন্ত্রী গত নির্বাচনে ‘বহিরাগত’ শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। ওটা আরএসএস’র পাঠ্যবই থেকে নেওয়া। নয়া ফ্যাসিবাদীরা এভাবে আতঙ্ক তৈরি করে। ট্রাম্প ভারতীয় ছাত্রকে হাতকড়া পরিয়ে ফেরত পাঠাচ্ছে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার প্রতিবাদ করেনি। কারণ তারা এই নীতিতে বিশ্বাস করে। 
সেলিম বলেন, ১৯৭৯ সালে বামপন্থীরা সমর্থন দিয়েছিল কেন্দ্রের জনতা সরকারকে। তখন পরিযায়ী শ্রমিক সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় আইন হয়। কিন্তু কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারগুলি কোনো কাজ করছে না। তিনি বলেন, ধর্মের নামে দ্বিমেরু তৈরির রাজনীতি ভাঙছে। জুলাইয়ের ধর্মঘট তা দেখিয়েছে। আর তখনই শ্রেণি ঐক্য যাতে গড়ে না ওঠে তার জন্য নতুন বাইনারি করা হচ্ছে। 
সেলিম বলেন, বিজেপি-তৃণমূল চাইছে ধর্মের নামে অথবা ভাষার নামে ভোট হোক। আমাদের বিষয় সারের দাম, কাজ, শিক্ষার দাবি। কোনও নবান্ন-ছাপ্পান্ন আমাদের লড়াই লড়বে না। ছাব্বিশের নির্বাচনের জন্য সব রসদ জোগার করতে হবে, শ্রেণিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। বিভাজনের বিরুদ্ধে লড়তে পারে লাল ঝাণ্ডা। একত্রিত করতে হবে সব গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ মানুষকে।

Comments :0

Login to leave a comment