CYCLONE NORTH 24

ঘরে জলের সঙ্গে সাপও, জলমগ্ন বনগাঁ-গাইঘাটা-দেগঙ্গা

জেলা

দেগঙ্গা -১ পঞ্চায়েতের হরেকৃষ্ণ কোঙার কলোনিতে এভাবেই বাসিন্দারা ঘর ছাড়ছেন।

ইছামতীর জলে শুধু গ্রাম ভাসাচ্ছে, না। জলমগ্ন হয়েছে বনগাঁ পৌরাঞ্চলের ২,৩, ৬,১৭, ২১ ২২ নম্বর ওয়ার্ডও। মোট ১২টি ওয়ার্ডের মানুষ প্রায় এক হাঁটু জলের মধ্যে রয়েছেন। 
জলমগ্ন এলাকায় তৃণমূল বা বিজেপি’র কোনও নেতাকে দেখা যায়নি। বামপন্থীরা সীমিত ক্ষমতা নিয়ে দুর্গত মানুষের পাশে রয়েছেন। 
গাইঘাটা অঞ্চলে ১৭৬১ জন বাসিন্দা প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে রয়েছেন। দুর্গত মানুষদের মধ্যে সুটিয়া অঞ্চলে ক্যানসারে আক্রান্ত দু’জনও রয়েছেন। সুটিয়া ও ঝাউডাঙা অঞ্চলে  ৫ আসন্নপ্রসবাও রয়েছেন। 
সিপিআই(এম)’র পক্ষ থেকে বিডিও’র কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ক্যানসারে আক্রান্ত ও গর্ভবতী মহিলাদের ওপর আমরা নজরে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। 
বনগাঁর কালীযানি, ছয়ঘরিয়া, নতুনগ্রাম, পানচিতা, নটিভাঙা, বেলেডাঙা, জানীপুর সহ আশপাশের এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষ জলে প্লাবিত। বনগাঁ পৌরসভার ৮/ ১০টি ওয়ার্ড জলমগ্ন। ঘরের মধ্যে জল ঢুকেছে। বাড়ছে সাপের উপদ্রব। ঢাকাপাড়া, নয়াকামালগঞ্জ, বনগাঁ কলেজ পাড়ার বেশিরভাগ মানুষ রেললাইনের ওপর আশ্রয় নিয়েছেন। পৌরসভা থেকে মাথা ঢাকার জন্য ত্রিপল পাওয়া যাচ্ছে না। শুকনো যাবারের জোগান কম। শিশু খাদ্যের অভাব। দুর্গত মানুষদের নিয়ে পৌরসভা কিংবা পঞ্চয়েতের কোন উদ্যোগ নেই বললেই চলে। 
ইছামতীর জল বাড়ার কারণে গাইঘাটার সুটিয়া অঞ্চলের ঝাউডাঙা, রামনগর, শিমুলপুরের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে খেতমজুরদের কোনও কাজ নেই। নেই ১০০ দিনের কাজ। নির্মান শ্রমিকদের কাজ নেই। গ্রামে বিকল্প কাজের সন্ধানে তাঁরা দিশেহারা। এইভাবে চলতে থাকলে গ্রামে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা আরোও বাড়বে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষকসভার সভাপতি পঙ্কজ ঘোষ। সিআইটিটিউ নেতা কপিল ঘোষ জানিয়েছেন গাইঘাটার নির্মাণ শ্রমিকরা পরিবার নিয়ে স্কুলের শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। কাজ নেই। ১০০ দিনের কাজে সরকারি প্রকল্পের কাজ নেই। অভাবী মানুষ তার পরিবার নিয়ে যাবেন কোথায়?
দেগঙ্গা এলাকার পাকা আমন ধান ও শীতের সবজি জলের নিচে। দেগঙ্গার হরেকৃষ্ণ কোঙার কলোনির দুর্দশা ভয়ঙ্কর। দু’দিনের অতিবৃষ্টির কারণে হাঁটু সমান জল। এলাকা জুড়ে মানুষ জল ভেঙে আসা যাওয়া করছেন। 
আদিবাসী প্রধান এই এলাকার মহিলা অরুণা সরকার জানালেন, জলের সঙ্গে ঘরে ঢুকে পড়ছে সাপ, ব্যাঙ। ফলে ঘর ছেড়ে নিকট আত্নীয় পরিজনের কাছে চলে যাচ্ছে অনেক পরিবার। রাস্তার সংস্কার নেই। কোন উন্নয়ন নেই এই কলোনি এলাকায়। এলাকাটি তৃণমূল পরিচালিত দেগঙ্গা ১ পঞ্চায়েতের মধ্যে। 
হরেকৃষ্ণ কোঙার কলোনি এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য সিপিআই(এম) সমর্থক কবিতা কর্মকার। পাশের পঞ্চায়েত জল নিকাশীর রাস্তা বন্ধ করার ফলে এখানকার মানুষদের জলের দুর্ভোগ। পঞ্চায়েত কে বারবার জানিয়েও নিকাশী ব্যবস্থার কোন উন্নতি করা যায় নি। ফলে ভুগতে হচ্ছে এখানকার আদিবাসী দিনমজুর বাসিন্দাদের।

Comments :0

Login to leave a comment