আলুচাষীদের দাবি নিয়ে পথে নামল কৃষকসভা। শনিবার সারা রাজ্য জুড়ে পথ অবরোধ করেন কৃষকরা।
কৃষকসভা সূত্রে খবর, এদিন পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি, বাঁকুড়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি সহ উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সমস্ত জেলায় আলুচাষীরা পথে নামেন। জায়গায় জায়গায় এক থেকে দেড়ঘন্টা ধরে সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। বেশ কিছু জায়গায় কৃষকদের পাশাপাশি খেতমজুররাও পতাকা হাতে অবরোধে অংশ নেন।
কৃষক নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, কোচবিহার জেলার ১২ ব্লকে, হুগলি জেলার খানাকুল, ধনিয়াখালি সহ ১৭টি জায়গায়, বর্ধমানের পালশিট, শক্তিগড় প্রভৃতি স্থানে দেড় ঘন্টার কাছে পথ অবরোধ হয়। অবরোধের জন্য দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় আটকে থাকলেও সাধারণ মানুষ এদিন কৃষকদের প্রতি সহমর্মিতা জানান। এর পাশাপাশি জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, দার্জিলিং জেলার ভাওয়াল থেকেও অবরোধের খবর মিলেছে।
কৃষক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ জানাচ্ছেন, সমস্ত জেলাতেই হিমঘরে আলু রাখার জন্য বন্ড বা চুক্তিপত্রে সই করতে হয় কৃষকদের। কৃষকদের ক্ষোভ, দার্জিলিং জেলার জন্য কোনও হিমঘর নির্দিষ্ট করা হয়নি প্রশাসনের তরফে। তাঁদের অভিযোগ, হিমঘর মালিক এবং একাংশের সরকারি আধিকারিক মিলে চাষীদের বঞ্চিত করছে।
আন্দোলনরত কৃষকদের প্রধান দাবি, সরকারকে আলু কিনতে হবে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি হিমঘরের ৫ শতাংশ জায়গা সরকারের জন্য বরাদ্দ। কৃষকদের দাবি, সরকার অবিলম্বে সেই ফাঁকা জায়গায় আলু কিনে রাখুক। একইসঙ্গে তাঁদের দাবি, রাজ্য জুড়ে আলুর ন্যুনতম দাম কুইন্টাল পিছু ১ হাজার টাকা করতে হবে।
কৃষকদের অভিযোগ, কৃষকরা আলুতে কিলো প্রতি ৪-৬টাকা পাচ্ছে। সরকার বলেছে ৬৫০ টাকায় দাম বাধবে। কিন্তু তারও কোনও কার্যকারিতা নেই। বিধানসভার অধিবেশনেও আলু চাষীদের নিয়ে কোনও কথা নেই। এই সমস্ত কিছুর প্রতিবাদে পথে নেমেছেন তাঁরা। রাস্তায় আলু ফেলে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
এর পাশাপাশি আরও একটি বিষয় তুলে ধরছেন আলু চাষীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, ২০১৭ সালে বাংলার আলু বাইরে পাঠানো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য। সেই সুযোগে বাংলার আলুর বাজার দখল করে নেয় উত্তরপ্রদেশ। আসাম ওডিশা নিজেরা আলু চাষ শুরু করে। তারফলে সেই বাজারেও বাংলার আলুর চাহিদা কমে। মমতার হঠকারী পদক্ষেপের ফলে এরাজ্যের আলুচাষীরা মার খাচ্ছেন।
Comments :0