মুর্শিদাবাদের ফারাক্কায় শিশুকন্যা ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও তদন্তের গতি স্পষ্ট নয়। পরিবারের দাবি ঘটনার প্রথম দিন থেকেই গোটা ঘটনা চাপা দিতে চাইছে পুলিশ প্রশাসন। তাই পুলিশি তদন্ত আস্থা নেই পরিবারের। সোমবার ফারাক্কায় ধর্ষণ করে খুন হওয়া নির্যাতিতা শিশুর বিচার চেয়ে রাস্তায় আছড়ে পড়ল সাধারণ মানুষের ক্ষোভ। গত ১৩ অক্টোবর থেকে ২৮অক্টোবর। ১৫ দিন পার। তাও মেলেনি বিচার। তদন্ত কোন পথে? জানেনা পরিবার। ঘটনার প্রথম দিন থেকেই ধর্ষণ আড়াল করতে ব্যস্ত পুলিশ। তাই ভরসা নেই পুলিশে। বাধ্য হয়ে বিচার চেয়ে রাস্তায় বসলেন ফারাক্কায় ধর্ষিতা শিশুর মা। ডিওয়াইএফআই -এর ডাকা মিছিলে বিচারের দাবি নিয়ে হাঁটলেন। এদিন ফারাক্কায় রেল কলোনী এলাকা থেকে শুরু হয় মিছিল। মিছিল জাতীয় সড়কে পৌছালে সেখানে রাস্তায় বসে পড়েন সকলে। হয় অবরোধ। অবরোধে বসে মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, ‘‘খুন ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিন্দায়। আরজি কর হাসপাতালে নিহত নির্যাতিতা চিকিৎসকের মা ও ফারাক্কার ধর্ষণ করে খুন হওয়া শিশুর মা পুলিশের কাজের উপর ভরসা রাখতে পারছেন না আস্থা রাখতে পারছেন না। শাসক দলের কথায় চলে পুলিশ ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিচ্ছে। এতে রাজ্যজুড়ে ধর্ষকদের মনোবল বাড়ছে। এই পুলিশ কি রাজ্যের মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারবে। শাসকদল খুনি ধর্ষক, দুষ্কৃতীদের আড়াল করছে। শাসকদল ও পুলিশের মদতে সমাজবিরোধীরা বুক চিতিয়ে ঘুরো বেড়াচ্ছ। যুবরা রাস্তায় থেকেই এর বিরুদ্ধে লড়াই করবে।’’
গত ১৩ অক্টোবর বেলা ১২ টার দিকে ফারাক্কায় উদ্ধার হয় নয় বছরের এক শিশুর দেহ। পরিবারের সন্দেহ হয় শিশুটিকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। সেদিনই মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওইদিন রাতেই দেহ নিয়ে আসায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তবে পরিবার বারবার বলা সত্বেও এফআইআর’এ ছিল না ধর্ষণের ধারা। পরিবার অনড় থাকে, মর্গের সামনে দীর্ঘ অবস্থান করেন ডিওয়াইএফআই নেতারা। পুলিশের দীর্ঘ টালবাহানার, দফায় দফায় যুবদের বিক্ষোভের পর অবশেষে চাপের মুখে এফআইআর’এ ধর্ষণের ধারা যোগ করে পুলিশ। তবে পরের দিন ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি ময়নাতদন্ত। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্তের দাবি জানানো হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। সেই দাবিতে লড়াইয়ে থেকেছে ডিওয়াইএফআই নেতারা। বিষয়টি নিয়ে উচ্চআদালতের দারস্থও হন আইনজীবিরা। তবে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে দাবি জানানো হয়েছে, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতির আবেদন সেদিন খারিজ করেছে জঙ্গিপুর আদালত। ডিওয়াইএফআই নেতাদের অভিযোগ, পুলিশ আন্তরিক ভাবে সচেষ্ট ছিল না। প্রথম থেকেই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। ময়নাতদন্তে কোন ম্যাজিস্ট্রেটও ছিলেন না।
এদিন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা বলেন, ‘‘যুবদের চাপে পুলিশ ধর্ষণের ধারা যোগ করেছে। প্রথম দিন থেকেই পরিবারের সঙ্গে আছে যুবরা। এদিন দীর্ঘক্ষণ চলে অবরোধ। পুলিশ এসে প্রতিশ্রুতি দিতে বাধ্য হয় যে, দ্রুত চার্জশিট জমা করা হবে। যদিও এদিন নিউ ফারাক্কা বাসস্ট্যান্ডে যুবদের অবস্থান চলছে ফারাক্কায়। সাররাত চলবে অবস্থান বিক্ষোভ। রয়েছেন ডিওয়াইএফআই জেলা সম্পাদক সন্দীপন দাস, সভাপতি সৈয়দ নুরুল হাসান।
Comments :0