সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ড সাজা দিল শিয়ালদহ আদালত। এর পাশাপাশি আদালত রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে ১৭ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নিহত চিকিৎসকের পরিবারকে। বিচারক অনির্বাণ দাস জানিয়েছেন এই অপরাধ বিরলের মধ্যে বিরলতম নয়, আমৃত্য জেলে থাকতে হবে সঞ্জয়কে।
শনিবার এই মামলার রায় হয়। আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় একমাত্র দোষী সাব্যস্ত করা হয় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। সোমবার সাজা ঘোষণার দিন স্থির করেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারপতি অনির্বাণ দাস। বিচারপতি জানিয়েছিলেন সোমবার সঞ্জয়ের পক্ষে আদালতে সওয়াল করতে পারবেন আইনজীবীরা। সঞ্জয় এদিনও দাবি করে যে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
সোমবার রায়ে ১৭ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে। ফলে নিম্ন আদালতের রায় রাজ্যকেও দায়ী করছে, এমনই মনে করছেন আইনজীবী মহল। এজলাসেই যদিও নির্যাতিতার বাবা-মা বলেন যে ক্ষতিপূরণ তাঁরা চান না। তাঁরা চান বিচার। বিচারপতি বলেন, আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের সংস্থান রয়েছে। তাই তা ঘোষণা করা হয়। পরিবার যেন মনে না করে চিকিৎসক কন্যার মৃত্যুর অন্যায় টাকার অঙ্কে মিটমাট করার কথা বলা হচ্ছে রায়ে।
আদালতের রায় সামনে আসার পর চিকিৎসক আন্দোলনের নেতা পবিত্র গোস্বামী ‘গণশক্তি ডিজিটাল’-কে বলেন, ‘‘এই রায়ে আমরা খুশি নই। এই ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের সবার সাজা হতে হবে। তথ্য প্রমাণ যারা লোপাট করেছে তাদের শাস্তি দিতে হবে। যতদিন না পর্যন্ত তা হচ্ছে ততদিন লড়াই চলবে।’’
এখানেই প্রশ্ন থাকছে সিবিআই কি সাপ্লিমেন্টরি চার্জশিট দেবে? কারণ তারা চার্জশিটে লিখেছে যে তাদের তদন্ত বাকি আছে। বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের কথা চার্জশিটে উল্লেখ করেছে সিবিআই। তাহলে প্রশ্ন থাকছে নতুন করে কি চার্জশিট ফের জমা দেবে সিবিআই? সেই চার্জশিটে কি উল্লেখ করা হবে সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের কথা। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় প্রমান লোপাট করার জন্য। কিন্তু সিবিআইয়ের ব্যর্থতার জন্য দুজনে এই মামলা থেকে জামিন পেয়েছেন।
রায় ঘোষণার পর নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে শিয়ালদহ আদালতের সামনে। প্রতিবাদীদের দাবি শুধু সঞ্জয় নয় এই ঘটনার সাথে আরও যারা যুক্ত আছে তাদের সবাইকে সাজা দিতে হবে।
৯ আগস্ট জিজ্ঞাসাবাদের পর ১০ আগস্ট গ্রেপ্তার হয় সঞ্জয় কলকাতা পুলিশের হাতে। হাইকোর্টের নির্দেশে মামলার তদন্ত ভার নেয় সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা যে চার্জশিট এবং তদন্ত রিপোর্ট জমা করে তাতে একমাত্র সঞ্জয়কে অপরাধী বলে চিহ্নিত করা হয়। সিবিআই’র ভূমিকায় গুরুতর প্রশ্ন রয়েছে।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারি সংস্থার তদন্তের ওপর প্রশ্ন তুলেছেন নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরাও। ‘সেটিং’-র অভিযোগ আদালত চত্বরে।
Comments :0