অনিল কুন্ডু - ফ্রেজারগঞ্জ
একে বৃষ্টি, সঙ্গে কোটল, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের বিভিন্ন জায়গায় বাঁধে ধস নেমেছে। কোথাও বাঁধ উপছে জল ঢুকে প্লাবিত হয়েছে গ্রাম। একদিকে নিম্নচাপ আর একদিকে পূর্ণিমার ভরা কোটাল। এই জোড়া ফলায় আতঙ্কে রয়েছেন সুন্দরবনের উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। বিভিন্ন জায়গায় নদী বাঁধ উপছে জল ঢুকেছে বাঁধ তীরবর্তী গ্রামে।
বুধবার সকালে নামখানা ব্লকের ফ্রেজারগঞ্জ পূর্ব বিজয়বাটিতে বাঁধে ধস নামে। স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বাঁধের মাটি আগেই জলে চলে গিয়েছিল। প্রশাসনকে জানানো সত্বেও ওই ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামত করা হয়নি। এদিন সকালে পূর্ণিমার ভরা কোটালে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে বাঁধের কাছে রাস্তার নীচে মাটি ধ্বসে গিয়েছে। রাতের জোয়ারে রাস্তা ভেঙে গ্রামে জল ঢুকে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই গ্রামে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। স্থানীয় গ্রামবাসীরা নিজেরাই এদিন ভেঙে যাওয়া জায়গায় মাটি দেওয়ার কাজ করেছেন। যদিও ওই মাটি জলোচ্ছ্বাস কতটা আটকাতে পারবে তা নিয়ে নিজেরাই সন্দিহানে রয়েছেন।
নামখানা ব্লকের মৌশুনি দ্বীপে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পয়লাঘেরি, সল্টঘেরি এলাকায় বাঁধ উপছে জল ঢুকেছে। বালিয়াড়া এলাকায় বাঁধ ভেঙেছে। প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন গ্রাম। বঙ্গোপসাগরে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে গঙ্গাসাগরে মেলা মাঠ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গঙ্গাসাগরের চকফুলডুবি মন্দিরতলায় মুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধে ধস নামে। কুলপির দড়ি রত্নেশ্বরপুরে হুগলি নদী তীরবর্তী এলাকায় বাঁধ ভেঙেছে। কুলপির রামকিশোরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করেছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। মঙ্গলবার রাতভর দফায় দফায় বৃষ্টিতে বাঁধ দুর্বল হয়েছে। সেই সঙ্গে জলোচ্ছ্বাসে ঢেউ আঁচড়ে পড়ে বাঁধে। বাঁধের মাটি ধসেছে। বাঁধ উপছে চাষের জমি প্লাবিত হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দারা আশঙ্কার মধ্যে রয়েছেন।
সুন্দরবন অঞ্চলের গোসাবা, কুলতলি এবং ঝড়খালিতেও সকাল থেকে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। উত্তাল নদীর জল। সাময়িক ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বকখালি, মৌসুনি এবং গঙ্গাসাগরেও সমুদ্রের জল ফুলে ফেঁপে উঠেছে। পর্যটকদের জলে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকায় ক্রমাগত মাইকিং চলছে।
Comments :0