PAVEL DUROV ARREST

টেলিগ্রামের সিইও গ্রেপ্তার প্যারিসে, পাশে দাঁড়াল রাশিয়া

আন্তর্জাতিক

PAVEL DUROV TELEGRAM BENGALI NEWS

জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা সিইও পাভেল ডুরভ’কে গ্রেপ্তার করেছে ফরাসি প্রশাসন। শনিবার প্যারিসের লা বুর্জে বিমানবন্দরে অবতরণের পরেই ডুরভকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের তথ্যপ্রযুক্ত আইন ও নীতি মেনে রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা সংস্থাগুলির সঙ্গে টেলিগ্রাম ব্যবহারকরীদের তথ্য ভাগ করে নেননি ডুরভ। তারফলে টেলিগ্রাম ব্যবহার করে হওয়া ‘অপরাধ’ ঠেকানো যাচ্ছে না। যদিও ডুরভের আইনজীবীদের বক্তব্য, বাকস্বাধীনতা ও ব্যক্তি স্বাধীনতার আদর্শ থেকেই কোনও রাষ্ট্রীয় সংস্থার সঙ্গে নিজের গ্রাহকদের গোপনীয় তথ্য ভাগ করেননি ডুরভ। 

রাশিয়ায় জন্ম হলেও ডুরভ নিজে ফ্রান্সের নাগরিক। রাশিয়ায় রাষ্ট্রীয় নজরদারি বেশি, এই অভিযোগ তুলে রুশ নাগরিকত্ব ছেড়ে তিনি ফ্রান্সের নাগরিকত্ব নেন। এছাড়াও তিনি সংযুক্ত আরব আমিরশাহী এবং সেন্ট কিট্‌স অ্যান্ড নেভিসেরও নাগরিক। যদিও ডুরভের গ্রেপ্তারির পরে সরব হয়েছে তাঁর প্রাক্তন রাষ্ট্র রাশিয়া। মস্কোর তরফে সরকারি ভাবে প্যারিসের কাছে ডুরভের গ্রেপ্তারির কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। রাশিয়ার মানবাধিকার আধিকারিক টাটিয়ানা মস্কালকোভা বলেছেন, ‘‘ফ্রান্স সহ গোটা পশ্চিমী বিশ্ব সেন্সারহীন সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করতে চায়। তাই ডুরভকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’’

যদিও ফরাসী প্রশাসনের দাবি, ‘‘টেলিগ্রামকে অপরাধীদের নাগালমুক্ত করার কোনও চেষ্টা করেননি ডুরভ। 

রবিবার নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেলে মস্কালকোভা লিখেছেন, ‘‘ডুরভকে গ্রেপ্তার করার আসল কারণ হচ্ছে টেলিগ্রামকে বন্ধ করতে চাওয়ার ইচ্ছা। একমাত্র টেলিগ্রামেই আপনি বিশ্ব রাজনীতির বস্তূনিষ্ঠ তথ্য পাবেন। সেখানে ডুরভের গ্রেপ্তারী আসলে বাকস্বাধীনতা এবং বহুমুখী বিশ্বের ধারণাকে আঘাত করার চেষ্টা।’’

টেলিগ্রামের তরফে রবিবার বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের কন্টেন্ট মডারেশন সহ সমস্ত  তথ্যপ্রযুক্তি আইন এবং নীতি মেনে চলি। তাই ডুরভের জন্য অপরাধীরা টেলিগ্রামকে খারাপ কাজে ব্যবহার করতে পেরেছে, এই দাবি সম্পূর্ণ ভাবে অবান্তর।’’

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গোড়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতি টেলিগ্রামে সঠিক ভাবে প্রণয়নের জন্য বেলজিয়াম থেকে আইনি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করে টেলিগ্রাম। 

ডুরভ একাধিকবার প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, ‘‘পশ্চিমের দেশগুলির আধিকারিকরা আমাকে বারংবার চাপ দিচ্ছে, যাতে আমি গোপনে টেলিগ্রামের গ্রাহকদের উপর নজরদারি করার সুযোগ করে দিই। মূলত আমেরিকার তরফ থেকেই সবথেকে বেশি চাপ এসেছে।’’

আমেরিকা এবং পশ্চিমী বিশ্বের পাশাপাশি নজরদারির চেষ্টার জন্য রাশিয়ার সমালোচনাও করেছেন ডুরভ। মূলত নজরদারি প্রশ্নেই গত দশকে রুশ নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন তিনি। যদিও গ্রেপ্তারির পরে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে রাশিয়া। বহু রুশ রাজনীতিবিদ বলছেন, ‘‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে ডুরভকে আমেরিকা গ্রেপ্তার করিয়েছে।’’ ডুরভের প্রাক্তন মুখপাত্র জর্জি লোবুশকিনও একই অভিযোগ করেছেন। ডুরভের সমর্থনে সোচ্চার হয়েছেন ইলন মাস্ক, সাংবাদিক টাকার কার্লসনের মত আমেরিকান বিশিষ্টরাও। 

 

 

Comments :0

Login to leave a comment