মুর্শিদাবাদে যখন ছড়াচ্ছে সাম্প্রদায়িকতার বিষ তখন চায়ের কাপে সুখ খুঁজছেন বহরমপুরের তৃণমূল সাংসদ ইউসুফ খান। লোকসভা ভোটে অধীর চৌধুরিকে হারিয়ে ওই কেন্দ্র থেকে সাংসদ হয়েছেন তিনি। বহরমপুরের পাশের এলাকাতেই ছড়িয়েছে হিংসা। শান্তি বজায় রাখার আবেদন তো দুর কোন বিবৃতি এখনও পাওয়া যায়নি ওই জেলার দুজন তৃণমূল সাংসদের পক্ষ থেকে। আবু তাহের মুর্শিদাবাদ লোকসভার তৃণমূল সাংসদ, তারও কোন দেখা নেই।
সমাজমাধ্যঙে পাঠানের ওই ছবি পোস্ট করার পর থেকেই সমালোচনা শুরু হয়েছে। ইউসুফ পাঠান তার তিনটি ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে লিখেছে, ‘সুন্দর দুপুর, দারুন একটা চা এবং মনোরম পরিবেশ...’ তার ওই পোস্টের তলায় অনেকে তাকে কটাক্ষ করেছেন। একজন সাংসদ শান্তি ফেরানোর কথা না বলে, কোন উদ্বেগ না প্রকাশ করে কি ভাবে এতো খোস মেজাজে থাকতে পারেন।
সুতি-২ ব্লক এবং সামশেরগঞ্জে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত সামরিক বাহিনী নিয়োগ করে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা বামফ্রন্ট।
শনিবার জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক ও সিপিআই(এম) মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করে এই দাবি জানিয়েছেন।
জেলা বামফ্রন্টের আহবান, দলমত, সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার কাজে এগিয়ে আসতে হবে।
জেলা প্রশাসনের কাছে বামফ্রন্টের দাবি, জেলা এবং প্রতিটি ব্লক স্তরে দ্রুত সর্বদলীয় সভা ডাকতে হবে। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার জেরে মৃত ৩ জনের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও তুলেছে জেলা বামফ্রন্ট। জেলা বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে মৃতদের পরিবারের সকলের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সারা দেশে ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে বামফ্রন্ট ধারাবাহিক আন্দোলনে শামিল রয়েছে। সংসদের ভেতরে এবং বাইরে চলেছে সেই প্রতিবাদ। সেই সঙ্গে জনতার ঐক্যকে দৃঢ় করার বার্তাও দেওয়া হয়েছে সর্বত্র।
মুর্শিদাবাদ জেলা বামফ্রন্টের বিবৃতিতে প্রশাসনের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। সময়মতো হস্তক্ষেপ না করার অভিযোগ তুলে ঘটনার সবিস্তার বিবরণও দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে যে পুলিশ প্রশাসন সঠিক ভূমিকা পালন করলে এই ধরণের ঘটনা হয়ত ঘটত না। কার্যত দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে পুলিশ প্রশাসন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণেই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বিজেপি-তৃণমূলের বাইনারি রাজনীতির সুযোগ করে দিতেই প্রশাসন নীরব থেকেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে রাজ্য সরকারের অপদার্থতার কারণে ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি চলে যাওয়ার কারণে বিপদে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই ঘটনা ঘিরে আন্দোলনকে চাপা দিতেই বিভাজনের রাজনীতিতে মেতেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে মূর্শিদাবাদে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরাতে ২৩ জন দক্ষ পুলিশ কর্মীকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে সেখানে পাঠানো হয়েছে।
Murshidabad
থমথমে মুর্শিদাবাদ, চায়ে কাপে সুখ খোঁজার চেষ্টা তৃণমূল সাংসদের

×
Comments :0