ROYDIGHI

জয়ী সিপিআই(এম)’র প্রার্থীর সন্তানের উপর অত্যাচারের অভিযোগ

জেলা

ROYDIGHI



মা পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিআই(এম)’র প্রার্থী ছিলেন। এই ভোট লুটের রাজত্বে তিনি জয়ী হয়েছেন। এই অপরাধে তাঁর সন্তানের উপর মানসিক অত্যাচার করছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তৃণমূলের শিক্ষা সেলের নেতা দেবাশিস ঘোষ। বৃহস্পতিবার এমনই গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন তাপসী দাস। মথুরাপুর ২ ব্লকের বিডিও এবং মথুরাপুর পূর্ব চক্র’র অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে লিখিত অভিযোগ করে তাঁর সন্তানদের উপর অত্যাচার বন্ধ করতে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ ও বিদ্যালয়ে পঠনপাঠনের ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন। 
রায়দিঘি থানার কুলতলি গ্রামের বাসিন্দা তাপসী দাস। তিনি সিপিআই(এম) প্রার্থী হিসাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। গতবার তিনি মথুরাপুর ২পঞ্চায়েত সমিতির সিপিআই(এম) প্রার্থী হিসাবে জয়ী হয়েছিলেন। তাঁর দুই পুত্র সৌভিক দাস ও সৌরভ দাস নন্দকুমারপুর অঞ্চলের জয়কৃষ্ণপুর এ এন বিদ্যাপীঠ (উচ্চ মাধ্যমিক) স্কুলে হোস্টেলে থেকে চার -পাঁচ বছর ধরে তারা পড়াশুনা করে। একাদশ শ্রেণীর ছাত্র সৌভিক দাস ও দশম শ্রেণীর ছাত্র সৌরভ দাস। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাধাকান্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েত সিপিআই(এম)’র দখলে ছিল। এবারে নির্বাচনে প্রহসন, গণনায় লুট করে পঞ্চায়েত দখল করে তৃণমূল। এতদসত্বেও তাপসী দাস জয়ী হয়েছেন। 


ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, গত ১২ জুলাই ওই দুই ছাত্র হোস্টেলে যায়। স্কুলে ক্লাস রুমে গেলে অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ওই প্রধান শিক্ষক সৌভিক দাস’র মাথায় চুল বড় এই অছিলায় তাকে ক্লাস রুম থেকে বের করে দেন। মাথার চুল ছোট করে কাটার পরও তাকে ন্যাড়া হওয়ার কথা বলে ক্লাস রুম থেকে বের করে দেওয়া হয়। স্কুলের অফিস ঘরে বসিয়ে রাখা হয়। পরপর কয়েকদিন ধরেই একাদশ শ্রেণীর ওই ছাত্রকে ক্লাস রুমে বসতে না দিয়ে অফিস ঘরে বসিয়ে রাখা হচ্ছে। এমনকি তাকে ‘টিসি’ নিয়ে বিদ্যালয় ত্যাগ করার কথাও বলা হয়েছে। সন্তানের প্রতি কয়েকদিন ধরে তৃণমূলের শিক্ষা সেলের নেতা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের মানসিক অত্যাচারঘটনায় বুধবার বাধ্য হয়ে মথুরাপুর ২ ব্লকের বিডিও এবং অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন রাধাকান্তপুর অঞ্চলের সিপিআই(এম)’র জয়ী প্রার্থী তাপসী দাস। 

 


এদিকে স্কুলের ছাত্র’র প্রতি অমানবিক, অমানুষিক নির্যাতন অত্যাচারের ঘটনায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার শিক্ষক মহল তৃণমূলের ওই শিক্ষক নেতার বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশও সৌভিক দাসকে অফিস ঘরে বসিয়ে রাখার ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এদিন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, সৌভিক দাস’র মাথার চুল বড় বলে যে অছিলা দেখানো হচ্ছে আসলে সেটা ঠিক নয়। বহু ছাত্র’র মাথাতেই ওরকম চুল নিয়ে তারা ক্লাস করছে। তাই যদি হবে তাহলে চুল কাটার পরও কেন তাকে ক্লাস করতে না দিয়ে অফিস ঘরে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। কেনই বা তাকে মাথা ন্যাড়া হওয়ার কথা বলেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। 
এদিকে তাপসী দাস বৃহস্পতিবার এবিষয়ে বলেন, আমার দুই পুত্র গত চার পাঁচ বছর ধরে ওই স্কুল ও হোস্টেলে থেকে পড়াশুনা করছে। কখনো এধরণের কোন সমস্যা হয়নি। এবারে রাধাকান্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূল দখল করার পরই এরকম ঘটনা স্কুলে ঘটেছে। তিনি বিহিত চেয়ে এদিন প্রশাসনিক স্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন।

Comments :0

Login to leave a comment