BOOK TOPIC — SOURAV DUTTA | NOVELEST BOOK — NATUNPATA | WEDNESDAY 31 JULY 2024

বইকথা — সৌরভ দত্ত | মনীষী পরিচিতি: বাংলার মনীষীদের সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত | নতুনপাতা — বুধবার ৩১ জুলাই ২০২৪

ছোটদের বিভাগ

BOOK TOPIC  SOURAV DUTTA  NOVELEST BOOK  NATUNPATA  WEDNESDAY 31 JULY 2024

বইকথা 

মনীষী পরিচিতি: বাংলার মনীষীদের সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত 
সৌরভ দত্ত

নতুনপাতা

নব সাক্ষর পড়ুয়াদের জন্য ভোলানাথ বিশ্বাস প্রণীত মনীষী চর্চার এক অনন্য পুস্তিকা “মনীষী পরিচিতি”।স্বল্প ২৮ পৃষ্ঠার বইটি বি.সরকার এন্ড কনসার্ন । বইটির প্রচ্ছদ ভাবনা পার্থপ্রতিম বিশ্বাসের।গ্রন্থের ভিতর স্থান পেয়েছে রাজা রামমোহন রায় থেকে শুরু করে বাংলার রূপকার বিধান চন্দ্র রায়ের শিশুকিশোর পাঠ্য উপোযোগি ১২ জন খ্যাতনামা মনীষীর প্রক্ষিপ্ত জীবন চরিত। আগাগোড়া একেবারে সহজ সরল ভাষায় লেখা জীবনীগুলি।দুশো বছর আগেকার তর্ক সভার বর্ণনা দিয়ে শুরু হয়েছে রাজা রামমোহন রায়ের জীবনীটি।তাঁর সম্বন্ধে পণ্ডিতদের অভিমত বেশ অন্যরকম–“পণ্ডিতেরা কিশোরটিকে বললেন নাস্তিক। নাস্তিক মানে যার ভগবানে বিশ্বাস নেই।” রামমোহনের জন্ম বৃত্তান্ত বর্ণিত হয়েছে পুস্তিকায়। লেখক স্পষ্টতই তুলে ধরেছেন রামমোহনের উল্লেখযোগ্যতার দিক–“রামমোহন মূর্তি পূজায় বিশ্বাস হারানো। হিন্দুধর্মের অনেক কুপ্রথা‌ তিনি মানতেন না”।ঋষি বঙ্কিমচন্দ্রের‌ জীবনী‌ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে লেখক‌ বলেছেন–“ছেলেটি ছিল সাহসী ও বুদ্ধিমান।”বঙ্কিমচন্দ্র জন্মেছিলেন চব্বিশ পরগনার কাঁঠাল পাড়ায়। বঙ্কিম–“ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের কাজ নিয়েছিলেন।ঐ কাজে তাঁর যথেষ্ট সুনাম হয়।” কবিতা ও উপন্যাস লেখার গুণে তিনি ‘সাহিত্য সম্রাট’ উপাধি পান। রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের জীবনী বর্ণনায় লেখক বলেছেন–“ছেলেটির লেখাপড়ায় আদৌ মন নেই।তবু বাপ-মা তাকে পাঠশালায় পাঠান।” ছেলেবেলায় তাকে সকলে ‘গদাই’ বলে ডাকত। রামকৃষ্ণ বলতেন–“সব ধর্মই এক।”তিনি বিশ্বাস করতেন মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নেই।বিলে বা বিবেকানন্দের আলোকিত জীবনের কথা বলতে গিয়ে দেখা যায়–“সে শুনেছে হনুমান নাকি অমর।রোজ ভগবানের সঙ্গে দেখা হয়।আর রোজ আসে কলা খেতে।”বি-এ পাশের পর তার মনে সংশয় জাগে–“ ভগবান আছে কি নেই।”শেষে নরেন গেল দক্ষিণেশ্বরে।পরমহংসকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করেছিল–“ ভগবান কি আছে?”বীরসিংহের সিংহ শিশু বিদ্যাসাগরের জীবনের প্রেক্ষিতে রয়েছে বাবার সাথে কলকাতা যাত্রার সময় মাইলফলকের গল্প।“রাস্তার ধারে শিলের মতো পাথর পোঁতা আছে।ছেলেটি পাথর দেখিয়ে বাবাকে বলে–“ওটা কি?বাবা বলেন,ওটা মাইল স্টোন।”ঈশ্বরচন্দ্র বাসায় রান্না করা থেকে শুরু করে বাসন মাজা পর্যন্ত করতেন। বাসায় রাতে আলো জ্বলত না‌।“ঈশ্বরচন্দ্র রাস্তার আলোতে পড়াশোনা করতেন।”বিদ্যাসাগরকে দানশীলতার জন্য যে ‘দয়ার সাগর’ বলা হত সেকথা এ গ্রন্থে উল্লিখিত হয়েছে। জগদীশচন্দ্র সম্পর্কে লেখক বলেছেন–জ্ঞান পাগল মানুষ। বেতার নিয়ে তিনি গবেষণা করেছেন। বেতারের মূলসূত্র তিনি আবিষ্কার করলেও সম্মান পেলেন মার্কনি সাহেব।তিনি‌ প্রমাণ করলেন–“গাছেরও প্রাণ আছে।”কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের জীবনীতে লেখক বলেছেন–“মস্ত বড় বাড়ী। বারান্দায় বসে ছেলেটি রাস্তার লোকজন দেখে।আর দেখে আকাশ ও অন্ধকারকে।মনে মনে তাদের নিয়ে খেলা করে।”ছেলেটির নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সাহিত্যের জন্য পেলেন নোবেল ।তিনি বুঝেছিলেন–“প্রকৃত শিক্ষা কি?শাসন বাঁধনের মধ্যে প্রকৃত শিক্ষা হয় না।”নেতাজী সুভাষচন্দ্রের জীবনী ও অঙ্কিত হয়েছে গ্রন্থে। সুভাষচন্দ্র ইংরেজদের সঙ্গে আপোষ করেননি।তিনি বলেছিলেন–“রক্ত দাও, স্বাধীনতা পাবে।”এছাড়াও গ্রন্থে স্থান পেয়েছে বালগঙ্গাধর তিলক,গোপালকৃষ্ণ গোখলে, স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় প্রমুখের শৈশব জীবন থেকে শুরু করে শিক্ষাদর্শ ও প্রতিষ্ঠা প্রাপ্তির মূলমন্ত্রগুলি।যা শিশু-কিশোরদের উজ্জীবিত করবে। এবং তাদের জীবন গঠনে মূল্যবোধের সহায়ক হবে।

লেখক: ভোলানাথ বিশ্বাস 
প্রচ্ছদ: পার্থপ্রতিম বিশ্বাস 
প্রকাশক:বি সরকার এন্ড কনসার্ন 
মূল্য:১০টাকা

Comments :0

Login to leave a comment